বিজনেসব্লগ পোস্ট

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম ২০২৩

ফেসবুক ব্যবহার করার সময় আমরা প্রতিনিয়ত কোন না কোন পন্যের অ্যাড দেখে থাকি এবং নিজের পছন্দ হলে সেটি অর্ডার দিয়ে থাকি। এটি শুধু মাত্র আমার আপনার জন্য নয় সবার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। এগুলো দেখার পর অনেকের ইচ্ছে হয় ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা শুরু করার। কিন্তু ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম রয়েছে আর সেই নিয়ম গুলো না জানার ফলে অনেকের ব্যবসা করা হয়ে ওঠেনা।

এমন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় কারণ যে যাই করুক সেটি সম্পর্কে তার পূর্ব ধারণা অর্জন করে নিতে হয়। কি সমস্ত প্রসেস তাকে অবলম্বন করতে হবে সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে জেনে নিতে হয়।

না জেনেই যদি কেও কোন কিছু করার ইচ্ছা পোষণ করে কিছুদিন পর আর তা করা হয়না বা শুরু করলে বেশী দূর এগিয়ে যেতে পারেনা। ঠিক ফেসবুক ব্যবসা একি রকম। আপনি যদি না জেনে না বুঝেই ফেসবুকে ব্যবসা শুরু করে দিতে চান সেটি হবে বোকামি।

আপনি যেহেতু গুগলে সার্চ করছেন এবং জানতে চাচ্ছেন কিভাবে ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা শুরু করা যায়? এর মানে আপনি ব্যবসা করতে সক্ষম।

আপনার শুধু দরকার হবে কিছু ব্যবসার আইডিয়া এবং ফেসবুকে ব্যবসা করার সমস্ত প্রসেস ও নিয়মাবলি। আপনি হয়ত অনেক আর্টিকেল পড়ে থাকবেন এবং অনেক কিছু জেনে থাকবেন। কিন্তু এই আর্টিকেল হবে অন্যদের চাইতে আলাদা কারণ ফেসবুক ব্যবসার নিয়ম থেকে শুরু করে আপনি কোন কোন পন্য দিয়ে ব্যবসা শুরু করলে খুব তাড়াতাড়ি সফল হতে পারবেন সব কিছুই বিস্তারিতভাবে জানিয়ে দেয়া হবে।

তাই আপনার কাছে একটি চাওয়া একদম ভুমিকা থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। হতেও পারে এই আর্টিকেল থেকে সমস্ত কিছু জেনে নিয়ে আপনি অতি তাড়াতাড়ি সফল হয়ে গেলেন।

তাহলে আর ভুমিকা না দিয়ে শুরু করা যাক ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম ,

আর্টিকেল সূচনা

ফেসবুক ব্যবসা কি বা কাকে বলে?

দেখুন বাস্তবিক জীবনে যে সমস্ত ব্যবসা রয়েছে সমস্ত ব্যবসার আলাদা আলদা নাম রয়েছে এবং ধরণ রয়েছে। অনলাইনের ক্ষেত্রে তার বিপরীত কিছু নয়।

আপনি হয়ত অনলাইন ব্যবসা হিসাবে ই-কমার্স ব্যবসার কথা শুনে থাকবেন এবং ভেবে থাকবেন ফেসবুকে যে ব্যবসা করা হয় সেটিও মনে হয় ই-কমার্স ব্যবসা। যদি এমন ভেবে থাকেন তাহলে আমি বলবো আপনার ভাবনা নিতান্তই ভূল।

ই-কমার্স ব্যবসা করার জন্য ব্যবহার করা হয় ওয়েবসাইট আর ফেসবুকে ব্যবসা করার জন্য ব্যবহার হয় ফেসবুক প্রফাইল, গ্রুপ আর বিশেষ করে ফেসবুক পেজ। আর যেটি আপনার জানা থাকা অধিক দরকার সেটি হচ্ছে ফেসবুক ব্যবহার করে যে ব্যবসা করা হয় সেটিকে বলা হয় ফেসবুক কমার্স।

অর্থাৎ ফেসবুক ব্যবসা। ই-কমার্স ব্যবসার মত প্রায় একই ক্যাটাগরিতে ব্যবসা করতে হয়। যেমন আপনি যদি কোন অ্যাপ বা ওয়েবসাইট থেকে কোন একটি পন্য অর্ডার করেন সেখানে আপনার সমস্ত তথ্য যোগ করে দিতে হয় এবং ডেলিভারি কনফার্ম করতে হয় তারপর ডেলিভারি ম্যান সেই পন্য আপনার হাতে দিয়ে যায়।

কিন্তু ফেসবুকের ক্ষেত্রে সেটি একদম আলাদা। এখানে যারা পন্য অর্ডার করে তারা মূলত মেসেঞ্জারে তাদের তথ্য দিতে হয় এবং আপনাকে ম্যানুয়ালি সমস্ত কিছু করে নিতে হয়।

এখানে একটি পজিটিভ দিক রয়েছে, যেমন ই-কমার্স ওয়েবসাইটের পন্য ফেসবুকে প্রচার করে বিক্রি করা যায় ঠিক তেমনি যখন ফেসবুক কমার্সের পেজ অনেক বেশী পপুলার হয়ে যায় তখন চাইলে ই-কমার্সে সিফট হওয়া যায়।

শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। আপনি হয়ত বিষয় গুলো নিয়ে একটু চিন্তিত হতে পারেন! আমি বলছি আপনার চিন্তা করার কোন দরকার নেই কারণ আজকের এই আর্টিকেলে সমস্ত তথ্য ধাপে ধাপে আপনাকে বুঝিয়ে দেয়া হবে।

কারণ এই ওয়েবসাইটে কোন প্রকার গল্প বা আপনার উপকার হবেনা এমন কোন তথ্য প্রকাশ করা হয়না। তাই জানার জন্য শুধু আপনাকে ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম ধৈর্য সহকারে পড়তে হবে। যদি সময় নিয়ে না পড়েন তখন কিন্তু নিজেকেই দোষ দিতে হবে।

যদি ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করার তিব্র ইচ্ছা থাকে তাহলে একটি নোট খাতা নিয়ে বসুন অথবা এই পেজের লিংকটি কপি করে কোথাও সেভ করে রাখুন কারণ আমি যে সমস্ত তথ্য আপনাকে দিবো সেটি হয়ত অন্য কারো কাছেন নাও পেতে পারেন।

ফেসবুক কমার্স VS ই-কমার্স

প্রথমেই ফেসবুক এবং ই-কমার্স দুটির মূল কনসেপ্ট বর্ণনা করার চেষ্টা করি।

দেখুন ফেসবুক হচ্ছে একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেখানে আগে থেকেই লাখ লাখ মানুষ যুক্ত রয়েছে আর সেই সাথে আপনার প্রফাইলের ফ্রেন্ডলিস্টে হয়ত অনেক মানুষ রয়েছে যাদের আমরা ফেসবুক ফ্রেন্ড হিসাবে চিনে থাকি।

এক্ষেত্রে হতে পারে নিজের কাছের কেও অথবা দূরের পরিচিত বা অপরিচিত। কিন্তু এদিকে ই-কমার্স হচ্ছে একদম আলদা এবং শুন্য একটি মাধ্যম।

ফেসবুকে ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি ফেসবুক পেজের এবং ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার জন্য দরকার হবে একটি ওয়েবসাইটের। এখন পেজ এবং ওয়েবসাইটের মধ্যে যে মূল পার্থক্য রয়েছে সেটি হচ্ছে আপনার ফেসবুক পেজ তৈরি করার পর ইনভাইট দিলে শেয়ার দিলে অতি তাড়াতাড়ি মানুষ গ্রহন করে নিবে।

কিন্তু এদিকে ই-কমার্স ওয়েবসাইট মানুষের কাছে পৌঁছতে ফেসবুক বা গুগলে প্রচার চালাতে হবে আর যাকে আমরা স্পন্সর অ্যাড নামে চিনে থাকি। আপনি একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে সেখানে পন্য আপলোড করে নিজের প্রফাইলে শেয়ার দিলেও বিক্রি হওয়ার অনেক সম্ভাবনা থেকে যায়।

কিন্তু সম্পূর্ন নতুন একটি ওয়েবসাইট যদি প্রচার চালানো হয় তখন মানুষ সেটিকে গ্রহন করতে চায়না বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতে। কারণ ইতোমধ্যে অনেক জালিয়াতি হয়েছে আমাদের দেশে।

আপনি যখন ফেসবুক পেজে ব্যবহার করে ব্যবসা শুরু করবেন এবং ধীরে ধীরে মানুষের কাছে ট্রাস্ট পেতে থাকবেন এবং আপনার পেজ পরিচিতি বেশী পেতে থাকবে এমনকি অনেকেই শেয়ারও করবে যার ফলে সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।

যখন আপনার পেজ পপুলার হবে তখন আপনি সেই পেজের নামে একটি ই-কমার্স শপ তৈরি করে নিতে পারবেন এবং সেই সাথে অতি তাড়াতাড়ি আপনার গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন।

কারণ আপনি যখন আপনার ফেসবুক কমার্স পেজে আপনার ই-কমারস ওয়েবসাইট শেয়ার করবেন এবং তাদের কাছে অর্থাৎ গ্রাহকদের কাছে আপনি আপনার শপ রিভিউ করবেন তখন আপনাকে আর চিন্তা করতে হবেনা নিজে থেকেই মানুষ আপনার ই-কমার্স শপ থেকে পন্য ক্রয় করবে।

দেখুন ই-কমার্স হচ্ছে একদম আলাদা একটি সেক্টর তাই সেই বিষয় নিয়ে আর কথা না বলি কারণ আগে থেকে ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম নিয়ে সমস্ত কিছুই ডিটেইলস বর্ণনা করে হয়েছে আপনি চাইলে সেটি দেখতে পারেন।

কথা বলছিলাম ফেসবুক ও ই-কমার্স নিয়ে, আপনি ফেসবুকে ব্যবসা শুরু করলে অতি তাড়াতাড়ি ফল পাবেন এবং পরবর্তিতে ই-কমার্স শপ সেটাপ করতে পারবেন আর যদি ই-কমার্স শুরু করেন সেই ফেসবুক আপনাকে ব্যবহার করতে হবে মানুষের কাছে পরিচিতি পেতে।

এই ছিল ফেসবুক এবং ই-কমার্স ব্যবসার মূল পার্থক্য। এখন আমরা ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম এর মূল টপিকে ফিরে যায়,

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম পদক্ষেপ-১

আপনি যাই করুণ সেটি যদি রুলস এবং রেগুলেশন মেনে না করেন অতি তাড়াতাড়ি সেটি নিয়ে ঝামেলার মধ্যে পরতে হয়। ঠিক ফেসবুকে ব্যবহার করার বিষয়টি অনেকটা তেমনি।

তাই আপনাকে ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম মেনেই আপনাকে কাজ করতে হবে কারণ নিয়মের বাইরে কোন কিছু নয়। আপনি যদি মনে করেন ফেসবুকে ব্যবসা করবো সেখানে হয়ত নিয়ম ফলো না করলে কোন প্রকার সমস্যা হবেনা।

আসলে বিষয়টি তেমন নয় আপনাকে দেশের এবং ফেসবুকের নিয়ম মেনেই কাজ করতে হবে। তাহলে এখন যেহেতু মূল বিষয় নিয়ে কথা চলছে তাই বিষয় গুলো নোট করে রাখার চেষ্টা করবেন।

সরকারি নিয়ম অনুসরণ

ব্যবসা করতে হলে দেশের সরকার কর্তিক কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে সেগুলো ফলো করেই কাজ করতে হবে। আর যদি নিয়ম মেনে কাজ না করা হয় দেখা যাবে প্রথম দিকে কোন সমস্যা নাও তৈরি হতে পারে কিন্তু এক সময় সমস্যার পাদুর্ভাব নিজে নিজেই ঘটবে।

দেখুন ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম নিয়ে সরকার কর্তিক তেমন কোন নীতিমালা নির্ধারন করা নেই কিন্তু ই-কমার্স সম্পর্কে সমস্ত কিছু ঠিক করে দেয়া রয়েছে। আর যদি কেও তার মধ্যে কোন কিছু অমান্য করে তাহলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হয়।

ফেসবুক ব্যবসা এবং ই-কমার্স ব্যবসা যেহেতু একই ক্যাটাগরির তাই এইকই নিয়ম ফলো করে আপনাকে ব্যবসা শুরু করতে হবে। তাহলে চলুন সরকারি নিয়ম গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক,

ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ

ব্যবসা যাই হোক সেটির জন্য সরকার থেকে একটি লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে আর যাকে আমরা ট্রেড লাইসেন্স নামে চিনে থাকি। কথায় আছে, একটি ট্রেডলাইসেন্স তৈরি করা মানে হচ্ছে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক।

যদিও আপনি ফেসবুকে ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন তারপরেও আপনাকে প্রথমেই আপনার ব্যবসায়ের নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স করে নিতে হবে। এর জন্য আপনি ইউনিয়ন বা উপজেলাতে গেলেই খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।

কিন্তু একটি বিষয় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে ব্যবসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্স ক্যাটাগরি আলাদা হয়ে থাকে। তাই আপনি যে ব্যবসা করতে চান সেই বিষয়ের উপরে ট্রেড লাইসেন্স করে নিতে হবে।

ই-টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে হবে

ট্যাক্স আইডিনটিফিকেশন নাম্বার কে E-Tin বলা হয়ে থাকে। আমাদের আয়ের কিছু পরিমাণ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করতে হয় আর যদি টিন সার্টিফিকেট না থাকে তাহলে কোনভাবেই সেই ট্যাক্সের টাকা জমা দেয়া সম্ভব হয়না।

আপনি যদি অধিক টাকা ইনকাম করেন এবং তা থেকে যদি ভ্যাট প্রদান না করেন তাহলে আপনার টাকা অবৈধ বলে গন্য করা হবে। আপনাকে এটি ব্যবসা শুরু করার সাথে সাথে করতে হবে বিষয়টি তেমন নয়। কারণ ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার জন্য এটি বাধ্যতা মূলক কিন্তু ফেসবুক কমার্সে নয়।

যখন দেখতে পাবেন আপনার অনেক টাকা ইনকাম শুরু হয়ে গিয়েছে তখন অনলাইন থেকে নিজে নিজে টিন সার্টিফিকেট তৈরি করে নিলেও হয়ে যাবে। এটি একদম সহজ একটি প্রসেস। ভিডিও যুক্ত করে দিবো দেখে নিতে পারেন।

আর মনে রাখবেন আপনি যদি সরকারকে ভ্যাট বা ট্যাক্স প্রদার না করেন তাহলে সরকার আপনার সব টাকা নিয়ে নিতে পারে এবং জেল জরিমানা করার এক্তিয়ার রাখে। তাই টিন সার্টিফিকেট বিষয়টি আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে।

টিন সার্টিফিকেট তৈরি করার জন্য আপনাকে সরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে এবং সমস্ত তথ্য দিয়ে দিতে হবে। তাহলেই কাজ হয়ে যাবে। তাছাড়াও ভিডিও দেখে নিতে পারেন।

পণ্যের লাইসেন্স

ব্যবসা করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে এটি চিরন্তন সত্য আর যদি আপনি মাল্টি ক্যাটাগরির পন্য নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে প্রতিটি পন্যের জন্য আলাদা আলদা লাইসেন্স করে নিতে হবে।

আপনি যদি লাইসেন্স নাও করেন ব্যবসা শুরুর কোন প্রকার সমস্যা হবেনা কিন্তু আমাদের দেশের ফেসবুক কমার্স পেজ গুলো সরকারের দপ্তরে সব সময় মনিটর করা হয়। যদি এমন হয় আপনি লাইসেন্স ছাড়াই বিভিন্ন ধরণের পন্য বিক্রি করছেন তাহলে আপনার জেল জরিমানা হতে পারে।

তাই আপনার উচিৎ হবে প্রতিটি পন্যের জন্য আলাদা আলাদা লাইসেন্স তৈরি করে নেয়। যেমন আপনি যদি ঔষধ জাতীয় পন্য বিক্রি করেন তাহলে আপনাকে ড্রাগ লাইসেন্স করতে হবে আর যদি বিস্ফোরক জাতীয় পন্যের ব্যবসা করেন তাহলে বিস্ফোরক লাইসেন্স করতে হবে।

এমন হতে পারে আপনি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে ব্যবসা করছেন কিন্তু কোন প্রকার লাইসেন্স নেই এবং হটাৎ করে একদিন দুর্ঘটা ঘটে গেলো তাহলে কি হবে? আপনাকে জরিমানা দেয়ার পাশাপাশি জেলে যেতে হবে।

তাই লাইসেন্স করাটা অনেক বেশী জরুরী। আপনি টি-শার্ট বা পোশাক জাতীয় পন্য বিক্রি করার জন্য একটি লাইসেন্স নিলেই হয়ে যাবে। প্রসাদনির ক্ষেত্রে একই রকম।

তাই প্রথমে পন্য বেইজ লাইসেন্স করার চেষ্টা করুণ এবং নিজেকে নিরাপদে রাখুন।

নেশাদার ও অবৈধ পন্য বিক্রি

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম গুলোর মধ্যে এটি অতি মারাত্মক একটি বিষয়। কোনোভাবেই নেশাদার এবং অবৈধ কোন পন্য বিক্রি করা যাবেনা। বাংলাদেশে এখন অব্ধি কোন প্রকার নেশাদার পণ্যের লাইসেন্স দেয়া হয়নি তাই আপনি বেশী টাকা ইনকামের আশ্য কোনভাবেই নেশাদার পন্য বিক্রি করতে যাবেননা।

সেই সাথে যে সমস্ত পন্য বাংলাদেশে সম্পূর্ন অবৈধ সে সমস্ত পন্য বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেমন বাংলাদেশে সেক্স ডল ব্যবহার এবং বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

কিছুদিন আগে দেখলাম কয়েকজন মিলে বাংলাদেশ এই পণ্যের ব্যবসা করছে ফেসবুক ব্যবহার করার মাধ্যমে এবং তাদেরকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে। তাই আপনি সমস্ত প্রকার অবৈধ পন্য বিক্রি করা থেকে বিরত থাকবেন।

অনেকেই রয়েছেন ফেসবুক ব্যবহার করে বিটকয়েনের ব্যবসা করে যা একদম অবৈধ। তাই আপনাকে বৈধ পন্য গুলোকে বেঁছে নিতে হবে।

তাছাড়াও টাকার বিনিময়ে যে সমস্ত পন্য বিক্রি হয়ে থাকে সেগুলো কোনোভাবেই বিক্রি করা যাবেনা। যেমন গুগল প্লে কার্ড, কোন প্রকার ভুয়া ক্যাশ ভাউচার ইত্যাদি। কারণ এগুলো সরকারিভাবে লাইসেন্স প্রাপ্ত নয়।

পণ্যের তথ্য প্রদান

আপনাকে অবশ্যই পন্য সম্পর্কে সমস্ত তথ্য দিয়ে দিতে হবে। যেমন পণ্যের সাইজ, দাম, আপনি কত দ্বীনের মধ্যে ডেলিভারি দিতে পারবেন সমস্ত কিছু। এটি অবশ্যই একজন ব্যবসায়ীর জন্য প্লাস পয়েন্ট।

কারণ পন্য সম্পর্কে যদি তথ্য দেয়া থাকে সেই পন্য মানুষ বেশী কিনে থাকে। তাই আপনার উচিৎ হবে পন্য সম্পর্কে সমস্ত তথ্য উল্লেখ করে দেয়া।

সেই সাথে আপনি কিভাবে পন্য ডেলিভারি দিবেন এবং কত দিন লাগতে পারে সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে দেয়ার চেষ্টা করবেন। এতে আপনার পেজের এবং আপনার প্রতি মানুষের ট্রাস্ট অনেক অংশে বেড়ে যাবে।

মনে রাখবেন কেও আপনাকে চিনেনা শুধু আপনার পেজ এবং পন্য কোয়ালিটি চিনে। আর হ্যা ক্যাশ অন ডেলিভারি রাখতে হবে।

এই সমস্ত বিষয় অবশ্যই আপনাকে মাথায় রেখে ফেসবুকে ব্যবসা শুরু করতে হবে নতুবা আপনি নিজেই বিপদের মধ্যে পরতে পারেন।

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম পদক্ষেপ-২

ইতোমধ্যে ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম গুলোর মধ্যে সরকারি কি কি নির্দেশ মানতে হবে সে বিষয় নিয়ে আপনি জেনে গিয়েছেন। তাই এখন চলুন নিজদের কি কি কাজ করতে হবে একটি এফ কমার্স ব্যবসা শুরু করার জন্য সে সম্পর্কে স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করা যাক।

আপনি অবশ্যই বিষয় গুলো নোট করে রাখার চেষ্টা করুণ অথবা এই পেজের লিংকটি সেভ করে রাখুন তাহলে যখনই আপনি কোন একটি বিষয় ভুলে যাবেন সাথে সাথে দেখে মনে করতে পারবেন।

চলুন শুরু করি পদক্ষেপ গুলোঃ

ফেসবুক প্রফাইল তৈরি

আমাদের কম বেশী সবারই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং সেই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের ছবি অথবা ভিডিও শেয়ার করে থাকি এবং সেই ছবি বা ভিডিওতে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার হয়ে থাকে।

আর আপনার যদি ফেসবুক প্রফাইল বা আক্যাউন্ট না থাকে আপনি কোনোভাবেই এ সমস্ত কাজ গুল করতে পারবেননা। তাই প্রথমেই আপনার একটি ফেসবুক প্রফাইল থাকতে হবে।

অনেকেই রয়েছেন নিজেকে হাইড বা লুকিয়ে রাখার জন্য ফেক প্রফাইল ব্যবহার করে। আপনি যদি এমন করে থাকেন তাহলে এখনি প্রফাইল এডিট করে নিজের সমস্ত কিছু যুক্ত করেনিন অথবা নতুন একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুণ।

মনে রাখবেন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট না থাকলে আপনি কোনোভাবেই ফেসবুকে ব্যবসা করতে পারবেননা তাই নিজের একটি প্রফেশনাল প্রফাইল তৈরি করুণ ও সাথে সাথে পরিচিত মানুষদেরকে ফ্রেন্ডলিস্টে যুক্ত করুণ।

ফেসবুক পেজ তৈরি

ফেসবুকে ব্যবসা শুরু করার জন্য একটি জায়গা দরকার হয় আর সেই জায়গা হচ্ছে ফেসবুক পেজ। আপনি যে সমস্ত পন্য ফেসবুকে দেখে থাকবেন সবাই ফেসবুক পেজে আপলোড করে থাকে এবং সেইখান থেকেই মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে থাকে।

ফেসবুক পেজ এবং ফেসবুক প্রফাইল দুটি সম্পূর্ন আলাদা বিষয় কিন্তু আপনার যদি ফেসবুকে প্রফাইল বা অ্যাকাউন্ট না থাকে আপনি কোনোভাবেই ফেসবুকে পেজ তৈরি করতে পারবেননা তাই আপনার অ্যাকাউন্ট থাকা জরুরী।

আর আপনাকে যে পেজ খুলতে হবে সেটি হবে ফেসবুক বিজনেস পেজ। আপনি যদি সাধারণ একটি পেজ খুলে ব্যবসা করতে চান তারপরেও হবে কিন্তু আপনি অনেক গুল অপশন পাবেননা যার ফলে অনেক অপরচুনিটি হারিয়ে ফেলবেন।

তাই একটি বিজনেস পেজ খুলতে হবে। বিজনেস পেজ থাকলে সেখানে একদম ফ্রিতে একটি ফেসবুক কমার্স শপ তৈরি করা যায় এবং সেই শপে নিজের পন্য আপলোড করা যায়। এটি হয়ে থাকে একদম একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের পেজের মতই।

তাই আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজ থাকা অনেক বেশী আবশ্যকীয়। আপনি নিজে নিজেই খুব সহজেই একটি বিজনেস পেজ খুলে ফেলতে পারবেন কারণ এটি তেমন কোন কঠিন বিষয় নয়।

পেজের নাম নির্বাচন

একটি বিজনেস পেজ সেটাপ করার পূর্বে সেই পেজের জন্য সঠিক একটি নাম বেঁছে নিতে হবে। এর জন্য আপনাকে একটু চিন্তাভাবনা করতে হবে কারণ ঐ পেজের যে নাম হবে সেটি আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নাম।

চাইলেই যেকোনো নাম ব্যবহার করলে হবেনা। নামটি এমন হতে হবে যেন সুন্দর ও সাবলীল হয় এবং মানুষ একবার দেখলেই চিনতে পারে এবং নামটি মনে রাখতে পারে।

আমি নিজে এমন অনেক পেজ দেখেছি যাদের নাম এত বড় যে মনে রাখা অনেক বেশী কষ্টকর যার কারণে সেই পেজে একবার ভিজিট করে আর কোনোদিন যাওয়া হয়নি।

তাই আপনি প্রথমেই একটি নাম নির্বাচন করুণ এবং সেই নাম ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন আপনার ব্যবসা যখন পপুলার হবে তখন আপনার দেয়া নাম ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করা লাগতে পারে।

তাই অনেক বড় নাম ব্যবহার থেকে একদম বিরত থাকতে হবে। যেমন রয়েছে দারাজ, অ্যামাজন, আলিবাবা মত প্রতিষ্ঠান। তারা এমনভাবে নাম গুলো ব্যবহার করেছে যে, মানুষ একবার দেখলেই মনে রাখতে পারে। তাই আপনারও তাদের মত করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।

পেজের নাম পরিবর্তন

পেজের নাম একবার দেয়ার পর যখন পপুলার হয়ে যাবে তখন যদি নতুন কোন নাম পছন্দ হয় এবং আপনি যদি পেজের নাম পরিবর্তন করেন তাহলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

কারণ আপনার পেজের নাম মানুষের মুখে মুখে যখন থাকবে তখন যদি হটাৎ করেই নাম পরিবর্তন করে দেন তখন মানুষের মধ্যে একটি ব্যাড ইফেক্ট পড়বে। কারণ অনেকেই ভেবে নিবে পেজ বিক্রি কয়ে দেয়া হয়েছে অতবা পেজ হ্যাক হয়ে গিয়েছে তাই এখান থেকে আর পন্য কেনা যাবেনা।

তাছাড়াও ফেসবুক থেকে আপনার পেজ ডাউন করে দিবে যার ফলে মানুষের কাছে পৌছবেনা।

ধরুন আপনার যে ডাক নাম রয়েছে সেটি সম্পর্কে আপনার গ্রামের বা মহল্লহার মানুষ সবাই জানে কিন্তু আপনি অন্য কোথাও অন্য নাম ব্যবহার করেন এবং সেই জায়গা থেকে আপনার কাছে কেও একজন আসলো এবং আপনার নতুন বা অপরিচিত নাম বলে এলাকার কাওকে জিজ্ঞেস করলো।

তাহলে বিষয়টি কি হবে? আপনাকে ঐ নামে কেও চিনবে না কারণ আপনি নাম পরিবর্তন করে নিয়েছেন। ঠিক ফেসবুকের পেজ বা ব্যবসার নাম একই রকম। এই জন্য কোনভাবেই পেজের নাম পরিবর্তন করা যাবেনা।

পেজের প্রফাইল ও কভার ফটো

একটি পেজের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করতে হলে প্রথমেই আপনার কভার ফটোর দিকে অনেক বেশী ফোকাস দিতে হবে। কারণ মানুষ যখন আপনার পেইজে প্রবেশ করবে তখন একদম উপরে একটি কভার ফটো দেখতে পাবে।

যদি আপনার দেয়া কভার ফটোটি দেখতে অনেক বেশী আকর্ষণীয় হয় ক্রেতাদের আগ্রহ অনেক বেড়ে যায়। তাই আপনাকে ৮২০*৩১২ পিক্সেলের কভার ফটো তৈরি করে আপলোড করতে হবে।

আপনি ক্যানভা ব্যবহার করে নিজে নিজেই একটি সুন্দর আও আকর্ষণীয় কভার ফটো ব্যবহার করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে ক্যানভা অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে এবং ইন্সটল করতে হবে ও তারপর ওপেন করে সার্চ করতে হবে ফেসবুক কভার।

তারপর অনেক গুল টেমপ্লেট আসবে আপনার যেটি পছন্দ হয় সেটি নিজের মত করে ডিজাইন করে নিতে পারবেন। আর যদি আপনার ক্যানভা সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখতে পারবেন।

কভার ফটো তৈরি হয়ে গেলে ডাউনলোড করে ফেসবুক পেজে আপলোড করতে হবে।

তারপর একটি লোগো আপলোড করে দিতে হবে। যেহেতু আপনি ফেসবুকে নিজের একটি ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন তাই আপনার উচিৎ হবে একজন গ্রাফিক ডিজানার দিয়ে লোগো তৈরি করে নেয়া।

আপনি ফেসবুক থেকে সার্চ করলে অনেক পেজ পেয়া যাবেন যারা অনলাইনেই লোগো তৈরি করে থাকে। তাদের দিয়ে একটি লোগো তৈরি করে প্রফাইল ছবি আপলোড করে দিবেন।

পেইজের অ্যাবাউট সেকশন আপডেট

দেখুন প্রতিটি বিষয়ের একটি বা যেকোনো কিছুর একটি পরিচিতি দরকার রয়েছে। আপনি যদি আপনার পেইজের পরিচিতি মানুষের কাছে তুলে না ধরণের তাহলে মানুষতো আপনার পেইজ সম্পর্কে এবং পন্য সম্পর্কে জানবেনা তাই আপনাকে আপনার ব্যবসা এবং পন্য ও বিভিন্ন সার্ভিস সম্পর্কে লিখে দিতে হবে।

যারা আপনার পেইজে আসবে আপনার পেইজের এবাউট সেকশন দেখবে। তাই আপনার এবাউট সেকশন সুন্দর করে লিখতে হবে।

ফেসবুক মার্কেট প্লেস -ফেসবুক কমার্স ম্যানেজার ও শপ তৈরি

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম
ফেসবুক মার্কেট প্লেস

আপনার পেজ তৈরি হয়ে যাওয়ার পর ফেসবুক মার্কেট প্লেস ব্যবহার করার মাধ্যমে একটি শপ তৈরি বা সেটাপ করে নিতে হবে যেটি পাবেন আপনি ফেসবুক কমার্স ম্যানেজারে।

সেখানে প্রতিনিয়ত আপনার পন্য গুলো আপডেট করতে হবে। একবার আপনার শপ ফেসবুকের ডিসকভার পেজে চলে আসলে সেখান থেকেই লাখ টাকার সেল করতে পারবেন।

ফেসবুক শপ তৈরি করা পেজের মতই সহজ। চাইলে আপনি ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখে নিতে পারেন কিভাবে একটি ফেসবুক শপ তৈরি করতে হয়। আর এই ফেসবুক পেজকে ফেসবুক কমার্স ম্যানেজারের মধ্যে ইনডেক্স করা রয়েছে।

আপনাকে শপ তৈরি করার করার পর কমার্স ম্যানেজারে পন্য গুল আপলোড করতে হবে। হতে পারে যেকোনো পন্য, ইলেক্টনিক্স, শার্ট, টিশার্ট, ঘড়ি ইত্যাদি।

আপনি এই কমার্স ম্যানেজার বা সপে পন্য আপলোড করার সময় পণ্যের দাম, কি পরিমাণ ছাড় রয়েছে ও সেই সাথে পন্য সম্পর্কে সমস্ত তথ্য যুক্ত করে দিতে পারবেন। তাই আপনার আবশ্যকীয় থাকবে একটি শপ তৈরি করে কমার্স ম্যানেজারের সঠিক ব্যবহার করা।

ফেসবুক গ্রুপ তৈরি

ফেসবুকে গ্রুপ তৈরি করা ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম গুলোর মধ্যে নেই কিন্তু তার পরেও আপনি নিজের সুবিধা এবং প্রচার বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে একটি গ্রুপ খুলেই পারেন।

আপনি চাইলে একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি তৈরি করে নিতে পারেন। এটি তেমন কোন ইসেন্সিয়াল বিষয় নয় কারণ ফেবুকে এক সময় গ্রুপ ব্যবহার করে মানুষ প্রচুর পরিমাণে পন্য বিক্রি করতো।

কিন্তু ফেসবুক আপডেট হওয়ার পর থেকে বিষয় গুল সম্পূর্ন বদলে গিয়েছে। চাইলে আপনার ব্যবহারকারি বা গ্রাহকের কমিউনিটি তৈরি করার উদ্দেশ্যে একটি গ্রুপ তৈরি করতে পারেন।

তাছাড়াও অনেক সময় দেখা যায় গ্রুপে অনেক মেম্বার থাকলে যদি কোন পন্য শেয়ার দেয়া হয় সেখান থেকেও সেল হয়ে থাকে। তাই আপনার উচিৎ হবে একটি গ্রুপ তৈরি করে নেয়া।

নিজের মার্কেটং করার বেস্ট একটি মাধ্যম হচ্ছে গ্রুপ। তাই আপনি চাইলেই একটি গ্রুপ তৈরি করে ফেলতেই পারেন।

সঠিক পন্য নির্বাচন

পেজ সেটাপ করার পরেই আপ নাকে পন্য আপলোড করতে হবে আর এর জন্য আপনাকে অনেক বেশী চিন্তাভাবনা করে দেখে নিতে হবে কোন ধরণের পন্য নির্বাচন করলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি ফেসবুকে ব্যবসা করে সফল হতে পারবেন।

আর আপনি যদি সঠিক পন্য বেঁছে না নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তাহলে সেই ব্যবসাকে বেশীদূর এগিয়ে নিতে পারবেননা। তাই আপনাকে অনেক বেশী রিচার্জ করে দেখতে হবে কোন জাতীয় পন্য মানুষ বেশী ব্যবহার করে এবং ফেসবুকে কোন পন্য গুলো বেশী পপুলার।

পন্য নির্বাচন করার জন্য আপনি ফেসবুকের বভিন্ন পেজ ও শপ গুল ঘুরে দেখত পারেন।

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম
ফেসবুক সপ

আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাপ থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্যের শপ গুলো ঘুরে দেখতে পাবেন। আপনি বিশেষ করে যে শপ গুল প্রথমের দিকে পাবেন সেগুলোতে প্রবেশ করে পণ্যের ছবি গুলো ডাউনলোড করে রাখুন।

পরবর্তিতে আপনি সময় নিয়ে ছবি গুল দেখুন ও চিন্তা করুণ কোন সমস্ত পন্য নিয়ে আপনি কাজ করতে চান। বিশেষ করে পপুলার পন্য উলো নিয়ে কাজ করলে তাড়াতাড়ি সফলতা পাওয়া সম্ভব।

কিন্তু প্রথমেই আপনার অনেক গুল পন্য নিয়ে কাজ করা উচিৎ হবেনা। কারণ আপনি শুধু একটি ক্যাটাগরি নিয়ে কাজ শুরু করে নিজেই অনেক তাড়াতাড়ি পপুলার হয়ে যাবেন।

যেমন আপনি যদি পোশাক সেক্টর নিয়ে কাজ করা শুরু করেন তাহলে ক্যাটাগরি হিসাবে শার্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবী, প্যান্ট, থ্রি পিচ, বোরখা ইত্যাদি, এগুলোর মধ্য থেকে যেকোনো একটি নিয়ে কাজ শুরু করে দিতে পারেন।

যখন আপনি পপুলার হয়ে যাবেন তখন ধীরে ধীরে পন্য বৃদ্ধি করবেন। কিন্তু এখানে যে বিয়সটি খেয়াল রাখতে হবে, শুধু মাত্র একটি ক্যাটাগরি বাছাই করতে হবে নতুবা আপনি বেশী দূর এগোতে পারবেননা।

তাই যদি আপনি পোশাক নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে কোনোভাবেই ইলেক্ট্রনিক্স পন্য নিয়ে কাজ করতে যাওয়া যাবেনা। এক্ষেত্রে ব্যবসা ডাউন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী থাকে।

প্রডাক্ট সোর্সিং

এই বিষয়টি আপানকে আগেই বলে দেয়া উচিৎ ছিল কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ। আপনি যে সমস্ত পন্য সিলেক্ট করবেন সেগুলো কোথা থেকে কিনবেন? কোন জায়গা থেকে কিনলে অধিক কম দামে পাওয়া যাবে? এবং বেশী সুবিধা কথায় পাওয়া যাবে সস্মত কিছুই চিন্তা করতে হবে।

হতে পারে আপনি এমন জায়গা থেকে প্রডাক্ট সোর্স করতে গেলেন যেখানে কুরিয়ার করতে বেশী খরচ প্রদান করতে হয় বা আস্তে সময় বেশী লাগে। তখন কিন্তু জামেলার চেস্টা হতে পারে।

তাই বিষয়টি অনেক বেশী লক্ষ্যনীয়। আপনার উচিৎ হবে পন্য সিলেক্ট করার পরেই ঢাকার মধ্যে পাইকারি দোকান গুল ঘুরে দেখা। হতে পারে আপ নি গুলিস্থান থেকে দেখলেন অথবা অন্য কোথাও।

আপনি ইউটিউবে সার্চ করলেই ঢাকার মধ্যে কোথায় ভালো পোশাক পয়ায়া যায় জানতে পারবেন এবং ঠিকানা জোগাড় করতে পারবেন। চাইলে তাদের সাথে ফনেও কোথা বলতে পারবেন।

এগুলো দেখতে পারেন,

ফেসবুক মার্কেটিং

পেইজে এবং শপে পন্য আপলোড করার পরেই আপনাকে ফোকাস দিতে হবে মার্কেটিং এর দিকে কারণ যত প্রচার আপনার করতে পারবেন আপনার পেইজের রিচ তত বাড়বে আর রিচ বাড়তে থাকলে সেটি নিজে নিজেই মানুষের কাছে গিয়ে পৌঁছবে।

আর যখন মানুষের কাছে যাবে তখন আপনার পেইজ মানুষ চিনবে এবং পন্য অর্ডার করা শুরু করবে। কিন্তু আপনাকে কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যেমন, প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং পোস্টটিকে অনেক বেশী আকর্শণীয় করে ছবি তুলে সেই ছবি এবং সমস্ত তথ্য সহ আপলোড করতে হবে ও পোস্ট করতে হবে।

আপনি যদি শুধু পোস্ট করেই বসে থাকেন কোনোভাবেই আপনার পেইজ মানুষের কাছে পৌঁছবেনা। যেমন আপনি যদি বাড়ি থেকে বের না হন মানুষ কিন্তু আপনাকে দেখবেনা। ঠিক মার্কেটিং বিষয়টি একই রকম আপনি যত বেশী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন তত বেশী বিক্রি করতে পারবেন।

ফেসবুক মার্কেটিং অনেক ডিপ একটি বিষয় কারণ সঠিকভাবে যদি মার্কেটিং করা না হয় তাহলে কোনভাবেই সফল হওয়া সম্ভব নয়। তাই সঠিকভাবে মার্কেটিং শিখে ব্যবসা করতে হবে।

বিশেষ করে ফেসবুক মার্কেটিং দুইভাবে করা যেতে পারে। ফ্রি মার্কেটিং এবং পেইড মার্কেটিং। দুইটির যেকোনো একটি করতেই ফেসবুক মার্কেটিং এর উপরে অনেক বেশী নলেজ থাকতে হবে। আর এর জন্য আপনাকে কিছু ইনভেস্ট করে ফেসবুক মার্কেইং কোর্স করে নিতে হবে।

এর জন্য আপনাকে কোন ট্রেনিং সেন্টারে যেতে হবেনা বাড়িতে বসেই কোর্স কিনে নিয়ে ক্লাস করে ফেসবুক মার্কেটিং শিখে নিতে পারবেন।আপনি যদি মার্কেটিং করতে না পারেন কোনোভাবেই সফল হতে পারবেননা।

ফেসবুক ফ্রি মার্কেটিং

ব্যবসা করার করার জন্য শুধু পন্য আপলোড করে রাখলেই হবেনা সেগুলোকে বিক্রি করতে হবে। বিক্রি না হলে ব্যবসাতো এগিয়ে যেতে পারবেনা তাই সেগুলোর প্রচার করতে হবে।

  • আপনি আপনার পোস্ট নিজের প্রফাইলে শেয়ার করুণ
  • বিভন্ন গ্রুপে শেয়ার দিতে হবে বিশেষ করে যে সমস্ত গ্রুপে বেচা কেনা করা হয়
  • প্রতিদিন পোস্ট করতে হবে। প্রথম দিকে প্রতিদিন মিনিমাম ৫ টি করে পোস্ট করতে হবে এবং পপুলার হলে একটি দুটি দিলেই হবে।
  • মাঝে মধ্যে ভাই কিছু শেয়ার দিতে হবে
  • আপনাকে ফেসবুক লাইভে এসে আপনার পন্য গুল দেখাতে হবে ও লাইভ অন্য সব গ্রুপে শেয়ার করতে হবে।

এই সমস্ত বিষয় গুল অনুসরণ করলে কিছু পরিমাণ মানুষের কাছে আপনি পৌঁছতে পারবেন। কিন্তু যদি কোর্স থেকে সমস্ত কিছু এবং বিভিন্ন টিপস জানতে পারেন ফ্রি মার্কেটিং করেই অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবেন।

পেইড মার্কেটিং

পিইড মার্কেটিং বলতে টাকা খরচ করে মার্কেটিং করাকে বোঝায়। এর জন্য আপনাকে ফেসবুককে টাকা দিতে হবে। আপনি পেইড মার্কেটিং করলে কিছু করতে হবেনা যা করার ফেসবুক নিজেই করবে।

আপনাকে শুধু মোবাইল অথবা কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকতে হবে মেসেজ রিপ্লাই করার জন্য।

পেইড মার্কেটিং হল ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়া। এর জন্য আপানকে যাচাই বাছাই করে, কোন বয়সের কাস্টমার, এরিয়া সমস্ত কিছু সিলেক্ট করতে হয়। এর জন্য অনেক ভালো জ্ঞান থাকতে হয় যেটি নিজেকে শিখে নিতে হবে অথবা অন্য একটি বিজ্ঞাপন কোম্পানি বেঁছে নিতে পারেন।

কিন্তু আমি মনে করিনা নিজের মার্কেটিং অন্য কেও করে দিলে সেটি ভালো ফল দিবে। তাই নিজেই পেইড মার্কেটিং করার চেষ্টা করুণ আর মনে রাখবেন আপনি যখন টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন দিবেন তখন আপনার বিক্রি নিজে থেকেই অনেক বেড়ে যাবে।

এর জন্য আপনি শুধু কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখবেন,

  • যে ছবিটি ব্যবহার করবেন সেটি যেন অনেক পরিষ্কার হয়।
  • পণ্যের দাম ও সমস্ত তথ্য দিয়ে দিতে হবে।
  • ছবিতে এমন কিছু যুক্ত করতে হবে যে কাস্টমার নিজে থেকেই আকৃষ্ট হয়।
  • বিশেষ করে মেসেজিং অপশন আপনাকে রাখতেই হবে।
  • সঠিক মানুষ সিলেক্ট করতে হবে।

তাছাড়াও আপনি ফেসবুক পেজে পোস্ট করে সেটিকে বুস্ট করার মাধ্যম স্পন্সর দিতে পারেন। আমরা ফেসবুক ব্যবহার করার সময় আমাদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে স্পন্সর অ্যাড এসে থাকে।

ঠিক আপনাকেও স্পন্সর অ্যাড দিতে হবে। এতে মানুষের এঙ্গেজমেন্ট বাড়বে ও সেল বেশী হবে।

কাস্টমার রিস্পন্স

ফেসবুকে পোস্ট বুস্ট করার পর থেকেই আপনার কাছে কমেন্ট এবং মেসেজ আসা শুরু করে দিবে। তাই আপনাকে অনেক বেশী এক্টিভ থাকতে হবে ও অতি তাড়াতাড়ি কমেন্ট ও মেসেজের রিপ্লে করতে হবে।

যদি সঠিক সময়ে রিপ্লাই না করেন কাস্টমার আপানকে ট্রাস্ট করতে পারবেনা।

স্প্রেড শিট ব্যবহার

আপনার কাস্টমার যখন অর্ডার করবে তখন তাদের কাছে থেকে সমস্ত ডিটেলইলস নিয়ে নিতে হয়। যেমন নাম, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল এড্রেস, ডেলিভারির ঠিকানা ইত্যাদি।

এই সমস্ত তথ্য আপানকে একটি এক্সেল শিটে লিখে রাখতে হবে। আপনি এর জন্য গুগল ডক ব্যবহার করতে পারবেন সম্পূর্ন ফ্রিতে। এমনকি এটি সারাজীবন সেভ হয়ে থাকবে চাইলে পরবর্তিতে আপনি তাদের ইমেইলে ও ফোন নাম্বারে মেসেজ পাঠিয়ে মার্কেটিং করতে পারবেন।

যদি আপনার গ্রাহকদের তথ্য আপনার ফেসবুক মেসেঞ্জারের মধ্যেই থাকে আপনি সমস্ত কিছু গুলিয়ে ফেলবেন। তাই স্প্রেড শিটের ব্যবহার শিখুন।

ডেলিভারি চার্জ নির্ধারন

আপনি কোন যায়গায় কি পরিমাণ ডেলিভারি চার্জ রাখবেন সেটি জানিয়ে দিতে হবে। প্রথম দিকে আপনি যদি কিছু পন্য ফ্রি ডেলিভারির সুযোগ রাখেন তাহলে বিক্রি হওয়ার পরিমাণ অনেক বেশী হবে।

দ্রুত ডেলিভারি

আপনাকে অবশ্যই দ্রুত পন্য ডেলিভারি সেবা প্রদান করতে হবে। আপনি যদি দেরিতে ডেলিভারি করেন আপনার তাহলে অনেক পন্য ফেরৎ চলে আসবে।

বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশে এই বিষয়টি ফলো করেনা যার ফলে কিছুদিন পরেই ক্রেতা হারিয়ে ফেলে। তাই আপনার উচিৎ হবে দ্রুত ডেলিভারির দিকে ফোকাস দেয়া।

পন্য রিভিউ

আপনি আপনার কাস্টমারদের কাছে পন্য ডেলিভারি দেয়ার পর অনুরোধ জানাবেন তারা যেন কমেন্টে পণ্যের রিভিউ দিয়ে যায়। একটু অনুরোধে আপনার বিক্রি অনেক বেড়ে যাবে।

কারণ যে সমস্ত পেজে পজিটিভ রিভিউ আছে সেই সমস্ত পেজে বিক্রি বেশী হয়ে থাকে।

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম -শেষ কথা

দেখুন শুধু মাত্র ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম জানলেই আপনার সমস্ত কিছু শেষ হয়ে যাবেনা। আপনি যে সমস্ত বিষয় জানলেন সমস্ত বিষয় বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ শুধু প্লান করে বসেই থাকলেই কোন কাজ হয়ে যায়না সেটির বাস্তবায়ন করতে হয়।

আপনি সমস্ত কিছু জানার পর সঠিকভাবে একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। যেকোনো প্রতিকূলতা গ্রহণ করার মত সাহস এবং মানসিকতা থাকাটা অনেক বেশী জরুরী।

যদি নিজেকে শক্ত করে মাঠে নামাতে না পারেন তাহলে বেশী দিন এগোতে পারবেননা।

দেখুন ফেসবুকে প্রতিযোগিতা অনেক বেশী তাই সেখানে যদি টিকে থাকতে হয় সঠিক এবং গুনগত মান যেন ভালো থাকে সেই রকম পন্য ডেলিভারি করতে হবে। যদি বাজে পন্য তাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে থাকেন তারা আপনার পেজে গিয়ে বাজে মন্তব্য করে আসবে যার ফলে আপনি অনেক বেশী কাস্টমার হারিয়ে ফেলতে পারেন।

তাই ভালো এবং সঠিক পন্য ডেলিভারি করুন। অনলাইনে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হলে মানসম্মত পন্য আপনাকে দিতে হবে। অনেকেই কিছু পন্য ভালো পাঠায় আবার কিছু পন্য খারাপ।

যার ফলে প্রথম দিকে সেল পেলেও পরে কোনোভাবেই সেল হয়না। সেই সাথে আপনাকে কাস্টমারদের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। নিজের কথার মাধ্যমে তাদেরকে মুগ্ধ করতে হবে। কাস্টমারদের স্যার বলে ডাকতে হবে।

পরিশেষে বলতে পারি স্টেপ গুলো ফলো করার সাথে সাথে সমস্ত কিছু সঠিকভাবে মেনে চললে আপনি একদিন সফল হবেনই ইনশাল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *