টিপস

মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায় স্টেপ বাই স্টেপ

আমরা কমবেশী প্রায় সবাই এখন এন্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করে থাকি কিন্তু সেই মোবাইলে যে ভাইরাসের আক্রমন হয়ে থাকে সেই বিষয়টি আমাদের মাথায় আসেনা। তাই আজ মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

ভাইরাস এমন একটি বস্তু যা মোবাইল হোক বা কম্পিউটার যদি আক্রমণ করে ফেলে তাহলে সেই মোবাইলে থাকা সমস্ত ডেটা গুলোকে ডিলিট করে দেয় অথবা করাপ্টেড করে দেয়। মানুষের শরীরে যদি ভাইরাসের আক্রমণ ঘটে তাহলে কিন্তু সেই মানুষ খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পরে। ঠিক মোবাইলে ভাইরাস আক্রমণ হলেও একই অবস্থার তৈরি হয়।

এই ভাইরাস এমন ভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে যে, খুব সহজেই একটি মোবাইলে প্রবেশ করে সেই মোবাইলের সমস্ত ডাটার এক্সেস নিয়ে নেয়। আমরা সবাই জানি যে কম্পিউটার থেকে ভাইরাস দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরণের এন্ট্রিভাইরাস রয়েছে। কিন্তু এক সময় মোবাইল থেকে ভাইরাস দূর করতে কোনো ধরণের এন্ট্রি ভাইরাস ছিলোনা।

এই বর্তমান সময়ে মোবাইলের জন্য কিছু এন্ট্রিভাইরাস অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে যেগুলোর ব্যবহার করার মাধ্যমে মোবাইল থেকে খুব সহজেই ভাইরাস দূর করা যায়। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন তাহলে আপনি মোবাইল থেকে কিভাবে ভাইরাস দূর করতে হয় তার সমস্ত উপায় জেনে যাবেন।

ভাইরাস কি বা কাকে বলে?

আজকের এই আর্টিকেলে মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায় সম্পর্কে সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে কিন্তু তার পূর্বে ভাইরাস কি সেটি সম্পর্কে ধারণা নেয়া যাক। কারণ ভাইরাস কি সেটি জানতে পারলে খুব সহজেই ভাইরাসকে মোকাবিলা করা সম্ভব।

ভাইরাস হচ্ছে এক এক ধরণের প্রগামের সমন্বয় যেটি মূলত ক্ষতি সাধন করার জন্য তৈরি করা হয়ে থাকে। এটি তৈরি করা হয়ে থাকে প্রগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করার মাধ্যমে। প্রগাম গুলোকে এমনভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে যে, একটি মোবাইল বা কম্পিউটারে থাকা সমস্ত প্রগ্রামকে নিজেই পরিচালনা করার ক্ষমতা রাখে।

মোবাইলে বা কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করার পর সেই মোবাইল অথবা কম্পিউটার নিজের নিয়ন্ত্রনে থাকতে পারেনা এবং নিজে নিজেই কাজ করা শুরু করে দেয়। আপনি যদি কোনো অ্যাপ চালু করেন তাহলে সেই অ্যাপটি সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা।

যেমন ধরুন আপনি একটি সিনেমা দেখছেন মোবাইল থেকে, হটাৎ করেই সেই সিনেমা বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বা মাঝে মাঝে কি যেন একটি লেখা চলে আসছে অথবা বিনা কারণেই অ্যাড চলে আসছে।

আমাদের সবার মোবাইলে আলাদাভাবে প্রগাম সেটাপ করা থাকে মোবাইলটি সঠিকভাবে চলার জন্য। কিন্তু যখন ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা দেয় তখন সেই মোবাইলে থাকা প্রগাম এবং অ্যাপ গুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা।

আর যে সমস্ত প্রগামগুলো মোবাইলে থাকা প্রগামকে চলতে বাধা প্রদান করে থাকে সেই সমস্ত প্রগামকেই ভাইরাস বলা হয়। ভাইরাস বিভিন্ন ধরণের হতে পারে আর সেটি নিয়েও আলোচনা করা হবে।

ভাইরাস কিভাবে কাজ করে?

আপনি হয়ত জেনে এবং বুঝে গিয়েছেন যে, ভাইরাস জিনিসটা কি? এখন যদি আপনাকে প্রশ্ন করি ভাইরাস কিভাবে কাজ করে থাকে সেটি কিন্তু না জানলে বলতে পারবেননা। আমরা যেহেতু আজ জানতে চাচ্ছি যে, মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায় গুলো কি?

তাই চলুন আগে জেনে নেয়া যাক ভাইরাস আসলে কিভাবে কাজ করে থাকে? দেখুন মানব দেহে যখন ভাইরাসের সংক্রমন হয় সেটি কিন্তু প্রথম দিনেই বোঝা যায়না। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন মানব দেহ দূর্বল হয়ে পরে তখন ডাক্তারের কাছে গেলেই বোঝা যায় বা ডাক্তার বলে দেয় শরীরে ভাইরাসের সংক্রমন হয়েছে।

আমরা যখন সুস্থ থাকি তখন কিন্তু নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী যেকোনো কিছু করতে পারি। কিন্তু হটাৎ করে যদি শরীর অসুস্থ হয়ে যায় তাহলে সেই কাজ গুলো আর নিজের মত করে করতে পারিনা শরীর অনেক দূর্বল হয়ে যায়। ধরুন শরীরে জ্বর আসার কথাই।

এদিকে ইলেকট্রিক ডিভাইস গুলোর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই কারণ মোবাইল হোক বা কম্পিউটার যেকোন ডিভাইসে ভাইরাস আক্রমণ করে ফেললে সেই ডিভাইস আর নিজের মত কাজ করতে পারেনা বরং অনেক বেশী দূর্বল হয়ে যায়।

আমারা আমাদের মোবাইল ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্রাউজিং থেকে শুরু করে গান শোনা, মুভি দেখা, কল করা, মেসেজিং ইত্যাদি করে থাকি। আর এই সমস্ত কাজ কিন্তু মোবাইল নিজে থেকে করতে পারেনা। মোবাইলের মধ্যে আগে থেকে বিভিন্ন ধরণের প্রগাম সেটাপ করা থাকে আর সেই প্রগামের মাধ্যমেই মোবাইল চলে থাকে।

ধরুন আপনি কাওকে কল করলেন কিন্তু সেই কল বারবার নিজে থেকে কেটে যাচ্ছে বা এরর দেখাচ্ছে তাহলে বিষয়টি কেমন হবে। সাধারণ ভাবে কিন্তু এই ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়না, এটি হয় ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পরেই।

একটি ডিভাইসে যখনই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণ হয় তখন সেই মোবাইলে থাকা প্রগাম গুলোকে সঠিকভাবে কাজ করতে বাধা প্রদান করে থাকে। ধীরে ধীরে ভাইরাস এত বেশী মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে যে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারকে চিরতরে নষ্ট করে দিতে পারে।

এখন বিষয় হচ্ছে কিভাবে বোঝা যাবে মোবাইল ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছে। তাহলে পরবর্তি কথা গুলো ধাপে ধাপে দেখতে থাকুন আশা করি সমস্ত বিষয় একদম পরিস্কার হয়ে যাবে।

আরও দেখুনঃ যেভাবে একটি সফল ক্যারিয়ার ঘঠন করা যায় জেনেনিন

ভাইরাস কি ক্ষতি করে?

একটি মোবাইলে যখন ভাইরাস আক্রমণ করে তখন সেই মোবাইলে থাকা সমস্ত প্রগামের এবং ডেটার মালিকানা চলে যায় ভাইরাস নির্মাতার কাছে এবং সে চাইলে যেকোনো ক্ষতি করতে পারে। যেমন মোবাইলের মধ্যে থাকা ডাটা গুলো ব্যবহার করে আপনাকে ব্লাকমেইল করে টাকা নিয়ে নিতে পারে।

অনেক সময় দেখা যায় মোবাইলে কন্টাক্টে থাকা নাম্বার গুলোতে মেসেজ পাঠিয়ে বা ভুয়া কল করে টাকা আদায় করে নিয়ে থাকে। তাছাড়াও ফোনে থাকা গোপন তথ্য গুলো অনেক টাকায় বিক্রি করে দেয়।

ফোনে থাকা সমস্ত ডাটা গুলো ডিলিট হয়ে যায় অথবা বিনা কারনে কারাপ্টেড হয়ে যায়। ভাইরাসের উপস্থিতি থাকার ফলে একটি ফোন চিরতরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফোন ব্যবহার করে ব্যাংক অ্যাক্যাউন্ট থেকে টাকা নিয়ে নেয়।

মোবাইলের ব্যাটারি, স্টোরেজ সমস্ত কিছু ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে। ফোনে থাকা সোশ্যাল মিডিয়া সহ অন্যান্য সব কিছু খুব সহজেই ব্রাউজ করে ফেলতে পারে। এমন আরও অনেক ক্ষতি রয়েছে যা একটি মাত্র ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ফোনে হতে পারে।

একটি মোবাইল ভাইরাস এমন ক্ষমতা রাখে যে খুব সহজেই একটি ডিভাইসকে নষ্ট করে দিতে পারে।

মোবাইলে ভাইরাস প্রবেশ করলে বোঝার উপায়

দেখুন একটি মোবাইল যখন ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় তখন বিভিন্ন ধরণের অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে যার সেই আচরণ থেকেই খুব সহজেই বোঝা যায় মোবাইলে ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে। তাহলে জেনে নেয়া যাক আচরন গুলো কি কি?

  • কোন কারণ ছাড়াই মোবাইল গরম হওয়া শুরু করে।
  • স্টোরেজ ফাকা থাকার পরেও মোবাইল হ্যাং হয়ে যায়।
  • গ্যালারি থেকে কারণ ছাড়াই ছবি ডিলিট হয়ে যায় বা সাদা অথবা কালো হয়ে যায়।
  • মোবাইল ব্যবহার না করেও নিজে থেকেই চার্জ শেষ হয়ে যায়।
  • অস্বাভাবিক ভাবেই ফোন নিজে থেকে রিস্টার্ট নিতে পারে।
  • নিজে থেকেই ক্যামেরা ওপেন হয়ে যায়।
  • ভিডিওর মধ্যে অ্যাড দেখায়।
  • কল করতে গেলে সেই কল নিজে থেকেই রেকর্ড হওয়া শুরু হয়ে যায়।
  • অপরিচিত অ্যাপ ডাউনলোড হয় এবং নিজে থেকেই ইন্সটল হয়ে যায়।
  • ফোনের ডিসপ্লে কাপতে থাকে এবং মনে হয় ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
  • সেভ করা নাম্বারে স্পামিং মেসেজ যায়।

এ রকম আরও অনেক কারণ রয়েছে যেটি থেকে বোঝা যায়যে মোবাইলে ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে। সমস্ত কারণ কিন্তু বলা সম্ভব নয় কারণ একেক ভাইরাস একেক ধরণের আচরণ শুরু করে করে। তাছাড়াও অনেক সময় কোনো রকম আচরন না করেও ভাইরাস ফোনে উপস্থিত থাকে।

তাই নিজে থেকেই বিভিন্ন উপায় মেনে চলে এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হবে। পরবর্তি ধাপ গুলো দেখুন,

মোবাইলে ভাইরাস প্রবেশ করার কারণ

একটি মোবাইলে ভাইরাস নিজে থেকেই কোনোদিন প্রবেশ করতে পারেনা। নিজেরদের অসাবধানতার কারণেই ভাইরাস দ্বারা মোবাইল সংক্রমিত হয়ে থাকে। তাই নিজেদের অনেক বেশী খেয়াল রাখা অনেক বেশী জরুরী।

অনেক সময় দেখা যায় আমরা মোবাইল ব্যবহার করার সময় বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে থাকি এবং সেই সমস্ত ওয়েবসাইট থেকে নিজে নিজে অ্যাপ ডাউনলোড হয়ে যায় এবং না বোঝার ফলে সেই অ্যাপ আমরা ফোনে ইন্সটল করে ফেলি আর এই অ্যাপ গুলোতে থাকে ভাইরাস।

বর্তমান সময়ে একটি বিষয় অনেক বেশী খেয়াল করা যায় আর সেটি হচ্ছে মোবাইল এসেমেস বা ইমেইলের মাধ্যমে কিছু লিঙ্ক দেয়া হয় টাকা ইনকাম করার জন্য আর আমরা অনেকেই রয়েছি সেই সমস্ত লিঙ্কে ক্লিক করে দেই এবং নিজের সমস্ত তথ্য দিয়ে দেই। আর এই সমস্ত লিঙ্কের মাধ্যমেও ভাইরাস ফোনে চলে আসে।

এই সময়ে অনেক টাকা ইনকাম করার ভূয়া অ্যাপ পাওয়া যায়। আর এই সমস্ত অ্যাপ গুলো ফোনে ইন্সটল করার সাথে সাথে ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয় আপনার ব্যবহার করা ফোনটি।

ফেসবুক অথবা যে কোনো একটি মেসেজিং প্লাটফর্মে দেখা যায় অনেক বন্ধু বা কাছের কেও লিঙ্ক পাঠায় এবং সেখানে ক্লিক করতে বলে। ঐ সমস্ত অপরিচিত লিঙ্ক থেকেও মোবাইলে ভাইরাসের উপস্থিতি হয়।

অনেক সময় দেখা যায় আমরা অন্য কারো মেমোরি কার্ড বা পেন্ড্রাইভ আমাদের মোবাইলে ব্যবহার করে থাকি এবং সেই মেমোরি কার্ড বা পেন্ড্রাইভ থেকে ভাইরাসের সংক্রমণ হয় মোবাইলে।

অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে লোভনীয় অ্যাড দেখায় আর সেই অ্যাড দেখে কেও যদি ক্লিক করে দেয় তাহলে তার মোবাইলে ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। এমন আরও অনেক কারণ রয়ছে এই ভাইরাস সংক্রমণ করার জন্য।

আরও দেখুন,

অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারণার হাত থেকে বাঁচার উপায়

দূরে বসেই যেভাবে ফেসবুক লগ আউট করে দেয়া যাবে

মোবাইলে ভাইরাস আক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়

দেখুন প্রথমেই আপনার জানা থাকা দরকার যে, কিভাবে এই সমস্ত ভাইরাস থেকে নিজের মোবাইল ফোনটিকে সুরক্ষিত রাখা যাবে। যদি আপনি আপনার মোবাইলে ভাইরাস প্রবেশ থেকে দূরে রাখতে না পারেন তাহলে কিন্তু মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায় জেনে কোন লাভেই আসবেনা।

আগে রোগ ব্যাধি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে এবং যদি হটাৎ করে রোগ হয়ে যায় তখন চিকিৎসা করা যাবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকা যায়।

  1. অপরিচিত সমস্ত অ্যাপ ইন্সটল করা থেকে সম্পূর্ন দূরে থাকতে হবে।
  2. যে সমস্ত ওয়েবসাইটে সিকিউরিটি নেই সেই সমস্ত ওয়েবসাইট ব্রাউজ করলেও কোনো তথ্য দেয়া তেকে বিরত থাকতে হবে।
  3. কারো পাঠানো লিংকে ক্লিক করা যাবেনা।
  4. টাকা ইনকামের প্রলোভন দেয়া সমস্ত লিঙ্ক থেকে দূরে থাকতে হবে।
  5. ফোনে অপরিচিত অ্যাপ ষ্টোর করা থাকলে ডিলিট করে দিতে হবে।
  6. অন্য কারো মেমোরি বা পেন্ড্রাইভ ব্যবহার করা যাবেনা।
  7. থার্ড পার্টি যেকোনো অ্যাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  8. ই-মেইলে থাকা যেকোন অ্যাটাচমেন্ট ডাউনলোড করা যাবেনা।
  9. মোবাইলে অ্যাপ ইন্সটল করার সময় প্লেস্টোর বা অ্যাপ স্টোর ব্যবহার করুন।
  10. কোনো ধরণের ফিশিং লিংকে ক্লিক করা যাবেনা।

আর আপনি যদি এই সমস্ত নিয়ম গুলো সঠিভাবে মেনে চলতে পারেন তাহলে মোবাইলে ভাইরাস প্রবেশ করা থেকে অনায়াসে বাঁচতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায় গুলো কি কি রয়েছে?

মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায়

আপনি হয়তো জেনে গিয়েছেন যে, মোবাইল ফোনে ভাইরাস প্রবেশ করলে কিভাবে বোঝা যায় এবং কি কি কারণে মোবাইল ভাইরাসের প্রবেশ ঘটে। এখন জেনেনিন কিভাবে এই ভাইরাস থেকে নিজের মোবাইলটিকে রক্ষা করা যায়।

প্রথমত যে কাজটি করলে ভালো হয় সেটি হচ্ছে আপনার ফোনকে ফ্ল্যাশ রিসেট করে দিন এতে সমস্ত ডাটা ডিলিট হয়ে যাবে এবং ফোনের রূপ আগের মত হয়ে যাবে। ফোনে থাকা সমস্ত অপরিচিত অ্যাপ গুলোকে ডিলিট করে দিতে হবে।

যে সমস্ত অ্যাপ গুলো নিজে থেকে আপনার ফোনে সেটাপ হয়ে রয়েছে সেই সমস্ত অ্যাপ গুলো যত তাড়াতাড়ি পারেন আনইন্সটল করেদিন এতে ভাইরাস চলে যাবে। হটাৎ যদি দেখতে পান আপনার মোবাইলে থাকা ভিডিও বা অন্য কোনো ফাইল অস্বাভাবিক আচরণ করা শুরু করে দিয়েছে তাহলে সাথে সাথে সেই ফাইল গুলো ডিলিট করে দিন।

ফোনে যদি কোনো মেমোরি কার্ড লাগানো থাকে তাহলে সেই মেমোরি কার্ডটি খুলে ফেলতে হবে আর যদি খুলে ফেলার পর দেখা যায় মোবাইল আগের মত আচরণ করছে তাহলে বুঝে নিতে হবে মেমোরি কার্ডে কোনো সমস্যা নেই।

ব্রাউজার এবং সমস্ত অ্যাপ গুলোর ডাটা ক্লিন করে দেয়া যেতে পারে এতে ভাইরাসের উপস্থিতি থাকলে ডিলিট হয়ে যাবে। আর সব চাইতে ভালো হয় ফোনের জন্য ভালোমানের একটি এন্ট্রিভাইরাস ব্যবহার করা।

বর্তমান সময়ে কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইলে ব্যবহার করার জন্য অনেক ধরণের এন্ট্রিভাইরাস রয়েছে যার মধ্যে আপনি যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারলেই আপনার ফোন থাকবে সুরক্ষিত।

যদি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত থাকে তার পরেও ভাইরাস গুলোকে নিজে থেকেই চিরতরে ডিলিট করে দিতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক এন্ট্রিভাইরাস কি এবং কোনটি ফোনের জন্য ভালো হবে?

এন্ট্রিভাইরাস কি ?

মোবাইল অথবা কম্পিউটার থেকে ভাইরাস দূর করার জন্য যে সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় তাকে এন্ট্রিভাইরাস বলে। এন্ট্রিভাইরাস তৈরি করা হয়েছে শুধু মাত্র ভাইরাস এবং হ্যাকারদের হাতে থেকে ডিভাইস গুলোকে রক্ষা করার জন্য।

কম্পিউটার হোক বা মোবাইল যেকোন ডিভাইসের জন্য ব্যবহার করতে হয় এন্ট্রিভাইরাস কারণ এটি ব্যবহার করলে ভাইরাসের আক্রমনের ঝুকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যদি কোন ফাইল ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড হতে চায় এবং যদি সেই ফাইলে ভাইরাস থাকে এন্ট্রিভাইরাস ব্যবহার করলে সেই ফাইল ডাউনলোড হতে পারনা।

তাই প্রতিটি মোবাইল বা কম্পিউটারে এন্ট্রিভাইরাস ব্যবহার করা অনেক বেশী জরুরী। তাহলে চলুন কয়েকটি এন্ট্রিভাইরাসের নাম জেনে নেয়া যাক মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায় ।

কেস্পারস্কাই মোবাইল সিকিউরিটি ( Kespersky )

প্রথমেই যে এন্ট্রিভাইরাসের কথা বলবো সেটি হচ্ছে কেস্পারস্কাই এন্ট্রিভাইরাস। এই এন্ট্রিভাইরাসটি আপনি ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেননা এর কারন হচ্ছে ফ্রিতে যে সমস্ত সফটওয়্যার পাওয়া যায় সেগুলো দিয়ে ভাইরাস দূর করার চাইতে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত বেশী করে থাকে।

এই এন্ট্রিভাইরাসটি অনেক আগে থেকে কম্পিউটারে ব্যবহার হয়ে আসছে কিন্তু এখন এটি মোবাইলের জন্য অ্যাভাইলেবল রয়েছে। এই অ্যাপটি ব্যবহার করলে আপনার মোবাইলের জন্য সমস্ত কিকিউরিটি দিয়ে থাকবে।

আমাদের মোবাইল গুলো যে সমস্ত ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় সেগুলোকে ম্যালওয়ার বলে থাকে। আর এই সমস্ত ম্যালওয়ার থেকে বাঁচতে হলে এই এন্ট্রিভাইরাসটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই এন্ট্রিভাইরাস অ্যাপটি আপনার মোবাইলে সেটাপ করা থাকলে মোবাইলে থাকা সমস্ত ভাইরাস দূর করে দিবে এবং কোনোভাবেই অন্য কোনো ভাইরাস মোবাইলে প্রবেশ করতে পারবেনা। তাই আপনি যদি মনে করেন আপনার ফোনের প্রচুর পরিমাণে দরকারি তথ্য থাকে তাহলে অবশ্যই এই এন্ট্রিভাইরাসটি ব্যবহার করবেন।

এভাস্ট মোবাইল সিকিউরিটি ( Avast )

কেস্পারস্কাইয়ের মত এটিও প্রথমে কম্পিউটারে ব্যবহার করা হত কিন্তু পরবর্তিতে এভাস্ট মোবাইলের জন্য এন্ট্রিভাইরাস লঞ্চ করে দেয়। আর এই এন্ট্রিভাইরাসটি ব্যবহার করতে আপনাকে কোনো ধরণের টাকা প্রদান করতে হবেনা।

আপনি আপাদত ফ্রিতেই অনেক সুবিধা পেয়া যাবেন। তারপরেও যদি আপনি মনে করেন আপানর এক্সট্রা সিকিউরিটি দরকার তাহলে আপনি চাইলেই প্রিমিয়াম ভার্সনে চলে যেতে পারবেন।

এই অ্যাপটি ব্যবহার করে আপনি কম্পিউটারের মত রিয়েল টাইম স্ক্যান করতে পারবেন এবং যদি কোন ভাইরাসের উপস্থিতি থাকে সেটিকে ডিলিট করে দিতে পারবেন। আপনি চাইলেই এই এন্ট্রিভাইরাস অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন।

ফ্রিতে হলেও এটি কিন্তু প্রিমিয়াম এর মতই কাজ করবে। তাই এখনই ইন্সটল করে নিন। আপনি এই অ্যাপটি পেয়া যাবেন গুগল প্লে স্টোরে, শুধু ডাউনলোড করে রিয়েল টাইম স্ক্যান করে নিলেই হয়ে যাবে।

এভিরা মোবাইল সিকিউরিটি ( Avira )

অন্যান্য এন্ট্রিভাইরাস গুলোর মত এভিরা অনেক বেশী প্রচলন রয়েছে। এটি যদিও পিসি ভার্সনে রয়েছে তারপরেই আপনি মোবাইলের জন্য এন্ড্রয়েড ভার্সন পেয়া যাবেন।

এটিতে অনেক বেশী জনপ্রিয়তা রয়েছে কারণ এই অ্যাপ ব্যবহার করলে আলাদা ভাবেই অনেক গুলো ফিচার পাওয়া যায় যেমন রয়েছে এন্টি থিপ ফিচার যেটি ব্যবহার করলে আপনার ফোন চুরি হবেনা এবং চুরি হলেও সেটি খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে।

তাই চাইলেই আপনি এই এন্ট্রিভাইরাসটি ব্যবহার করতে পারেন। অন্যান্য সব গুলোর মত এটিও খুব ভালো ভাইরাস ডিটেক্ট করতে পারে। প্রায় কয়েক মিলিয়ন ইউজার রয়েছে এই এন্ট্রিভাইরাসের তাই আপনিও তাদের মধ্যে একজন হতে পারেন।

আপনি এই তিনটির যেকোন একটি ব্যবহার করলেই মোবাইলে ম্যালওয়ার এর উপস্থিতি থেকে খুব ভালোভাবেই রক্ষা পাবেন। তাছাড়াও আরও কিছু এন্ট্রিভাইরাসের তালিকা দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি আপনি চাইলে দেখতে পারেন।

মোবাইলের জন্য এন্ট্রিভাইরাস তালিকা

  • কেস্পারস্কাই মোবাইল সিকিউরিটি ( Kaspersky Mobile Security )
  • এভাস্ট মোবাইল সিকিউরিটি ( Avast Mobile Security )
  • এভিরা মোবাইল সিকিউরিটি ( Avira Mobile Security )
  • এভিজি এন্ট্রিভাইরাস ( Avg Entry virus )
  • এমক্যাফে মোবাইল সিকিউরিটি ( McAfe Mobile Security )
  • বিটফিন্ডার মোবাইল সিকিউরিটি ( Bitfender Mobile Security )

আপনি চাইলেই এর মধ্যে যেকোনো একটি এন্ট্রিভাইরাস ব্যবহার করত পারেন।

শেষ কথাঃ

আপনি হয়ত জেনে এবং বুঝে গিয়েছেন যে, মোবাইলে থাকা ভাইরাস আমাদের কি কি ক্ষতি করে থাকে এবং সেই সাথে জেনে গিয়েছেন কি কি কারনে মোবাইলে ভাইরাস প্রবেশ করে এবং সেই সাথে মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এখন আপনার মোবাইলকে ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখার দায়িত্ব পুরোটাই আপনার। আর্টিকেলটি কেমন লাগলো সেটি অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন এবং সেই সাথে অন্যদেরকে এই তথ্য গুলো পৌঁছে দিতে অবশ্যই শেয়ার করে দিবেন।

2 thoughts on “মোবাইলে ভাইরাস দূর করার উপায় স্টেপ বাই স্টেপ

  • mahima afrin

    আমার মোবাইলে হঠাৎ করে ফেসবুক লাইট আসছে না কি যেনো উঠে থাকে শুধু বারবার।আমার ভয় হচ্ছে কারণ আমি আজকে একটি থার্ড পার্টি অ্যাপ ডাউনলোড দিয়েছিলাম শুধু এতোটুকুর জন্য কি আমি ধরে নিতে পারি আমার মোবাইল ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছে?

    Reply
    • এটি তেমন কোন ইস্যু নয় শুধু ফেসবুক লাইট অ্যাপটির ডাটা ক্লিন করে দিলেই হয়ে যাবে তাতেও যদি প্রবলেম সল্ভ না হয় আপনাকে অবশ্যই ফোনটি রিসেট করে নিতে হবে।

      Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *