ই-সার্ভিস

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার নিয়ম ২০২৩

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন -বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে একজন মানুষের প্রথম নাগরিক স্বীকৃতি হচ্ছে জন্ম নিবন্ধন। কারো কাছে যদি জন্ম নিবন্ধন না থাকে তাহলে তাকে বাংলাদেশের নাগরিক বলা হয়না। কেও যদি জাতীয় পরিচয় পত্র করতে চায় তার জন্য দরকার জন্ম নিবন্ধন পত্র কেননা বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে একজন প্রাপ্ত বয়স্কের কাছে বাংলাদেশ সরকার কর্তিক জাতীয় পরিচয় পত্র থাকা আবশ্যক আর যদি জন্ম নিবন্ধন না থাকে তাহলে সেটিও করা সম্ভব নয়।

যারা বাংলাদেশে জন্ম গ্রহন করে সরকারীভাবে আইন মেনে জন্ম নিবন্ধন করে নিতে হয়। অনেকের জন্মের কয়েকদিন পরেই জন্ম সনদ করে দেয়া হয় কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় সঠিক বয়স এবং ভূল থাকে তাই নতুন করে জন্ম নিবন্ধন করে নিতে হয়।

বাংলাদেশে ২০০৪ সালে একটি আইন প্রণয়ন করা হয় যেখানে একজন ব্যাক্তির বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে জন্ম নিবন্ধন থাকা আবশ্যক। এই ক্ষেত্রে অনেকেই নিজের জন্ম নিবন্ধন করার সময় অনেক ভূল ভ্রান্তি করে ফেলে যার ফলে পরবর্তিতে অনেক ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাকে দেখিয়ে দিবো কিভাবে অনলাইনে নির্ভুলভাবে নিজের নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা যায়। তাই একটু সময় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ুন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে কোন প্রকার ভূল না করেই জন্ম নিবন্ধন করেনিন।

আর্টিকেল সূচনা

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন

এক সময় জন্ম নিবন্ধন করার জন্য প্রতিটি ব্যাক্তিকে সরাসরাই পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হত কিন্তু বর্তমানে ঘরে বসে অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা যায় এবং সেই সাথে মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করেই জন্ম নিবন্ধন বের করা যায়।

এই সব কিছু সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র ডিজিটালাইজেশন বা প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে। সরকারী ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে প্রবেশ করে নতুন করে ডাটা ইন্সার্ট করে সাবমিট করে দিলেই নিজের জন্ম নিবন্ধন তৈরি হয়ে যায়।

এর জন্য প্রথমেই https://bdris.gov.bd/ এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে এবং যে ঠিকানাতে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন করতে চাইছেন সেই জায়গা নির্বাচন করতে ও এবং পরবর্তি ধাপে চলে যেতে হবে। এরপর নিজের নাম, ঠিকানা, নিজের পিতা-মাতার নাম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

যার জন্য নতুন করে জন্ম নিবন্ধন করেবেন বিশেষ করে শুশুর ব্যাক্তিগত তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন প্রকার ভূল না হয়। ফরমের প্রথমেই যার জন্ম নিবন্ধন করতে হবে তার নাম ইংরেজি এবং বাংলাতে সঠিকভাবে দিয়ে দিতে হবে এবং এইখানে মনে রাখতে হবে এখন যে নাম দেয়া হবে সেটি পরবর্তিতে অন্যান্য কাগজপত্র করার সময় কাজে লাগবে তাই কোন প্রকার ভূল করা যাবেনা।

জন্মের তারিখ সঠিকভাবে দিয়ে দেয়ার পর পিতা-মাতার কততম সন্তান সেটি উল্লেখ করতে হবে এবং নিবন্ধনকারী পুরুষ নাকি মহিলা সেটি সিলেক্ট করে পরবর্তি ধাপে চলে যেতে হবে। প্রতিটি বিষয় ধাপে ধাপে আপনাকে বুঝিয়ে দেয়া হবে শুধু আর্টিকেলটি ফলো করতে থাকুন।

আপনি অবশ্যই সময় নিয়ে আর্টিকেলটি লক্ষ্য করুন এবং সঠিকভাবে সব তথ্য দিয়ে সাবমিট করুন। আশা করা যায় এই ব্লগটি পড়লে আপনি সঠিকভাবেই ঘরে বসে অনলাইনে জন্মনিবন্ধন করে নিতে পারবেন।

অনেকেই রয়েছেন খুব কম সময়ের মধ্যে তার জন্ম নিবন্ধন করতে চায় তাই জন্ম সনদে ভূল ভ্রান্তি হয়ে থাকে। তাই উপদেশ হিসাবে বলছি একটু সময় নিয়ে আর্টিকেলটি পড়ুন তাহলে অনেক বেশী উপকৃত হতে হবেন।

অনলাইন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে

প্রতিটি ব্যাক্তির নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার জন্য বেশ কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে এবং কিছু তথ্য প্রয়োজন হয়ে থাকে। বিশেষ করে বয়স অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের তথ্য প্রয়োজন হয়ে থাকে তাই কত বছর বয়সের জন্য কি কি তথ্য প্রয়োজন হবে সেগুলো বলে দেয়া হবে।

বিশেষ করে জন্ম নিবন্ধন করার জন্য টিকা কার্ড অথবা হাসপাতালের ছাড়পত্র, বাড়ির কর পরিষদের কাগজ এবং পিতামাতার একটি সচল মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

যেহেতু আবেদনকারীর বয়সের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরণের তথ্য প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই প্রথমে কোন বয়সের জন্য কোন তথ্য দরকার হবে সেটি জেনেনিন এবং সেই সাথে পরবর্তি ধাপে গিয়ে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করুন।

যে সমস্ত বিষয় গুলো প্রতিটি মানুষের জন্য প্রয়োজন সেগুলো না জেনেই যদি কেও নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে তাহলে দেখা যাবে অনেক কিছু ভূল হয়ে গিয়েছে এবং যেটি নিয়ে পরবর্তি সময়ে অনেক সমস্যার তৈরি হচ্ছে তাই একটু সময় নিয়ে তথ্য গুলো জেনে নিয়ে তারপর নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করুন এবং নির্ভূল জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে নিন।

বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন বয়সের শিশুর জন্য যা যা লাগেবে

আগেই বলে রেখেছি প্রতিটি বয়সের মানুষের জন্য আলাদা আলাদা তথ্য প্রয়োজন হয়ে থাকে। প্রথমেই দেখেনিন ০ থেকে ৪৫ দিন বয়সি সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর জন্য কি কি তথ্য প্রয়োজন হয়ে থাকে।

  • শিশুর টিকা কার্ডের কপি বা টিকা কার্ড অথবা কোন হাসপাতালে ভর্তি থাকলে সেই হাসপাতালের ছাড়পত্র
  • বাড়ির কর পরিষদের রশিদ অথবা বাড়ির টেক্স এর টোকেন প্রয়োজন হবে
  • পিতা-মাতা অথবা যেকোনো একজন অভিবাবকের সচল মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হবে
  • পিতা-মাতার অনলাইন বা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধনের নাম্বার প্রয়োজন হবে ( না থাকলেও সস্যা নেই থাকলে ভালো হয় )
  • পিতা -মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র ( না থাকলে সমস্যা নেই থাকলে ভালো হয় )

বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর হলে যা যা লাগবে

৪৬ দিন থেকে ৫ বছর বয়স শিশুর জন্য প্রয়োজন কারণ এই বয়সের মানুষের জন্য শিশুদের জন্য যে সমস্ত তথ্য দরকার ঠিক একই কাগজপত্র লাগবে। তাহলে দেখুন কি কি তথ্য লাগবে

  • শিশুর টিকা কার্ড অথবা হাসপাতালের ছাড়পত্র
  • পিতা এবং মাতার অনলাইন জন্ম নিব্ধন ডিজিটাল হতে হবে যেটি এই বয়সের জন্য অপশনাল থাকলেও হবে আবার না থাকলেও হবে
  • পিতা এবং মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র
  • বাড়ির কর পরিশোধের রশিদ
  • পিতা অথবা মাতার সচল মোবাইল নাম্বার
  • স্কুলে পড়লে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নপত্র লাগবে

বয়স ৫ বছর বা বেশী হলে যা যা লাগবে

  • প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট যেমন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জেএসসি সার্টিফিকেট
  • চিকিৎসকের প্রত্যায়ন পত্র
  • বাড়ির কর পরিশোধ করার রশিদ অথবা জমির দলিল বা জমির খাজনা প্রদান করার রশিদ
  • পিতা এবং মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধ না থাকলে সমস্যা নেই
  • পিতা এবং মাতার এনআইডি কার্ডের কপি না থাকলে সমস্যা নেই
  • নিজের সঠিক বয়স প্রমাণ করার জন্য চিকিৎসকের প্রত্যয়ন পত্র

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার নিয়ম

নতুন জন্ম নিব্ধন করার জন্য একটি আবেদন ফরম পূরণ করতে হয় এবং এই আবেদন ফরম পূরণ করার জন্য সরকারী ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে যে ওয়েবসাইটটি জন্ম – মিত্যু নিবন্ধন সাইট নামে পরিচিত। ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য একটি লিংকে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করুন

লিংকে ক্লিক করার সাথে সাথে নতুন একটি ওয়েবসাইট ওপেন হবে এবং সেই সাথে কিছু তথ্য দিয়ে সাবমিট করতে হবে যেমন আপনাকে নাম, জন্ম তারিখ, লিঙ্গ- নারি/পুরুষ সিলেক্ট এবং সেই সাথে নিজের ঠিকানা দিয়ে সাবমিট করতে হবে। এখানে অবশ্যই একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, নিজের বা যার নামে আবেদন করা হবে তার নামের প্রথম এবং দ্বিতীয় অংশ বাংলা ও ইংরেজিতে পূরণ করতে হবে এবং দেখতে হবে কোন প্রকার ভূল যেন না হয়।

আপনি যেন অতি সহজেই আবেদন করতে পারেন সেই জন্য প্রতিটি বিষয় ধাপে ধাপে দেখিয়ে দেয়া হবে তাই একটু সময় নিয়ে প্রতিটি ধাপ দেখতে থাকুন এবং সঠিক ও নির্ভুল ভাবে ফরম পূরণ করুন।

ধাপ-১ঃ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সাইটে প্রবেশ

প্রথমেই বাংলাদেশ জন্ম ও মিত্যু ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে প্রবেশ করার জন্য এখানে ক্লিক করুন। এখন আপনার সামনে নতুন একটি পেজ ওপেন হবে যেখান থেকে আপনাকে জন্ম স্থান সিলেক্ট করতে হবে। আপনি জন্ম স্থান অথবা স্থায়ী ঠিকানা সিলেক্ট করে পরিবর্তিতে ক্লিক করেদিন।

এছাড়াও কেও যদি বাংলাদেশ দুতা বাসের অধিনে থেকে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে চায় তাহলে তাকে নিচে দেয়া অপশনে টিক মার্ক দিয়ে পরবর্তিতে চাপ দিয়ে দিতে হবে।

আশা করা যাচ্ছে আপনি প্রথম ধাপটি সঠিকভাবেই পূরণ করে নিয়েছেন এখন পরবর্তি ধাপটি ফলো করুন এবং সেই অনুযায়ি সঠিক তথ্য দিয়ে সমস্ত কিছু পূরণ করন। তাহলে দ্বিতীয় ধাপে চলে যাওয়া যাক।

ধাপ-২ঃ ব্যাক্তিগত তথ্য প্রদান

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন

আপনি পরবর্তিতে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার সামনে উপরে দেয়া একটি ফরম চলে আসবে এবং সঠিক সমস্ত তথ্য দিয়ে আপনাকে ফরমটি পূরণ করতে হবে। আপনি এই ফরমটি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায় পেয়ে যাবেন তাই পূরণ করতে আপনার তেমন বেশী সমস্যা হবেনা বলে আশাবাদী।

এই ফরম পূরণ করার জন্য আপনার নিজের নামের প্রথম ও দ্বিতীয় অংশ আলাদা আলাদা অপশনে বাংলাতে এবং ইংরেজিতে পূরণ করতে হবে। এর পর আপনার জন্ম তারিখ দিতে হবে ও পিতা মাতার কত তম সন্তান সেটি দিয়ে দিতে হবে ও লিঙ্গ অর্থাৎ নারি নাকি পুরুষ সেটি নির্বাচন করতে হবে।

দেশ, বিভাগ, ডাকঘর বাংলা ও ইংরেজিতে, গ্রামের নাম বাংলা ও ইংরেজিতে বাসা ও সড়ক নাম্বার এর জায়গায় বাড়ির হোল্ডিং নাম্বার দিয়ে দিতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে বিভাগ, ডাকঘর, গ্রাম বা মহল্লা দিয়ে দিতে হবে এবং সব শেষে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে দিতে হবে।

এখানে সমস্ত কিছু পূরণ করার পর অবশ্যই রিভিশন দিতে হবে এবং দেখতে হবে কোন প্রকার ভূল হয়েছে কিনা। বিশেষ করে নিজের টিকা কার্ড বা অন্য কোন তথ্য পত্র থাকলে সেটি দেখে দেখে সঠিক নাম দিয়ে দিলে অনেক ভালো হয়। এভাবেই প্রথম পর্যায়ের ফরম পূরণ করতে হবে।

ধাপ-৩ঃ পিতা ও মাতার তথ্য প্রদান

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন

অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে এই দ্বিতীয় ধাপে পিতা এবং মাতার সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে যেমন পিতার ডিজিটাল বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন দিতে হবে এবং সেই সাথে পিচার পুরো নাম বাংলা ও ইংরেজিতে পূরণ করতে হবে আর খেয়াল রাখতে হবে নাম যেন বড় হাতের অক্ষরে হয় এবং সেই সাথে এটিও খেয়াল রাখতে হবে যে, পিতার সকল তথ্য যেন তার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার সব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

পিতার সকল তথ্য পূরণ করার পরে মাতার তথ্য দিয়ে দিতে হবে এক্ষেত্রে একইভাবে মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন নাম্বার প্রথমেই প্রদান করতে হবে এবং সেই সাথে মাতার নাম বাংলা ও ইংরেজিতে পূরণ করতে হবে এবং সেই সাথে খেয়াল রাখতে হবে মাতার সকল তথ্য যেন তার জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী পূরণ করা হয় ও ইংরেজি নাম যেন বড় হাতের অক্ষরে হয়।

বিঃদ্রঃ বর্তমান সময়ে পিতা এবং মাতার জন্মন সনদদের অনলাইন কপি সাবমিট করা বাধ্যতা মূল্যক করা হয়নি কিন্ত পরবর্তিতে করা হতে পারে। এক এক সময় যদিও পিতা এবং মাতার জন্ম সনদের অনলাইন কপি থাকা বাধ্যতা মূল্যক ছিল কিন্তু বর্তমানে সেটি বন্ধ রয়েছে সরকারীভাবে নটিফিকেশন আসলে সেটি আবার চালু করা হতে পারে। তাই যদি পিতা এবং মাতার জন্ম নিনব্ধনের অনলাইন কপি থেকে থাকে তাহলে দিয়ে দেয়াই ভালো।

পিতা-মাতার সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর জাতীয় পরচয় পত্র দেখে একবার হলেও রিভিশন দিন এবং সেই সাথে পরবর্তি বাটনে ক্লিক করে ৪র্থ ধাপ অনুসরণ করুন।

ধাপ-৪ঃ বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা তথ্য প্রদান

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন

আবেদন করার জন্য যখন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা হয়েছে তখন প্রথমেই স্থায়ী ঠিকানা দিয়ে দেয়া হয়েছে এবং সেই ঠিকানাকে নিজে থেকে সঠিকভাবে দেয়ার জন্য এই নতুন অপশন দেয়া হয়েছে এক্ষেত্রে আপনাকে ছবিতে দেয়া অপশন গুলোর মতই কোনটি নয় অপশন টিক করে দিতে হবে এবং পরবর্তিতে ক্লিক করতে হবে এবং ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার সামনে নতুন এটি পেজ ওপেন হবে যেখানে নিজের ঠিকানা প্রদান করতে হবে।

ফরমের প্রথম অংশ সঠিকভাবে পূরণ করুন এবং খেয়াল রাখবেন লিখতে যেন কোন প্রকার ভূল না হয়। ফরমটি সটিকভাবে পূরণ করা শেষ হলে নতুন একটি ফরম চলে আসবে এই ফরমটি আপনার বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা নিশ্চিত করার জন্য।

এখন আপনি আবেদন করার জন্য যে ঠিকানা দিয়েছেন সেটি যদি স্থায়ী ঠিকানা হয়ে থাকে তাহলে ২ং ছবির মত করে টিক দিয়ে দিতে হবে এবং যেখানে লেখা থাকবে স্থানের ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা একই। এক্ষেত্রে একই ঠিকানা নিজে থেকে পূরণ হয়ে যাবে।

এখন তিন নাম্বার ছবটি ফলো করুন, আপনার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা যদি একই হয় তাহলে তাহলে আগের ন্যায় ঠিক মার্ক করুন তাহলে নিজে থেকেই বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা একই হয়ে যাবে আর যদি স্থায়ী এবং বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা আলাদা হয় তাহলে টিক না দিলে আলাদা একটি ফরম পেজ চলে আসবে এবং সেখানে নিজের ঠিকানা পূরণ করে দিতে হবে।

ধাপ-৫ঃ আবেদনকারীর তথ্য প্রদান

এখানে আবেদন কারীর তথ্য বলতে যে ব্যাক্তি জন্ম সনদের জন্য আবেদন করছে তাকে বোঝানো হয়েছে। বিশেষ করে একজন শিশুর জন্ম নিবন্ধন করার জন্য তার পিতা, মাতা, ভাই, বোন আবেদন করে থাকে। এখানে আবেদন কারী যিনি তার অপশনে ঠিক মার্ক করে দিতে হবে।

এছাড়াও নিজে নিজেই নিজের জন্ম নিব্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবে এক্ষেত্রে নিজে হলে নিজ অপশন সিলেক্ট করতে হবে। যদি অন্য কেও হয় তাহলে সেই অপশন সিলেক্ট করার মাধ্যমে ফরম পূরণ করতে হবে।

সিলেক্ট করার পর নিচে দেখতে পাচ্ছেন একটি জায়গা আছে যেখানে মোবাইল নাম্বার প্রদান করতে হবে এবং মোবাইল নাম্বারটি সচল হতে হবে। মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিলে সেই নাম্বারে জন্ম সনদের বিভিন্ন তথ্য আপডেট করা হবে। চাইলে আপনি ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করতে পারবেন এবং যেটি হবে অপশনাল দিলেও হবে না দিলেও হবে।

ধাপ-৫ঃ ডকুমেন্টস আপলোড

এই ধাপটি শেষ করতে পারলেই আপনার আবেদন সমপূর্ণ হয়ে যাবে। এই অপশনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করতে হবে। আগে বলা হয়েছিল যে, আবেদন করার জন্য টিকা কার্ড অথবা মেডিকেল কপি লাগবে।

এই দুটির যেকোনো একটির ছবি তুলে আপলোড করে দিতে হবে অথবা স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করে সেটি আপলোড করতে হবে। এখানে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে এবং সেটি হচ্ছে ফাইল সাইজ ১০০ কিলোবাইটের বেশী হওয়া যাবেনা।

চাইলে একাধিক ফাইল সংযুক্ত করা যাবে এবং এর জন্য সংযোজন বাটনে ক্লিক করে দিতে হবে শুধু মনে রাখতে হবে ফাইল যেন ১০০ কেবি এর চেয়ে বেশী না হয়। এই কাজ গুলো সম্পন্ন করলেই আপনার নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন শেষ হয়ে যাবে।

এখন চাইলে আপনি আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। এটি কোন আবশ্যক বিষয় নয় প্রিন্ট করলেও হবে এবং না করলেও হবে। এখন শুধু আপনাকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

যেভাবে জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করবেন

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার পর সেটি সংগ্রহ করতে হয়। নতুন জন্ম সনদ সংগ্রহ করার জন্য নিজের পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সেটি সংগ্রহ করতে হবে। আপনি আবেদন করার ৫ থেকে ৭ দিন পর গিয়ে সংগ্রহ করবেন। এছাড়াও এর চেয়ে বেশীদিন সময় লাগতে পারে।

আপনি সিটি কর্পোরেশন থেকে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করে থাকলে সেখানে ১৫ দিন পরে গিয়ে কালেক্ট করতে হবে এবং আপনি যদি ১৫ দিনের মধ্যে সংগ্রহ না করেন তাহলে সেটি নিজে থেকেই বাতিল হয়ে যাবে তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সংগ্রহ করে নিতে হবে।

জন্ম নিবন্ধনটি সংগ্রহ করর পর সেটি দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিবের কাছে থেকে স্বাক্ষর ও সিল নিতে হবে এবং সব শেষে পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মেয়র অথবা চেয়ারম্যানের কাছে থেকে সিল এবং স্বাক্ষর নিতে হবে তাহলে সেটি গ্রান্টেড হয়ে যাবে।

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন বাতিল করার পদ্ধতি

চাইলে আবেদন করা জন্ম নিবন্ধন বাতিল করা যায়। জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা কাউন্সিলর অফিসে যেতে হবে এবং Appliction ID দিয়ে বাতিলের জন্য অনুরোধ করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার পর সেটি যদি অনুমোদিত না হয় তাহলে ১৫ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই বাতিল হয়ে যায়। আবেদন করার পর যদি কোন প্রকার ভূল হয়ে যায় তাহলে সেটি বাতিল করার জন্য নির্বাচন কমিশনে যেতে হবে এবং বাতিলের জন্য আবেদন করতে হবে।

আবেদন পত্র বাতিল করার পর সেটি ১৫ দিন পর পূনরায় ফরম পূরণ করার মাধ্যমে নতুন করে আবেদন করা যাবে। যদি অফিসে গিয়ে আবেদন করতে না চান তাহলে ১৫ দিনের মধ্যে সেটি কালেক্ট না করলে নিজে থেকে বাতিল হয়ে যাবে এক্ষেত্রে ১৫ দিন পর আবার নতুন করে আবেদন করা যাবে।

জন্ম তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন

আবেদন পদ্ধতি

  • তথ্য সংশোধন করার জন্য অনলাইন থেকে আবেদন করতে হবে
  • আবেদন করার জন্য একটি ফরম আসবে সেটি সঠিকভাবে পূরণ করে সাক্ষর করতে হবে

নিম্নলিখিত কাগজপত্রাদি জমা দিতে হবে

  • আবেদন কৃত ফর্মে সাক্ষর করা একটি কপি লাগবে
  • আবেদন কারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে যেটি সদ্য তোলা এবং রঙ্গিং প্রিন্ট হতে হবে
  • পাসপোর্টের কপি জমা দিতে হবে ( যদি থাকে )
  • আরও কিছু কাগজ পত্র প্রয়োজন হতে পারে

অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের লিংক

ওয়েবসাইট লিংকঃ https://bdris.gov.bd/br/correction

একটু শিশু জন্ম গ্রহন করার পর তার বয়স যখন ০ থেকে ৪৫ দিন বয়স হয় এর মধ্যেই নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা যায়। বয়স যখন ৪৬ দিন হয়ে যায় এবং সেটি ৫ বছর পর্যন্ত হয় তাহলে বিলম্ব করার জন্য বাংলাদেশের জন্য ২৫ টাকা এবং বিদেশের জন্য ১ ডলার প্রদান করতে হয়।

বয়স যদি ৫ বছর পার হয়ে যায় তাহলে বাংলাদেশ থেকে ৫০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে এবং বিদেশ থেকে করলে ১ ডলার প্রদান করতে হবে। আর যদি জন্ম নিবন্ধন ভূল সংশোধন করতে চান তাহলে সংশোধন করার জন্য বাংলাদেশ থেকে ১০০ টাকা প্রদান করতে হবে এবং বিদেশ থেকে করলে ১ ডলার প্রদান করতে হবে।

যেহেতু এটি একটি সরকারী কাজ তাই প্রতিটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট একটি পরিমাণ ফি প্রদান করতে হয়। এটি সকলের জন্য প্রযোজ্য চাইলেও কেও এটি ফ্রিতে করতে পারবেনা। যেমন বাংলা এবং ইংরেজিতে সনদের নকল তোলার জন্য বাংলাদেশ থেকে ৫০ টাকা এবং সেই সাথে বিদেশ থেকে আবেদন করলে অবশ্যই ১ ডলার প্রদান করতে হবে।

নিচে টেবিল আকারে ফি এর পরিমাণ উল্লেখ করা আছে দেখেনিন এবং একই পরিমাণ ফি প্রদান করুন।

জন্ম নিবন্ধন ফি এর পরিমাণ

বয়সনিবন্ধন ফি
০ থেকে ৪৫দিনফ্রি
৪৬ দিন থেকে ৫ বছর২৫ টাকা
৫ বছরের বেশি হলে৫০ টাকা

          বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হার অনুযায়ী

শেয়ার করুন

নির্ঝর ফারুক

প্রযুক্তি প্রেমী মানুষের মধ্যে আমিও একজন। ছেলেবেলা থেকেই প্রযুক্তির সাথে জড়িয়ে রয়েছি এবং অনেক কিছু শিখেছি ও এখনো শিখছি। যে বিষয় গুলো জানি সেই বিষয় গুলো নিয়েই মূলত এই ওয়েবসাইটে লেখালেখি করি। টেকজোন বাংলার একমাত্র সত্ত্বাধিকারী আমি নির্ঝর ফারুক সক্রিয় থাকবো আপনার সাথে ইনশাল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *