ই-সার্ভিস

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম ২০২৩

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার জন্য কি কি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে এবং কিভাবে করতে হবে তার সমস্ত কিছু বিস্তারিতাভাবে জানিয়ে দেয়া হবে। যেহেতু জন্ম নিবন্ধন সংশোধন খুবি প্রয়োজনীয় একটি বিষয় তাই এই আর্টিকেলটি অনেক বেশী জরুরী হতে চলেছে।

অনেকেই রয়েছেন অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার পর ভূল হয়ে থাকে যার ফলে সেটি পুনরায় সংশোধন করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে দেখিয়ে দেয়া হবে কিভাবে জন্ম নিবন্ধনের ভূল সংশোধন করা যায়।

একজন ব্যাক্তির দেশের নাগরিক হওয়ার প্রথম প্রমানপত্র হচ্ছে জন্ম সনদ। দেশের প্রতিটি ব্যাক্তিকে ১৮ বছর হওয়ার আগ মূহুর্তে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করতে হয় কিন্তু তার পূর্বে বাংলাদেশের একজন বৈধ নাগরিক হিসাবে পরিচয় দিতে চাইলে জন্ম সনদ হচ্ছে একমাত্র ভরসা। পরবর্তিতে যখন জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করা হয় তখন সর্বপ্রথম জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হয়ে থাকে।

এছাড়াও স্কুল জীবনের প্রতিটি সার্টিফিকেট এবং কাগজপত্র তৈরি করার জন্য জন্ম সনদ অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করার সময় তথ্য গুলো পূরণ করার সময় ভূল হয়ে যায় যার ফলে নতুন করে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করতে হয়। আর যদি এই জন্ম সনদের ভূল থেকে যায় তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্র থেকে শুরু করে পাসপোর্ট এবং স্কুল, কলেজের সার্টিফিকেটে ভূল হয় যা পরবর্তিতে অনেক বড় সমস্যা তৈরি করে।

আরও দেখুনঃ ঘরে বসে মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার উপায়

তাই জন্ম নিবন্ধনে কোন প্রকার ভূল থাকলে সেটি আগে থেকেই সংশোধন করে নেয়া প্রতিটি ব্যাক্তির কাছে অতিব জরুরী। আর বর্তমানে যেহেতু ঘরে বসেই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করা একদম সহজ হয়ে উঠেছে তাই এখনই এই আর্টিকেলটি ফলো করার মাধ্যমে অতি সহজেই আপনার ভূল হয়ে যাওয়া জন্মনিবন্ধন এখনই সংশোধন করেনিন।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি লাগে

অনলাইন থেকে জন্ম নিবন্ধনের ভূল সংশোধন করতে চাইলে বেশ কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে যেমন গ্রাহকের জাতীয় পরিচয় পত্র যদি থাকে, বোর্ড পরিক্ষার সনদ পত্র অথবা নিকটস্থ কাউন্সিলরের প্রত্যয়ন পত্র প্রয়োজন হবে। যাদের কাছে জাতীয় পরিচয় পত্র নেই বা জাতীয় পরিচয় পত্র হয়নি তারা এই সমস্ত কাগজপত্রের পরিবর্তে হাসপাতালের সনদ ব্যবহার করলেই হয়ে যাবে।

এছাড়াও জন্ম নিবন্ধনের ভূল সংশোধন করার জন্য জমির খাজনা বা নিজ বাড়ির ট্যাক্স পরিশোধ করার পর যে রশিদ প্রদান করে সেটি প্রয়োজন হবে এবং প্রমান সাপেক্ষে ইউটিলিটি যেমন পানি বিল, বিদ্যুৎ বিলের কপি প্রয়োজন হবে।

আরও দেখুনঃ মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র দেখার নিয়ম

অনেক সময় দেখা যায় শিশুদের জন্ম নিবন্ধন ভূল হয় এক্ষেত্রে তাদের জন্ম সনদের ভূল সংশোধন করার জন্য শিশুর টিকা প্রদান করার কার্ড এবং শিশু যদি স্কুলে পড়ে থাকে তাহলে তার বোর্ড পরিক্ষার যেকোনো এটি ডকুমেন্ট অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র থাকলে সেটি প্রয়োজন হবে।

এই ক্ষেত্রে প্রতিটি মানুষের উচিৎ যখন নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবে তখন সমস্ত তথ্য ভালোভাবে খেয়াল করে ফরম পূরণ করা অতিব জরুরী যেন পরবর্তিতে কোন প্রকার ঝামেলার মধ্যে পরতে না হয়। তাহলে দেখা যাক জন্ম নিবন্ধন ভূল সংশোধন করতে কি কি লাগে?

নিজের নাম সংশোধন করতে যা যা লাগবে

কখনো যদি নিজের জন্ম নিবন্ধন নতুন আবেদন করার পর সেখানে নিজের নাম ভূল থাকে এবং এছাড়াও যদি আগে থেকে ভূল থাকে তাহলে সেই ভূল গুলো সংশোধন করার জন্য বেশ কিছু ব্যাক্তিগত ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। তাহলে জানুন নিজের জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে,

  • টিকা কার্ড লাগবে অথবা যদি টিকা কার্ড না থাকে তাহলে ডাক্তার থাকে প্রদানকৃত ডকুমেন্ট লাগবে যা ছোট বেলায় চিকিৎসা করার সময় প্রদান করা হয়ে থাকে
  • জাতীয় পরিচয় পত্র যদি থাকে
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার ডকুমেন্ট যদি থাকে না থাকলে অবশ্যই টিকা কার্ড থাকতে হবে
  • শিশুদের জন্য টিকা কার্ড হলে হবে কিন্তু যারা প্রাপ্ত বয়স্ক রয়েছে তারা জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা স্কুলের যেকোনো একটি সার্টিফিকেট ব্যবহার করলেই হবে

পিতা-মাতার নাম সংশোধন করতে যা যা লাগবে

অনেক সময় দেখা যায় জন্ম নিবন্ধনে পিতা এবং মাতার নামের ভূল হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সাধারণ কিছু ডকুমেন্ট হলেই পিতা এবং মাতার নামের ভূল সংশোধন করা সম্ভব। জেনেনিন কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়ে থাকে,

  • পিতা এবং মাতার অনলাইন করা জন্ম নিবন্ধন
  • পিতা এবং মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র
  • নিজের বা ব্যাক্তিগত শিক্ষা সনদ

বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করতে যা যা লাগবে

আপনি যে জায়গায় বর্তমানে অবস্থান করছেন সেটি হচ্ছে আপনার বর্তমান ঠিকানা। অনেক সময় দেখা যায় নিজের বর্তমান ঠিকানা ভূল হয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রে যে সমস্ত ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় জানুন,

এই ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ইউটিলিটি বিলের কপি হলেই হবে যেমন বিদ্যুৎ বিল, পানি বিল বা গ্যাস বিলের কপি হলেই হবে। এগুলোর মধ্যে সব গুলো পেপারেই নিজের বর্তমান ঠিকানা যুক্ত করা থাকে।

স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করতে যা যা লাগবে

স্থায়ী ঠিকানা বলতে আপনি যে স্থানে জন্ম গ্রহন করেছেন সেই ঠিকানাকে বোঝানো হয়ে থাকে। জন্ম সনদে স্থায়ী ঠিকানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাহলে জেনেনিন জন্ম নিবন্ধনে স্থায়ী ঠিকা পরবর্তন করতে কি কি লাগে?

  • স্থানীয় চেয়ারম্যান অথবা কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র এবং আপনি যদি পৌরসভা এরিয়ার মধ্যে হয়ে থাকেন তাহলে মেয়রের প্রত্যয়নপত্র দরকার হবে
  • নিজের বাড়ির খাজনা অথবা কোর পরিশোধ করার ডকুমেন্ট যা কর প্রদান করার পর দিয়ে থাকে

এই সমস্ত ডকুমেন্ট থাকলে জন্ম নিবন্ধন থেকে যেকোনো প্রকারের ভূল সংশোধন করা সম্ভব। এছাড়াও টেবিল আকারে জানিয়ে দেয়া হবে দেখেনিন,

আরও দেখুনঃ যেভাবে শুধুমাত্র টোকেন নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করা যায়

সংশোধনের বিষয়বস্তু সমূহযে সমস্ত ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে
ব্যাক্তিগত নাম সংশোধন করার জন্য যা লাগবে১. বয়স যদি কম হয় তাহলে টিকা কার্ডের কপি লাগবে
২. প্রাপ্ত বয়স্ক হলে এনআইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে
৩. শিক্ষার্থী হলে স্কুল বা কলেজের সার্টিফিকেট লাগবে
পিতা মাতার নাম সংশোধন করতে যা যা লাগবে১. পিতা এবং মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন যেটি ডিজিটাল হতে হবে
২. পিতা এবং মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র
৩. নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ পত্র যেমন সার্টিফিকেট
বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করার ক্ষেত্রেবিদ্যুৎ বিল, পানি বিল অথবা গ্যাস বিলের কপি যেকোনো একটি হলেই হবে
স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে১. চেয়ারম্যান অথবা কাউন্সিলরের প্রত্যয়ন পত্র পৌরসভার মধ্যে হলে মেয়রের প্রত্যয়নপত্র লাগবে
২. বাড়ির খাজনা বা কর পরিশোধের কপি

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম

অনলাইন থেকে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার পাশাপাশি ভূল হলে সেটিও সংশোধন করা যায়। এর পূর্বে কিভাবে অনলাইন থেকে নতুন করে জন্ম নিবন্ধন করা যায় সেটি নিয়ে আর্টিকেল লেখা রয়েছে চাইলে সেটি দেখতে পারেন।

নিজের জন্ম নিবন্ধন যদি কোনভাবে ভূল হয়ে যায় তাহলে সেটি সংশোধন করার জন্য জন্ম এবং মিত্যু ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে এবং নিজের ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং সঠিক জন্ম তারিখ দিয়ে সেটির ভূল সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে হয়।

নিজের জন্ম সনদে যদি কোন প্রকার ভূল থাকে তাহলে সেটি নিয়ে ভবিষ্যতে অনেক ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় যেমন স্কুলের সার্টিফিকেটের সাথে জন্ম সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে মিল না থাকলে চাকরির ক্ষেত্রে অনেক ধরণের সমস্যার তৈরি হয়।

আরও দেখুনঃ অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম

যদি ভূল থেকে যায় তাহলে সেটি নিয়ে অনেক বিরম্বার সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে আগে থেকেই নিজের জন্ম সনদের ভূল সংশোধন করে নেয়া প্রতিটি নাগরিকের অতিব জরুরী। তাই আজকের এই আর্টিকেলে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম নিয়ে প্রতিটি বিষয় ধাপে ধাপে দেখিয়ে দেয়া হবে।

যেহেতু এটি একটি টিউটোরিয়াল ব্লগ তাই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার প্রতিটি বিষয় ধাপে ধাপে বিন্যস্ত করা হয়েছে। তাই নিচে দেয়া প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করুন এবং নিজের অথবা পরিবারের অন্য কারো জন্ম সনদের ভূল সংশোধন করনিন।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার ধাপ সমূহ

অনলাইন থেকে নিজের জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার জন্য বেশ কয়েকটি ধাপ আপনাকে অনুসরণ করতে হবে এবং আপনি যখন ধাপ গুলো অনুসরণ করতে থাকবে তখন ধীরে ধীরে নিজে থেকেই ঘরে বসে মোবাইল অথবা কম্পিউটার দিয়ে জন্ম সনদটি সংশোধন কর নিতে পারবেন একনজরে ধাপ গুলো জেনেনিন এবং প্রতিটি বিষয় অনুসরণ করুন,

  • প্রথমেই জন্ম এবং মিত্যু সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে
  • ওয়েবসাইটে প্রবেশ করর পর মেনুতে ক্লিক করতে হবে এবং  জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন এই অপশনে ক্লিক করে দিতে হবে
  • মেনুতে যাওয়ার পরে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে হবে
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করার মাধ্যমে ফরম পূরণ করতে হবে
  • আবেদন করার পর সেই আবেদন পত্র প্রিন্ট করতে হবে অথবা সেইভ করে রেখে দিতে হবে
  • নিবন্ধক কার্যালয় থেকে নতুন সংশোধন করা সনদ সংগ্রহ করতে হবে

ভূল হয়ে যাওয়া জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করার কয়েকদিন পর নিবন্ধক কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে অথবা মোবাইল অথবা কম্পিউটার ব্যবহার করে অনলাইন থেকে জন্ম সনদ ডাউনলোড করতে হবে।

ধাপ১ঃ জন্ম মিত্যু ওয়েবসাইট ভিজিট

ভূল হয়ে যাওয়া জন্ম সনদ সঠিক করার জন্য প্রথমেই জন্ম মিত্যু ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে হবে। ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার জন্য  https://bdris.gov.bd/br/correction এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে।

ওয়েবসাইট ভিজিট করার পর নতুন একটি পেজ ওপেন হবে এবং সেই সাথে ওয়েবসাইটের মেনু থেকে জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন এই অপশনে ক্লিক করে দিতে হবে এবং ক্লিক করার সাথে সাথে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন পেজে নিয়ে যাবে।

নতুন পেজ ওপেন হওয়ার সাথে সাথে নতুন একটি পেজ চলে আসবে এবং এখন থেকেই জন্ম সনদের ভূল সংশোধন শুরু হবে।

ধাপ২ঃ জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন

এখন আপনাকে জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই করতে হবে কেননা প্রতিটি ব্যাক্তির জন্য আলাদা আলাদা জন্ম সনদ হয়ে থাকে তাই নিজেরটি সংশোধন করার জন্য অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে নিতে হবে।

আপনি উপরে দেয়া ওয়েবসাইটের লিংকে ক্লিক করলে এই পেজে চলে আসেব এবং সেই সাথে উপরে দেয়া ছবির মত করে প্রথম ঘরে জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং দ্বিতীয় ঘরে জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে এবং সব শেষে ক্যাপচা পূরণ করে অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করে দিতে হবে।

আপনার জন্ম নিবন্ধন যদি অনলাইন করা না থাকে তাহলে কিন্তু কোন প্রকার রিজাল্ট আসবেনা তাই আপনার জন্ম সনদ আগে থেকে অনলাইন থাকতে হবে। আপনার প্রদান করা তথ্য যদি সঠিক হয় তাহলে ফরম এর নিচে আপনার নাম চলে আসবে এবং ডান পাশে নির্বাচন করুন বাটন আসবে এবং সেখানে আপনাকে ক্লিক করে দিতে হবে। এই ধাপটি শেষ হলে পরবর্তি ধাপে চলে যেতে হবে।

ধাপ৩ঃ সংশোধনের বিষয় নির্বাচন

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন

এখন সংশোধনের বিষয় নির্বাচন করার জন্য ড্রপ ডাউন মেনু পাওয়া যাবে এবং মেনু থেকে যে বিষয়টি ভূল হয়েছে সেটি নির্বাচন করতে হবে। যেমন নিজের নামের ভূল অথবা পিতা-মাতার নামের ভূল যাই হোক না কেন সেটি সিলেক্ট করতে হবে এবং যে তথ্যটি ভূল হয়েছে সেটি নির্বাচন করে সঠিকটি দিয়ে দিতে হবে।

নামের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় বা একাধিক বিষয় যদি ভূল থাকে তাহলে আরও তথ্য সংযোজন করুন এই অপশনে ক্লিক করতে হবে এবং নতুন অপশন যুক্ত হয়ে যাবে। এখানে সংশোধন করার জন্য একটু খেয়াল করে ফরম পূরণ করতে হবে যেন পুনরায় ভূল না হয়।

পিতার নাম, মাতার নাম, গ্রামের নাম, জন্ম তারিখ যে তথ্য হোক সেটি অনলাইন থেকে অতি সহজেই সঠিক করে নেয়া হবে। এই ফরমটি যদি পূরণ করা হয়ে থাকে তাহলে পরবর্তি ধাপ অনুস্মরণ করুন।

ধাপ৪ঃ সঠিক তথ্য প্রদান

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন

জন্ম নিবন্ধন সঠিক তথ্য প্রদান করার দিকে অনেক বেশী খেয়াল রাখতে হবে কেননা নতুন করে ভূল সংশোধন করার করার সময় তথ্য গুলো ভূল হলে সেটি আবার নতুন করে সঠিক করে নিতে হবে তাই প্রথমেই সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে।

সঠিক তথ্য প্রদান করার জন্য নতুন ইনপুট অপশন পাওয়া যাবে এবং সেখানে নতুন তথ্য দিয়ে ফরমটি পূরণ করতে হবে। কোন তথ্য লেখার সময় যদি ভূল হয় তাহলে সেটি পরবর্তিতে সঠিক করতে অনেক বিরম্বার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।

তাই আপনার উচিৎ হবে জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা যেকোনো একটি শিক্ষা সনদ দেখে দেখে ফরম পূরণ করা। এক্ষেত্রে ভূল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা। তাই বানান গুলো লেখার সময় সমস্ত কিছু সঠিকভাবেই লিখুন।

আপনি যদি জন্ম স্থান অথবা স্থানীয় ঠিকানা পরবর্তন করতে চান তাহলে পাসে টিক চিনহু দেয়ার অপশন পাবেন সেখানে টিক দিয়ে সঠিকটি লিখুন। এক্ষেত্রে ঠিকানা ঠিক করতে হলে দেশ, বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং গ্রামের নাম সঠিকভাবে দিয়ে পূরণ করতে হবে।

 ধাপ৫ঃ সংশোধনের কারণ নির্বাচন

প্রতিটি কাজের পাশে যেমন একটি কারণ থাকে ঠিক তেমনি জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার জন্য একটি কারণ নির্বাচন করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় নামের বানান ভূল, পিতা মাতার নামের বানান ভূল অথবা গ্রাহকের নাম পুরোটাই ভূল হয়ে থাকে এবং এই ক্ষেত্রে তার নামের পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র বা শিক্ষা সনদের সাথে নামের, জন্ম তারিখের বা অন্যান্য কোন কিছু মিল নেই এমন কারণ হতে পারে। জন্ম সনদটি কেমন হতে চলেছে সেটির উপর মিল রেখে পরবর্তনের কারণ নির্বাচন করে নিতে হবে এবং কারণ গুলো কোনটির সাথে মিল না হলে নতুন তথ্য সংযুক্ত এই অপশন সিলেক্ট করে দিতে হবে।

ধাপ৬ঃ আবেদনকারীর তথ্য প্রদান

এখানে জন্ম নিবন্ধনের জন্য যে ব্যাক্তি আবেদন করছে তার সাথে যার জন্ম সনদ ঠিক করতে হচ্ছে তার সাথে কি সম্পর্ক রয়েছে সেটি সিলেক্ট করে দিতে হবে। নিজের জন্য আবেদন করতে হলে সম্পর্ক নিজ দিয়ে দিতে হবে এবং সেই সাথে সন্তানের জন্য হলে পিতা হলে পিতা এবং মাতা হলে মাতা সিলেক্ট করে দিতে হবে।

নিচে আবেদন কারীর নাম এবং ঠিকানা বসিয়ে দিতে হবে। সব শেষে আবেদন কারীর সচল মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিতে হবে এবং সংযোজোন বাটনে ক্লিক করে দিতে হবে। মনে রাখবেন নিজের জন্য আবেদন করলে অবশ্যই নিজের মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন।

ধাপ৬ঃ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড

আবেদন করার সব শেষে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্যের ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে। আপনি যে সমস্ত তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করেছেন সেগুলো ঠিক আছে কিনা তার প্রমান সাপেক্ষে কিছু ডকুমেন্ট স্ক্যান করে পিডিএফ আকারে রাখতে হবে এবং সেগুলো আপলোড করে দিতে হবে। ডকুমেন্টস গুলো যদি আপনার তথ্যের সাথে মিল না থাকে তাহলে কিন্তু আপনার আবেদন বাতিল করা হবে।

আপনি চাইলে সংযোজন বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে একাধিক ফাইল আপলোড করা যাবে। আপনি যদি সঠিক তথ্য প্রদানে ফাইল গুলো আপলোড করতে পারেন তাহলে আপনার আবেদন অতি দ্রুত গ্রহন করা হবে তাই প্রমান সাপেক্ষে যেকোনো পরিক্ষার সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি অথবা পাসপোর্টের কপি আপডেট করতে হবে। যদি শিশু হয় তাহলে টিকা কার্ডের কপি আপলোড করলেই হবে।

এখানে একটি বিষয় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে, যে সমস্ত ডকুমেন্ট আপলোড করার সময় তার সাইজ যেন ১০০ কিলোবাইট এর চেয়ে বেশী না হয়। জন্ম সনদের ভূল সংশোধন বাবদ ফি প্রদান করতে হয় এবং এক্ষেত্রে আপনাকে পেমেন্ট হিসাবে ফি আদায় বাছাই করে দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে দিতে হবে।

এই কাজ গুলো সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারলে আপনার জন্ম সনদের যে ভূল ছিল সেটি সঠিক করে নিতে পারবেন। আশা করছি প্রতিটি বিষয় আপনি ভালোভাবে খেয়াল করেছেন এবং সেই সাথে নিজের জন্ম সনদ সঠিক করে নিয়েছে। এখন আপনাকে আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করতে হবে।

ধাপ৭ঃ আবেদন পত্র প্রিন্ট করুন

আপনার আবেদনটি সঠিভাবে পূরণ করার পর সাবমিট করলে আবেদন পত্রের নাম্বার দেখা যাবে এবং আপনি চাইলে আপনার আবেদন পত্রের নাম্বার সংগ্রহ করে রেখে দিতে পারেন। এছাড়াও চাইলে আপনি আবেদন পত্রটি প্রমান সাপেক্ষে প্রিন্ট অথবা মোবাইলে সেইভ করে রেখে দিতে পারবেন।

এর জন্য মোবাইল থেকে হলে সেভ অপশন পাবেন এবং কম্পিউটার থেকে হলে Control+P বাটন এক সাথে চাপ দিলেই উপরে দেয়া ছবির মত অপশন চলে আসবে। এক্ষেত্রে অপশন থেকে সরাসরি প্রিন্ট করতে পারবেন অথবা পিডিএফ আকারে ডানলোড করে নিতে পারবেন।

আপনার কাছে যদি প্রিন্টার না থাকে তাহলে Save as PDF এই অপশনটি সিলেক্ট করে সেভ বাটনে ক্লিক করে দিন এবং নিবন্ধন রিনিউ করার পর যে তারিখটি দেয়া হবে সেই তারিখ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে এই সেভ করা কাগজটি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ অথবা পার্শবর্তি নিবন্ধক অফিসে জমা দিলেই আপনার নতুন জন্ম সনদ পাওয়া যাবে।

জন্ম নিবন্ধনে ইংরেজি করার নিয়ম

আগের যে সমস্ত জন্ম নিবন্ধন রয়েছে সেগুলো এনালগ কিন্তু বর্তমানে বেশীরভাগ নিবন্ধন ডিজিটাল বা ইংরেজিতে। বর্তমানে অনেকের জন্ম সনদ বাংলা ভাষায় রয়েছে সেগুলো ইংরেজি ভাষায় সংশোধন করার জন্য আবেদন করা যাবে।

জন্ম নিবন্ধন নতুন করে সংশোধন করলে নিজে থেকেই ইংরেজি ভাষায় হয়ে যাবে। অনলাইন থেকে যেকোনো ধরণের তথ্য পরবর্তন করার জন্য আবেদন করলে সেটি ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন হয়ে যাবে অর্থাৎ নিজে থেকেই ইংরেজিতে হয়ে যাবে।

বর্তমান সময়ে ইংরেজি জন্ম নিবন্ধন ব্যাতিত বাংলা লেখা জন্ম সনদ কোথাও ব্যবহার করা যায়না। তাই আপনার জন্ম নিবন্ধন যদি ইংরেজি না করা থাকে এখনই ইংরেজি ভাষায় করেনিন।

শেষ কথাঃ আজকের এই আর্টিকেলে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে কিভাবে ভূল হয়ে যাওয়া জন্ম নিবন্ধন নতুন করে সঠিক তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে যেভাবে ভূল সংশোধন করবেন। আশা করছি আপনি অতি সহজেই সঠিকভাবে নিজের ভূল হয়ে যাওয়া জন্ম সনদটির ভূল সংশোধন করে নিয়েছেন। এর পরেও যদি কোন প্রকার সমস্যার তৈরি হয় অবশ্যই কমেন্ট করবেন এবং সেই সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করতে ভূলবেননা।

শেয়ার করুন

নির্ঝর ফারুক

প্রযুক্তি প্রেমী মানুষের মধ্যে আমিও একজন। ছেলেবেলা থেকেই প্রযুক্তির সাথে জড়িয়ে রয়েছি এবং অনেক কিছু শিখেছি ও এখনো শিখছি। যে বিষয় গুলো জানি সেই বিষয় গুলো নিয়েই মূলত এই ওয়েবসাইটে লেখালেখি করি। টেকজোন বাংলার একমাত্র সত্ত্বাধিকারী আমি নির্ঝর ফারুক সক্রিয় থাকবো আপনার সাথে ইনশাল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *