ফাইন্যান্স

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে

বর্তমান সময়ে প্রায় প্রতিটি মানুষের জীবনের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছে ব্যাংকিং লেনদেন। ব্যাংকে টাকা জমা রাখা থেকে শুরু করে, অর্থ-সম্পদের নিরাপত্তা, সঞ্চয় এবং নিরাপদ লেনদেনের জন্য বেশীরভাগ মানুষ ব্যাংকের মাধ্যম ব্যবহার করে থাকে আর বর্তমানে বাংলাদেশের সনামধন্য ব্যাংক বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংক যার গ্রাহক চাহিদা সবচেয়ে বেশী তাই আজকে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে ইসলামি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং সেই সাথে আরও জানিয়ে দেয়া হবে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে ।

বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালে সর্বপ্রথম যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংক। সেই সময় থেকে মানুষের ভরসা জিতে নিয়েছে তারা এবং সেই সাথে তারা লক্ষ গ্রাহক পেয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে ইসলামি শরিয়াহ মেনে চলে ব্যাংকিং লেনদেন করার জন্য অধিক গ্রহন যোগ্যতা পেয়েছে ব্যাংকটি।

ইসলামি ব্যাংক তাদের অফলাইন ব্যাংকিং এর পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ড চালু করে এবং সেই সাথে বর্তমানে তারা সেলফিন মোবাইল অ্যাপ লঞ্চ করেছে এবং যার জনপ্রিয়তা পেয়েছে অনেক। সেলফিন কি এবং কিভাবে সেলফিন একাউন্ট করতে হয় সেটি নিয়ে বিস্তারিত টিউটোরিয়াল আর্টিকেল পাবলিশ করা রয়েছে চাইলে সেটি দেখে নিতে পারেন।

যাই হোক, এই আর্টিকেলটি যেহেতু ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে সেই বিষয় নিয়ে তাহলে সেটি নিয়ে আলোচনা করা যাক।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে

বাংলাদেশে যে কয়েকটি ব্যাংক রয়েছে সব গুলো ব্যাংকে একাউন্ট করার জন্য বিশেষ কিছু কাগজপত্র দরকার হয়ে থাকে। এছাড়াও ব্যাংক একাউন্টের ক্যাটাগরি অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে কারণ একটি ব্যাংকে বিভিন্ন ধরণের একাউন্ট করা যায়।

ব্যাক্তিগত একাউন্ট থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক একাউন্ট সব ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে। প্রতিটি একাউন্ট করার জন্য আলাদা আলাদা কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংকে তিন ধরণের একাউন্ট খোলা যায় যেমন,

  1. ইসলামি ব্যাংক সেভিং একাউন্ট ( Islami Bank Saving Account )
  2. কারেন্ট একাউন্ট ( Islami Bank Current Account )
  3. ইসলামি স্টুডেন্ট একাউন্ট ( Islami Bank Student Account )

বাংলাদেশে যেহেতু বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ রয়েছে এবং বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ রয়েছে তাই তাদের ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে আলাদা আলাদা ব্যাংক একাউন্ট হয়ে থাকে। তাই বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষের জন্য ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে সব কিছুই বিস্তারিতভাবে জানিয়ে দেয়া হবে।

ইসলামি ব্যাংক সেভিং একাউন্ট

বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংকের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাংক একাউন্ট হচ্ছে ইসলামি ব্যাংক সেভিং একাউন্ট। নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রেখে তা থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ লভ্যাংশ পাওয়ার জন্য সেভিং একাউন্ট করা হয়ে থাকে। সেভিং একাউন্ট বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে যেমন, ব্যাক্তিগত সেভিং একাউন্ট, সঞ্চয়ী সেভিং একাউন্ট, ব্যাবসায়িক সেভিং একাউন্ট ইত্যাদি।

ইসলামি ব্যাংকে সেভিং একাউন্টে জমা করা অর্থ ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী বিনিয়োগ কোর হয়ে থাকে। সেই বিনিয়োগ থেকে যে পরিমাণ লভ্যাংশ আসে সেই টাকার উপর ভিত্তি করে ৬৫% হিসাব ধারিদের ওয়েটেজের ভিত্তিতে টাকা গুলো বন্টন করা হয়ে থাকে। এই বন্টনকৃত টাকার মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ব্যাংকের জমাকারীর একাউন্টে প্রতিমাসে দিয়ে দেয়া হয়।

আরও দেখুনঃ ক্লিক করে সহজেই জেনেনিন ব্যাংক একাউন্ট করতে কি কি প্রয়োজন হয়ে থাকে

এই লভ্যাংশ শেয়ার করা যদিও কারেন্ট একাউন্টের মত হয়ে থাকে কিন্তু সেভিং একাউন্টে এটি সিমা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ইসলামি ব্যাংক থেকে এই লভ্যাংশ পেতে চাইলে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে কোন প্রকার টাকা উত্তলন করা যাবেনা যদি কেও উত্তলন করে থাকে তাহলে সে লভ্যাংশের যে টাকা সেটি পাবেনা। তাই নিয়ম মেনেই সেভিং একাউন্টের টাকা উত্তলন করতে হবে এবং সঠিক সময়ে লভ্যাংশের টাকা নিতে হবে।

ইসলামি ব্যাংক সেভিং একাউন্ট খুলতে হলে বিশেষ কিছু নিয়ম ফলো করতে হবে। নিম্নে কিছু নিয়ম এবং ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে সেটি উল্লেখ করা হবে। একটু সময় নিয়ে প্রতিটি বিষয় ফলো করুন। আশা করা যায় সেভিং একাউন্ট খোলার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র দরকার সব কিছুই বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন এবং সহজেই একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।

ইসলামি ব্যাংক সেভিং একাউন্ট খুলতে যা যা দরকার হয়

ব্যাংকে যেহেতু একাউন্ট করার সময় বিশেষ কিছু কাগজপত্র দরকার হয় এবং একাউন্টের ক্যাটাগরি অনুযায়ী আলাদা আলাদা কাগজপত্র দরকার হয়ে থাকে। তাহলে দেখা যাক, কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে,

  • অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে
  • ব্যাংকে গিয়ে একটি আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে এবং সেটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে
  • ব্যাংক একাউন্টের আবেদন কারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি , জন্ম সনদের ফটোকপি, পাসপোর্ট এর ফটোকপি, ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি থাকলেই হবে। আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে তার জন্ম সনদের কপি এবং সেই সাথে পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি দরকার হবে।
  • আবেদনকারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে এবং সেই সাথে যাকে নমিনি করা হবে তার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে
  • ইউটিলিটি যেমন পানি বিল, বিদ্যুৎ বিল অথবা গ্যাস বিলের কপি লাগবে সেটি শর্ত সাপেক্ষে
  • অবশ্যই আবেদনকারীর এক সাক্ষর এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে
  • সেভিং একাউন্ট করার ক্ষত্রে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা জমা করতে হবে যেটি নিজের একাউন্টে জমা থাকবে

আরও দেখুনঃ বাংলাদেশে যেকোনো ব্যাংকে একাউন্ট করতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়

অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক কাজের জন্য সেভিং একাউন্ট করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আলাদা কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে সেগুলো নিম্নরূপ তুলে ধরা হল,

  • নিজের বা ব্যাক্তিগত একাউন্ট হলে অবশ্যই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের টিআইএন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে
  • যদি কোন ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে সেই ট্রাস্টের দলিল বা প্রমান পত্র জমা দিতে হবে
  • যদি কোন প্রতিষ্ঠান যেমন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমেটির রেজুলেশনের কপি জমা করতে হবে
  • অনেক সময় লিমিটেড কম্পানির জন্য সেভিং একাউন্ট করতে হয় এক্ষেত্রে মেমোরেন্ডাম এন্ড আর্টিকেলস অব এসোসিয়াশান এর সত্যায়িত কপি লাগবে

এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য কাগজপত্রের প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যাংকে গিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে নতুবা ইসলামি ব্যাংকের হেল্প লাইনে 16259 অথাবা 09611016259 কল করে জেনে নিতে হবে।

ইসলামি ব্যাংক সেভিং একাউন্ট সুবিধা সমূহ

বিশেষভাবে ইসলামি ব্যাংকের সেভিং একাউন্টে অনেক গুলো সুবিধা রয়েছে এবং সুবিধা গুলো নিম্নরূপ প্রকাশ করা হল,

  • যে পরিমাণ টাকা জমা রাখা হয় সেই টাকার উপরে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা লাভ পাওয়া যায়
  • ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং এর মত সেবা দিয়ে থাকে
  • পায়ের উপর দারিয়ে অতি দ্রুত টাকা ডিপোজিট এবং উত্তলন করা যায়
  • ভিসা ও মাস্টারকার্ড প্রদান করে থাকে যেটি দিয়ে অনলাইন শপিং এর পাশাপাশি যেকোনো বুথ থেকে টাকা উত্তলন করা যায়
  • ব্যাংক জমাকৃত টাকা বিনিয়োগ করে থাকে সেটি থেকে যে লভ্যাংশ আসে সেটি থেকে গ্রাহককে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রদান করে থাকে
  • ইসলামি ব্যাংকে সেভিং একাউন্ট করতে মাত্র ৫০০ টাকা জমা করতে হয় যা নিজের একাউন্টে ডিপোজিট হয়

ইসলামি ব্যাংক কারেট একাউন্ট

প্রতিদিনের লেনদেন করতে বিশেষ একটি ব্যাংক একাউন্ট মাধ্যম হচ্ছে কারেন্ট একাউন্ট। বিশেষ করে যারা ব্যবসা করে তারা কারেন্ট একাউন্ট খুলে থাকে কারণ কারেন্ট একাউন্টে যেকোনো সময় টাকা ডিপোজিট করা যায় এবং সেই সাথে যেকোনো সময় উত্তলন করা যায়।

সেভিং বা স্টুডেন্ট একাউন্টে ট্রানজেকশন করার ক্ষেত্রে লিমিটেশন রয়েছে কিন্তু কারেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে সেটি একদম ব্যাতিক্রম একটি বিষয় কেননা কারেন্ট একাউন্ট যেহেতু ব্যাবসায়িক একাউন্টের ক্যাটারগরির তাই এখানে ট্রানজেকশন ও ক্যাশআউটের জন্য কোন প্রকার লিমিটেসন নেই। তাই এই ক্যাটাগরির ব্যাংক একাউন্ট ব্যবসায়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ধনী ব্যাক্তিদের জন্য প্রযোজ্য।

কারেন্ট একাউন্টের বিশেষ সুযোগ হচ্ছে এই একাউন্টের ক্ষেত্রে কোন প্রকার সুদের হার প্রযোজ্য নেই এবং আলাদাভাবে কোন ব্যাংক চার্জ প্রদান করতে হয়না। চাইলে দেশের যেকোনো নাগরিক এই একাউন্ট করতে পারবে কিন্তু তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা দেখাতে হবে ও ইনকাম সোর্স দেখাতে হবে ( শর্ত সাপেক্ষে ) ।

ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট খুলতে যা যা লাগে

সেভিং একাউন্টের মত কারেন্ট একাউন্ট করতে এখই কাগজপত্র প্রয়োজন হয় থাকে। যে সমস্ত কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয় সেগুলো তালিকা আকারে দিয়ে দেয়া হল,

  • প্রথমেই লাগবে একটি আবেদন ফরম এবং সেটি ভুল সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে
  • ব্যাংক একাউন্ট কারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং সেই সাথে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে ছবি অবশ্যই রঙ্গিন হতে হবে
  • যাকে নমিনি করা হবে তার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপির পাশাপাশি দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে সেটিও রঙ কপিতে
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • নমিনির জাতিয়ে পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • নিজের ঠিকানা তথ্য সঠিক হওয়ার কারণ যাচাই করতে ইউটিলিটি বিল যেমন, বিদ্যুৎ বিলের কপি, গ্যাস বিলের কপি, পানি বিলের কপি জমা দিতে হবে
  • আবেদনকারীর নিজের সাক্ষর এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে
  • নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকতে সেটির টিআইএন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে
  • প্রথম অবস্থায় মিনিমাম ১০০০ টাকা ব্যাংক ডিপোজিট করতে হবে

উপরোক্ত কাগজপত্র জমা দিলেই নিজের একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলা যাবে। কারেন্ট একাউন্ট করার এই সমস্ত ডকুমেন্ট ছাড়া অন্য কোন কাগজ দরকার হবেনা।

ইসলামি ব্যাংক কারেন্ট একাউন্টের সুবিধা সমূহ

  • নির্দিষ্ট সীমা ছাড়াই ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা উত্তলন এবং জমা করা যায়
  • যেকোনো পরিমাণে টাকা উত্তলন করার পাশাপাশি ডিপোজিট করা যায় যার কোন লিমিট নেই
  • ব্যাংকের যেকোনো সার্ভিস প্রদান পেতে কোন প্রকার চার্জ প্রদান করতে হয়না যেটি সম্পূর্ণ ফ্রিতেই হয়
  • কারেন্ট একাউন্টে থাকা টাকা যেকোনো খাতে ইনভেস্ট করা যায়
  • গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংক যেকোনো পরিমাণ টাকা প্রদান করতে ব্যাংক বাধ্য
  • ইসলামি ব্যাংকের বড় সুবিধা হচ্ছে অনলাইন ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায়
  • ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পাওয়া যায় যার ফলে যেকোনো জায়গায় থেকে বুথ থেকে টাকা উত্তলন করা যায়

ইসলামি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট

বাংলাদেশ ইসলামি ব্যংকের স্টুডেন্টদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাংক একাউন্ট হচ্ছে স্টুডেন্ট একান্ট। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থাকার কারণে ইসলামি ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট বেশী হয়ে থাকে। বিশেষ করে ছাত্র জীবনে যারা সঞ্চয় করতে চায় বা যারা সঞ্চয় করতে আগ্রহী তাদের জন্য ইসলামি ব্যাংক বিশেষ সুযোগ কররে দিয়েছে।

ইসলামি ব্যাংকে খুব কম পরিমাণে টাকা সঞ্চয় করে রাখা যায়। এই ব্যাংক একাউন্ট করতে অন্যান্য একাউন্টের মত এতটা বেশী কাগজপত্র প্রয়োজন হয়না। তাহলে দেখে নেয়া যাক বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট করতে কি কি লাগে।

ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে যা যা লাগে

  • ব্যাংকের নিবন্ধন ফরম এবং সেটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে
  • শিক্ষার্থীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড, জন্ম সনদের কপি, জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি বা পাসপোর্টের কপি প্রয়োজন হবে
  • পিতা-মাতা বা যেকোনো অভিবাবকের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • শিক্ষার্থীর নিজের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি রঙ্গিং হতে হবে
  • অভিবাবকের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি রঙ্গিং হতে হবে
  • যাকে নমিনি করা হবে তার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি
  • নমিনির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি রঙ্গিং হতে হবে
  • গ্রাহকের সাক্ষর এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করতে হবে
  • যদিও স্টুডেন্ট একাউন্ট সপূর্ণ ফ্রিতেই করা হয় তারপরেও সর্বনিম্ন ১০০ টাকা ডিপোজিট করতে হবে

ইসলামি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট সুবিধা সমূহ

  • শিক্ষার্থী একাউন্টের ক্ষেত্রে এটিএম থেকে টাকা উত্তলন করার জন্য কোন প্রকার চার্জ প্রদান করতে হয়না বরং একদম ফ্রিতে টাকা উত্তলন করা যায়
  • ব্যাংকে জমিয়ে রাখা টাকার উপরে সল্প পরিমাণ লভ্যাংশ প্রদান করা হয়ে থাকে
  • নিজের জমানো টাকা দিয়ে ভবিষ্যতে ভালোমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখা পড়া করা যায়
  • অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায়
  • ইসলামি ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যেকোনো সময় ফান্ড ট্রান্সফার করা যায়

বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এর জন্য প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একটি করে স্টুডেন্ট একাউন্ট করা অনেক বেশী জরুরী।

বিশেষ কথাঃ বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং এবং ব্যাংক লেনদেন সুবিধার জন্য সেলফিন নামক মোবাইল অ্যাপ লঞ্চ করেছে এবং সেলফিনে একাউন্ট করলে সব ধরণের ব্যাংক লেনেদেন করা যাবে। ক্লিক করে দেখেনিন কিভাবে সেলফিন একাউন্ট খুলতে হয়

আর্টিকেল ট্যাগঃ ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে, ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট চার্জ, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট সুবিধা, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক, ইসলামী ব্যাংক অনলাইন একাউন্ট, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরম

জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর

ইসলামি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে?

বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংকে একাউন্ট করার জন্য সেভিং একাউন্টের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা, কারেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা এবং স্টুডেন্ট একাউন্ট করার ক্ষেত্রে ১০০ টাকা জমা করতে হয় এবং সেই টাকা নিজের ব্যাংক একাউন্টে যুক্ত করা হয়ে থাকে।

ইসলামি ব্যাংকের কতটি শাখা রয়েছে?

বর্তমান বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকের সর্বমোট ৬২৩টি শাখা রয়েছে এবং সেই সাথে বিভিন্ন জায়গায় উপশাখা রয়েছে।

কত বছর বয়সে ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়?

বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী সর্বনিম্ন ১৮ বছর বয়স হলে ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়। এছাড়া ১৩ বছরের উর্ধে বয়স হলে পিতামাতার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায় এবং পরবর্তিতে বয়স ১৮ হলে নিজের নামে করে নেয়া যায়।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর বর্তমান চেয়ারম্যান কে?

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর বর্তমান চেয়ারম্যান আহসানুল ৩২৪ তম বোর্ড সভায় নির্বাচিত হয়েছেন।

১৫ বছরের বাচ্চারা কি ব্যাংক একাউন্ট করতে পারবে

অবশ্যই ১৫ বছরের বাচ্চারা ব্যাংক একাউন্ট করতে পারবে কিন্তু পিতামাতার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করতে হবে।

শেষ কথাঃ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে আর্টিকেলটির শেষ মূহুর্তে একটি কথাই বলতে চাই, ব্যাংক একাউন্ট করা খুব বেশী কঠিন কোন ব্যাপার নয়। যে তথ্য গুলো তুলে ধরা হয়েছে তথ্য গুলো সঠিকভাবে মনে রেখে নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট নিয়ে ব্যাংকে গেলেই অতি সহজে ব্যাংক একাউন্ট খোলা যাবে। আপনার যদি আরও কিছু জানার থাকে অবশ্যই কমেন্ট করবেন এবং সেই সাথে শেয়ার করে অন্যদের বিষয়বস্তু গুলো জানার সুযোগ করেদিন।

শেয়ার করুন

নির্ঝর ফারুক

প্রযুক্তি প্রেমী মানুষের মধ্যে আমিও একজন। ছেলেবেলা থেকেই প্রযুক্তির সাথে জড়িয়ে রয়েছি এবং অনেক কিছু শিখেছি ও এখনো শিখছি। যে বিষয় গুলো জানি সেই বিষয় গুলো নিয়েই মূলত এই ওয়েবসাইটে লেখালেখি করি। টেকজোন বাংলার একমাত্র সত্ত্বাধিকারী আমি নির্ঝর ফারুক সক্রিয় থাকবো আপনার সাথে ইনশাল্লাহ।

2 thoughts on “ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে

  • গুরুত্বপূর্ন তথ্য ধন্যবাদ।

    Reply
  • Olpascew

    Great Information. Thanks

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *