ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম – নীতি ও গাইডলাইন
আজকে আমি আপনাদের সামনে ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম সম্পর্কিত যে সকল বিষয় গুলো রয়েছে সমস্ত কিছু নিয়েই আলোচনা করার চেষ্টা করবো এবং সাথে কিছু ই-কমার্স ব্যবহার আইডিয়া নিয়েও কথা বলবো।
সময়ের ধারাকে ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সব প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়েই চলেছে সেই সাথে ব্যবসায়িক এবং বাণিজ্যিক খাতেও এসেছে পরিবর্তন কারণ এখন চাইলেই ঘরে বসেই দেশ এবং দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকেই পন্য অর্ডার করা যাচ্ছে অতি সহজেই।
আর সমস্ত কিছু সহজ হয়ে উঠেছে ই-কমার্স বানিজ্যের বদৌলতে। এখন আমাদের দেশেই ই-কমার্স ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকার পন্য প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে এবং সময় অনুযায়ী গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
ই-কমার্স ব্যবসা কাকে বলে?
যদিও আপনি জানেন যে ই-কমার্স ব্যবসা কি? তার পরেও আমি আপনাকে একটু আলাদাভাবে জানিয়ে দেয়ার চেস্টা করছি। ই-কমার্স ব্যবসা হচ্ছে এমন এক মাধ্যম যেখানে একটি ওয়েবসাইটে কিছু পন্য দেয়া থাকবে এবং গ্রাহক ওয়েবসাইট থেকে পছন্দ করে নিজের পন্য অর্ডার করবে ও তারপর ডেলিভারি ম্যান সেই পন্য কাঙ্ক্ষিত যায়গায় পৌঁছে দিবে।
এটিই মূলত ই-কমার্স ব্যবসা। অনেকেই হয়ত মনে করে থাকতে পারেন যে, ফেসবুকের মাধ্যমে কিছু বিক্রি করাকে ই-কমার্স ব্যবসা বলে। এমন ধারণা যদি থেকে থাকে তাহলে বুঝতে হবে এটি আপনার ভূল ধারণা কারণ ফেসবুক থেকে আয় করার মত অনেক মাধ্যম রয়েছে। শুধু আয় নয় ব্যবসা করার মত অনেক মাধ্যম রয়েছে তাই বলে কি ফেসবুক ব্যবসাকে ই-কমার্স বলা যাবে?
মোটেও না! ফেসবুকে কোন কিছু ক্রয়-বিক্রয় করাকে ফেসবুক কমার্স বলা হয়ে থাকে আর ওয়েবসাইট ব্যবহার করে কোন কিছু ক্রয়-বিক্রয় করাকে ই-কমার্স ব্যবসা বলা হয়ে থাকে।
প্রথমেই একটি বিষয় আপনাকে পরিস্কার করে জানাতে সক্ষম হয়েছি আপনার অবশ্যই একটি ওয়েবসাইট থাকতে হবে। বিষয়টি খাতায় নোট করে রাখুন আর হ্যা ব্যবসার মার্কেটিং করার জন্য আপনার একটি ফেসবুক পেজ থাকতে হবে কারণ প্রচারেই প্রসার আর প্রচার করার এর চেয়ে বড় মাধ্যম আর নেই।
ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম এবং শুরুর ব্যাসিক গাইডলাইন
প্রথমেই আপনাকে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু কিছু গাইডলাইন শেয়ার করতে চাই কারণ ব্যবসার নিয়ম জানতে হলে এটিও এরিয়ে যাওয়ার কিছু নেই। গাইডলাইন জানার পর সরকার কর্তিক যে নীতিমালা রয়েছে সেটি জানিয়ে দেয়ার চেস্টা করবো ।
দেখুন ব্যবসা চাইলতেই শুরু করে দেয়া যায় কিন্তু প্রথমেই যদি কিছু নিয়ম কানুন জেনে নেয়া না হয় তাহলে পরবর্তিতে নিজেকেই পস্তাতে হয়। এমন নজীর অনেকে রয়েছে, ব্যবসা শুরু করে কিছুদিন পর শেষ! এমন হওয়ার কারণ হচ্ছে ব্যাসিক কিছু বিষয় তার হয়ত জানা থাকেনা। তাহলে চলুন জেনেনেই কি কি ফলো করতে হবে-
মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহন করা
আপনাকে সব সময় মনে রাখতে হবে যেকোনো ব্যবসা হোক বা কাজ হোক সেটি শুরু করে দেয়ার পূর্বে নিজেকে অবশ্যই মানসিক ভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে নতুবা কিছুদিন পরেই নিজের সত্তাকে হারিয়ে ফেলতে হবে।
এমন বলার কারণ হচ্ছে একটি কাজে সফল হতে হলে নিজেকে অনেক বেশী ধৈর্যশীল হতে হয় না হলে আগেই বলেছি কি হতে পারে।
দেখুন নিজেকে এমনভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবেনা হাজারো যদি বাধা আছে তারপরেও নিজেকে দমিয়ে রাখা যাবেনা। কারণ ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করে প্রথম দিন থেকে বিক্রি শুরু হয়না কিছুদিন সময় লাগতে পারে।
এমন হল যে আপনি ব্যবসা শুরু করলেন কিন্তু দুই মাসের মধ্যে তেমন কোন বিক্রি হয়নি। তাহলে কি করবেন ভেবে নিবেন যে, সেল আর হবেনা?
এমন কাজ কিন্তু কোনভাবেই করা যাবেনা বরং নিজেকে সব সময় মানসিকভাবে প্রস্তুত করে রাখতে হবে। ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম গুলোর মধ্যে আমি এটিকে অনেক বেশী প্রাধান্য দিয়ে থাকি।
কারণ ব্যবসা করলে প্রথম দিন থেকেই সেল হবেনা আর সাথে লস লাভের বিষয় থাকবেই। কিন্তু একবার উঠে দাড়াতে পারলে আর কোন সময় পিছে ফিরে তাকানোর দরকার হবেনা।
ই-কমার্স ব্যবসার প্ল্যান তৈরি
ব্যবসা করবেন কিন্তু কোন প্রকার প্লান তৈরি করবেননা এমন হলে বিষয়টি কিন্তু একেবারেই আলাদা হয়ে যাবে। কারণ যেকোনো কাজ শুরু করে দেয়ার পূর্বে সি বিষয় সম্পর্কে সমস্ত কিছু জেনে বুঝে নিতে হয়।
আপনি যখন সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জেনে যাবেন তখন অবশ্যই নিজে অথবা নিজের একটি টিম সাজিয়ে নিয়ে একটি স্মার্ট প্লান তৈরি করে নিতে হবে।
- যেমন আপনার টিমে কত জন মানুষ থাকবে?
- ওয়েবসাইটের নাম কি দেয়া যেতে পারে ( অবশ্যই এমন নাম দিতে হবে কেও যেন একবার দেখেই মনে রাখতে পারে )।
- প্রডাক্ট কিভাবে সোর্স করবেন এবং কি কি প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন?
- মার্কেটিং কিভাবে করবেন?
- ডেলিভারি কিভাবে দিবেন ইত্যাদি।
ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার আইডিয়া
দেখুন ইউনিক বা নতুন আইডিয়া যেকোনো একটি বিষয়কে একেবারে বদলে দিতে পারে। আপনাকে ব্যবসা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই ভালো কিছু আইডিয়া নোট করে রাখতে হবে।
চাইলেই যেকোনো পন্য নিয়ে কাজ শুরু করে দিতে পারবেননা কারণ ই-কমার্স এমন একটি জায়গা যেখানে চাইলেই একটি পন্য বিক্রি করা যায়না। প্রথমেই আপনাকে দেশ এবং দেশের বাইরের ই-কমার্স ওয়েবসাইট গুলো ব্রাউজ করে নিতে হবে এবং দেখতে হবে তারা কোন কোন পন্য নিয়ে কাজ করছেন।
সব সময় স্মরণ রাখবেন সঠিক ব্যবসার আইডিয়া একটি ব্যবসার মোর ঘুড়িয়ে দিতে পারে। আপনি চাইলে আমাদের দেয়া ২৯টি ব্যবসার আইডিয়া দেখে নিতে পারেন, দেখলে হয়ত আপনার কিছু একটি ধারণা আসবে।
বিভিন্ন টেকনিক অবলম্বন
ই-কমার্স ব্যবসা করতে হলে নিজেকে হতে হবে ক্রিয়েটিভ কারণ আজকের এই উন্নত প্রযুক্তির সময় যদি নিজেকে একজন ইউনিক ব্যাক্তি হিসাবে গড়ে তোলা না হয় তাহলে কোনভাবেই টিকে থাকা যাবেনা।
যেমন হতে পারে আপনি যে পন্য নিয়ে কাজ করছেন সেই পন্য গুলো কোন কোন এরিয়ার এবং কোন বয়সের মানুষ বেশী ব্যবহার করে থাকে সেই সাথে বাজারে নতুন এমন কি পন্য এসেছে সমস্ত বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
কোন জায়গা থেকে প্রডাক্ট সোর্স করলে সহজেই এবং অনেক কম দামে পাওয়া যাবে সে বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখে হবে। আপনি যত কম দামে পন্য কিনতে পারবেন তত কম দামে বিক্রি করতে পারবেন এর ফলে আপনার বিক্রি নিজে নিজেই বেড়ে যাবে।
অডিয়েন্স টার্গেট করার জন্য নিজেকে মার্কেটিং স্ট্রাটেজি ফলো করতে হবে। কারণ একটি ব্যবসাকে মানুষের সামনে তুলে ধরার প্রথম ধাপ হচ্ছে মার্কেটিং।
আর এই মার্কেটিং করতে হবে ফেসবুক মার্কেটিং বা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার পন্য গুলো সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
এর জন্য অবশ্যই নিজেকে ফেসবুক মার্কেটিং শিখে নিতে হবে। আর নিজেকে গড়ে তুলতে হবে এক জন ক্রিয়েটিভ পার্সন হিসাবে।
ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম
অনেক কথাইতো হলো এখন চলুন ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম সম্পর্কে বিষদ বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক কারণ ব্যবসা শুরু করবেন কিন্তু নিয়ম জানবেন না বা মানবেন না বিষয়টি কেমন হয়ে যায় তাইনা?
বাংলাদেশ সরকার কর্তিক গত ২০২১ সালে একটি ই-কমার্স নীতিমালা প্রনয়ন করছে আজ তারই ধারা গুলো নিয়ে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
দেখুন অনলাইনে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট থাকা মানে হচ্ছে আপনার একটি দোকান রেয়ছে সেটি আবার অনলাইনে আর এই ই-কমার্স ওয়েবসাইটকে ভার্চুয়াল দোকান বলা হয়ে থাকে।
সাধারণ দোকান গুলোতে যেমন কিছু নিয়ম নীতি মেনেই পন্য বিক্রি করতে হয় ঠিক তেমনি ভার্চুয়াল বা ই-কমার্স শপ গুলোতে কিছু নিয়ম মেনেই পন্য বিক্রি করতে হয় চাইলেই কিন্তু যেকোনো পন্য বিক্রি করা যায়না।
তাহলে চলুন এক নজরে ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম গুলো জেনেনেই,
১। ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ
ই-কমার্স ব্যবসা হোক বা লোকাল কোনো ব্যবসা তার জন্য একটি ট্রেড লাইসেন্স লাগবেই। তাই প্রথমেই আপনার ব্যবসার জন্য বা ই-কমার্স শপের জন্য যে নাম নির্ধারণ করবেন সেই নাম দিয়ে একটি ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।
আপনি যদি ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই নিজের ব্যবসা শুরু করেন তাহলে কিন্তু সেটি হলে অবৈধ একটি ব্যবসা। এর জন্য আপনার জেল বা জরিমানা হতে পারে।
তাই আপনি আপনার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রথমেই নিজের ব্যবসার জন্য একটি ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে নিবেন। মনে রাখবেন একটি ট্রেড লাইসেন্স মানেই হচ্ছে আপনি একটি প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রি প্রাপ্ত মালিক।
২। ই-টিন সার্টিফিকেট তৈরি
ই-টিন সার্টিফিকেটকে বলা হয় ট্যাক্স আইডেটিফিকেশন নাম্বার ( Tax Identification Number ) যেটি আপনি অনলাইন থেকেই নিজে নিজে তৈরি করে নিতে পারবেন।
যেকোনো একটি স্পেসিফিক ইনকামের কিছু পরিমাণ টাকা সরকারকে ভ্যাট দিতে হয় নতুবা সেই টাকা গুলোকে অবৈধ বলে গন্য করা হয়ে থাকে আর আপনি যদি আপনার উপার্জনের কিছু পরিমাণ টাকা সরকারকে ভ্যাট না দিয়ে থাকেন তাহলে সরকার আপনার বিরুদ্ধে অভিজান চালিয়ে জরিমানা করতে পারে ও টাকা গুলোকে নিয়ে নিতে পারে।
আপনি যেহেতু ই-কমার্স ব্যবসা করতে চাচ্ছেন তাই আপনাকে অবশ্যই একটি ই-টিন সার্টিফিকেট তৈরি করে নিতে হবে এবং বছর শেষে আপনার টাকার হিসাব অনুযায়ী সরকারকে ভ্যাট প্রদান করতে হবে।
অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা যৌথ ভাবে তাদের ব্যবসাকে পরিচালনা করে থাকে এবং যৌথ নিবন্ধন করে থাকে । এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ইউনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নাম্বার (UBID) বা পারসোনাল রিটেইল একাউন্ট (PRA) যেকোনো একটি গ্রহন করতে হবে।
যদি কেও দেশের বাইরে থেকে বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করতে চান তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশে একটি ব্যবসায়িক নিবন্ধন করতে হবে।
৩। ঔষধ জাতীয় দ্রব্য বিক্রির জন্য লাইসেন্স
আপনাদের মধ্যে কেও যদি ঔষধ জাতীয় পন্য ই-কমার্স ওয়েবসাইট কেও যদি পরিচালনা করতে চান তাহলে অবশ্যই আলাদাভাবে ঔষধ জাতীয় পন্যের লাইসেন্স গ্রহন করতে হবে।
এই লাইসেন্স গ্রহন করার জন্য আপনাকে যেতে হবে ঔষধ প্রসাশনের কাছে আর যদি আপনি লাইসেন্স না করেই ব্যবসা শুরু করে দিতে চান সেটি হবে নিজের জন্য অনেক বড় একটি বোকামি ছাড়া কিছুই না।
ই-কমার্স নীতিমালার প্রথম ধাপে যদিয় ঔষধ নিয়ে তেমন কোন প্রকার দাঁয় বদ্ধতার কথা বলা হয়নি কিন্তু দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছে কারণ ঔষধ যেহেতু মানুষের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত তাই আপনাকে অবশ্যই লাইসেন্স করতে হবে।
এদেশে অনেক বেনামি কোম্পানি রয়েছে যাদের কোন প্রকার লাইসেন্স নেই কিন্তু গোপনে অন্য কোম্পানির ঔষধ বিক্রি করে চলেছে। এমন অনেক জালিয়াত কোম্পানির মালিকের জেল জরিমানা হয়েছে।
আপনি একটু নিউজ খুলেই এমন অনেক ভিডিও পেয়া যাবেন।
তাই এই কথা পরিস্কার বলা যায় আপনি যদি ঔষধ নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটি ড্রাগ লাইসেন্স করে নিতে হবে নতুবা পরবর্তিতে হেনস্থার শিকার হতে হবে।
৪। বিস্ফোরক জাতীয় পন্য বিক্রির জন্য লাইসেন্স
বিস্ফোরক জাতীয় পন্য বলতে গ্যাস সিলিন্ডার, বিভিন্ন ধরণের আতশ বাজি জাতীয় পন্যের ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই বিস্ফোরক লাইসেন্স গ্রহন করতে হবে।
এর জন্য আপনাকে যেতে হবে বিস্ফোরক অধিদপ্তের কাছে। আপনার ব্যবসার যে পন্য রয়েছে সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে অবশ্যই লাইসেন্স প্রাপ্ত হতে হবে।
আপনি যদি লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা শুরু করেন এবং সেটি থেকে পরবর্তিতে যদি কোন প্রকার ক্ষতির কারণ হয় তাহলে আপনার জেল এবং জরিমানা দুটিই বহন করতে হবে। তাই আগে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে রাখুন।
৫। মাদক বা নেশাদার পন্য বিক্রি
কোনভাবেই ই-কমার্স মাধ্যম ব্যবহার করে মাদক জাতীয় পন্য বিক্রি করা যাবেনা। কারণ বাংলাদেশের মাদকের বৈধ ব্যবহার কোন প্রকার লাইসেন্স দেয়া হয়না।
যদিও কিছুদিন আগে মদের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে কিন্তু ই-কমার্স ব্যবসার জন্য পারমিশন দেয়া হয়নি। আপনি যদি লোভে পরে এই ব্যবসা শুরু করেন তাহলে বেশীদিন সময় লাগবেনা নিজেকে ধ্বংস করতে।
তাই মাদক জাতীয় যত পন্য আছে কোন কিছুরই ব্যবসা অনলাইনে করা যাবে। হতে পারে সেটি সিগারেট বা জর্দা।
৬। পন্যের তথ্য দেয়া
আপনি যখন অনলাইনে কোন পন্য সেল করার জন্য তার ছবি আপলোড করবেন তখন অবশ্যই সেই পন্য সম্পর্কে সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে তুলে ধরতে হবে।
হতে পারে সেটি পন্যের দাম, সরবরাহ, কত দিনের মধ্যে ডেলিভারি হবে এবং পরিবর্তন বা ফেরৎ দেয়ার সুযোগ আছে কিনা সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে দিয়ে দিতে হবে।
আপনি যদি এগুলো না দিয়েই পন্য আপলোড করা শুরু করে দেন তাহলে আইনের কাছে জবাব দিহি করতে হবে নতুবা জরিমানা দিতে হবে এমনকি আপনার কোম্পানি সরকার চাইলেই বন্ধ করে দিতে পারে।
৭। মাল্টি লেভেল ব্যবসা থেকে বিরত থাকতে হবে
একটি ই-কমার্স মাধ্যম ব্যবহার করে মাল্টি লেভেলের ব্যবসা করা থেকে বিরত থাকতে হবে যেমন হতে পারে যে পন্য অন্য দেশে বৈধ কিন্তু আমাদের দেশে বৈধ নয়। যেমন মাদক বা নেশদার পন্য অথবা হতে পারে সেক্স টয়।
এমন কাজ থেকে নিজে সব সময় বিরত রাখার চেস্টা করা নতুবা নিজের বিপদে নিজেই পরতে হবে।
৮। অর্থের বিনিময়ে ব্যবহৃত পন্য
অনেক পন্য রয়েছে যেগুলো অর্থের বিনিয়মে বিক্রি হয়ে থাকে যেমন গুগল প্লে কার্ড, ক্যাশ ভাউচার ইত্যাদি।
আপনি যদি এই সমস্ত পন্য বিক্রি করতে চান তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি নিতে হবে নতুবা আপনি এই ব্যবসা গুলো করতে পারবেননা।
যদি গোপনে করতে থাকেন তাহলে একদিন আপনাকে ধরা দিতেই হবে আর যেদিন সরকার কর্তিক আপনাকে ধরা হবে তখন লাঞ্চনার সাথে সাথে জরিমানা দিতে হবে অথবা শাস্তি পেতে হবে।
৯। গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করা
আপনি যদি চান যে নিজের মার্কেটং করার জন্য গ্রাহকের তথ্য গুলোকে নিজের ডেটাবেজের মধ্যে সংগ্রহ করে রাখবেন তাহলে অবশ্যই সেই গ্রাহকের কাছে থেকে প্রথমেই অনুমতি নিয়ে নিতে হবে।
আপনি যদি অবৈধ ভাবে কারো তথ্য সংগ্রহ করে রাখেন তাহলে সেই ব্যাক্তি আপনার বিরুদ্ধে মামালা করার মত ক্ষমতা রাখে। তাই আগে অনুমতি নিয়েনিন অথবা ট্রামস এন্ড কন্ডিশনে তথ্য সংগ্রহ করা হয় সেই বিষয় যুক্ত করেদিন।
১০। পন্য ডেলিভারি
প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান তাদের পন্য গুলোকে ডেলিভারি দেয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময় সীমা দিয়ে থাকে। হোক সেটি ৩দিব বা ৭দিন অবশ্যই একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে নিতে হবে।
আর আপনি যদি সঠিক সময়ে পন্য ডেলিভারি করতে না পারেন তাহলে কিন্তু আপনার জরিমানা হতে পারে। ভোক্তা আপনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার মত ক্ষমতা রাখে।
মনে রাখতে হবে ভোক্তা অধিকার আইন কনেক বেশী কঠিন। আর সেই সাথে সরকার কর্তিক আইনে বলা হয়েছে যেকোনো পন্য হতে পারে কিন্তু প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান তাদের ক্যাশ অন ডেলিভারি মাধ্যম চালু রাখতে হবে।
বিশেষ করে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতেই এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
এই ছিল ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম । আপনি যদি ই-কমার্স ব্যবসা করতে চান তাহলে অবশ্যই প্রতিটি নিয়ম ফলো করেই ব্যবসা শুরু করতে হবে। চলুন এক নজরে ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম বা নীতিমালা আবার দেখে নেয়া যাক,
- অবশ্যই লাইসেন্স করে নিতে হবে।
- টিন বা ট্যাক্স সার্টিফিকেট তৈরি করে নিতে হবে।
- পন্যের যাবতীয় তথ্য দিয়ে দিতে হবে।
- মাদক দ্রব্য বিক্র্য করা যাবেনা।
- গ্রাহকের তথ্য অনুমতি নিয়ে সংগ্রহ করতে হবে।
- ঔষধ জাতীয় পন্য বিক্রি করতে ড্রাগ লাইসেন্স নিয়ে নিতে হবে।
- সঠিক সময়ে ক্যাশ অন ডেলিভারি করতে হবে।
- সমস্ত ধরণের অবৈধ পন্য বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
শেষ কথা
আজকের এই আর্টিকেলে ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম সম্পর্কিত যে সমস্ত তথ্য এক জন ব্যাক্তির জন্য জানা জরুরী সমস্ত কিছু নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়াও আপনার যদি ই-কমার্স ব্যবসা সম্পর্কে আর কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
সেই সাথে আজকের আর্টিকেল কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেননা।