মোবাইল ফোনের ভালো দিক ও খারাপ দিক
বর্তমান সময়ে প্রতিটি মানুষের জন্য মোবাইল অতি প্রয়োজনীয় একটি বস্তুতে পরিনত হয়েছে কারণ সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত মানুষের হাতে থাকে মোবাইল আর এই মোবাইল ফোনের ভালো দিক এবং খারাপদিক উভয় রয়েছে।
তাই আজকের এই আর্টিকেলে মোবাইল ফোনের ভালো দিক নিয়ে আলোচনা করা হবে। আধুনিক বিশ্বের মানুষের জন্য মোবাইল ফোন এতটা কাছের বস্তুতে পরিনত হয়েছে যে, মোবাইল ফোন সবার কাছে একটি বস্তুতে পরিনত হয়েছে।
বর্তমান সময়ে বিশ্বের বেশীরভাগ মানুষ মোবাইলের উপরে এত বেশী নির্ভরশীল যে, সে যেন মোবাইল ছাড়া এক মূহুর্ত থাকতে পারেনা। কারো কাছে থেকে যদি কিছু সময়ের জন্য মোবাইল নেয়া যায় তাহলে সে যেন অচল হয়ে যায়।
আর এই মোবাইল ফোন মানব সভ্যতাকে করে অনেক সহজ থেকে সহজতর সেই সাথে দিয়েছে বিশেষ কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা তাই আজকের এই আর্টিকেলে মোবাইল ফোনের ভালোদিক এবং খারাপ দিন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে তাই আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ুন।
মোবাইল ফোনের ভালো দিক
যুগান্তকারী আবিস্কার হিসাবে মোবাইল ফোন যখন মানুষের হাতের নাগালে চলে আসে তখন মানুষের জীবনযাত্রা অনেক বেশী সহজ থেকে সহজতর হয়ে যায়ে এবং এর ফলে অতি সহজেই মানুষ একে অপরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।
কোন এক সময় এক জন অন্য জনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য সরাসরি গিয়ে কথা বলতে হত অথবা চিঠি পাঠাতে হত কিন্তু বর্তমান সেটি একদম বিপরীত মুখি হয়ে গিয়েছে কারণ চাইলেও যখন ইচ্ছা তখন কল করার মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়।
আরও দেখুনঃ এই নিয়ম মানলে কোনদিন মোবাইল হ্যাক হবেনা
ইন্টারনেট ব্রাউজ করার মাধ্যমে দেশ বিদেশের খবর মূহুর্তের মধ্যেই পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে দেখা গেলে মোবাইল ফোন মানুষের জন্য অনেক উপকারে আসছে মোবাইল ফোন তাই চলুন মোবাইল ফোনের বেশ কিছু ভালো দিক নিয়ে বিস্তারিত জানা যাক।
- অতি সহজেই একে অপরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়
- ইন্টারনেট ব্যবহার করে যেকোনো বিষয় অতি সহজেই জানা যায়
- গবেষণার জন্য মোবাইল ফোন দিয়েই অতি সহজেই বিষয় ভিত্তিক তথ্য খুজে বের করা যায়
- অতি সহজেই পরিক্ষার ফলাফল জানা যায়
- ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়
- সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ব্যবসা করে লাভবান হওয়া যায়
- ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে টাকা আয় করা যায়
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের মত কাজ করা যায়
- সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বিভিন্ন কিছু আপডেট করা যায় এবং নতুন নতুন তথ্য জানা যায়
- ভিডিও কল করার মাধ্যমে একে অপরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়
- ই-বুক ডাউনলোড করে সেগুলো যেকোনো সময় পড়া যায়
- বিশ্বের যেকোনো দেশের লাইব্রেরি থেকে বই পড়া যায়
- বিনোদন এর জন্য গান শোনার পাশাপাশি ভিডিও দেখা, মুভি দেখার মত কাজ করা যায়
- নিজের এবং পরিবারের সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলোকে ছবি এবং ভিডিও আকারে ধারণ করা যায়
- অনলাইন ডেটা স্টোর ব্যবহার করে নিজের যেকোনো ফাইল আপলোড করা রাখা যাচ্ছে
- অতি সহজেই অনলাইন টিউশন পাওয়া যায় যার ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম অতি সহজ হয়ে যায়
- সব ধরণের তথ্য খুজে বের করা যায়
- ইউটিউব এবং গুগল ব্যবহার করে পাঠ্য বিষয়ের সমস্ত কিছু বিস্তারিত ভাবে জানা যায় এবং বোঝা যায়
- ট্রেনের টিকেট থেকে শুরু করে ঘরে বসেই প্লেনের টিকেট বুক করা যায়
- গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে নিজের গন্তব্যে সহজেই পৌঁছানো যায় যদিও জায়গা অচেনা হয়
- অনলাইনে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য টিপস নেয়া যায়
- মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অনলাইন এবং অফলাইনে গেমস খেলা যায়
আরও দেখুনঃ মোবাইল ফোনে সঠিকভাবে চার্জ করবেন যেভাবে
মোবাইল ফোন আবিষ্কারের পর থেকে এমন হাজার সুবিধার সৃষ্টি হয়েছে যেগুলো মানব সভ্যতাকে দিয়ে অন্য রকম পরিবর্তন। আধুনিক সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে নিয়ে এসেছে অনাবিল পরিবর্তন।
মোবাইল ফোনের খারাপ দিক
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যার ভালো দিক রয়েছে যেখানে খারাপ দিক রয়েছে সেখানেই। ঠিক তেমনই মোবাইল ফোন একই এর যেমন রয়েছে ভালো দিক ঠিক তেমন রয়েছে খারাপ দিক।
যেহেতু ভালো দিক গুলো তুলে ধরা হয়েছে এখন মোবাইল ফোনের খারাপ দিক গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি একটু মনোযোগ সহকারের পরার চেষ্টা করুন।
- অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি মানুষের জীবনকে অস্থিরতার মধ্যে নিমজ্জিত করে তোলে
- মোবাইল রিংটোন কাজের মনোযোগ নষ্ট করে
- মোটর সাইকেল বা অন্য কোন গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বললে এক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়
- অতিরিক্ত কথা বলার জন্য মোবাইল থেকে নির্গত হওয়া গামা রশ্মি ব্রেইন ক্যানসার, ব্রেইন টিউমারের কারণ হওয়া দাঁড়ায়
- রাতের বেলা মোবাইল আসক্তি রাতের ঘুম নষ্ট করে যার ফলে দিনের বেলা কর্ম ক্ষমতা হারাতে হয়
- মোবাইল ফোন হ্যাকিং হওয়ার ফলে ব্যাক্তিগত তথ্য চুরি হয়
- কম বয়সী ছেলে এবং মেয়েরা পর্ন ভিডিওতে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে যার ফলে মানসিক অবক্ষয় ঘটছে
- ফ্রিশিং লিংকে ক্লিক করলে মোবাইল হ্যাক হয়ে যায় এবং সেই সাথে তথ্য চুরি হয়ে যায়
- টিকটিকের মত অ্যাপ গুলোর আসক্তি শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার ক্ষতি করে থাকে
- সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক অতিরিক্ত ব্যবহার জীবনযাত্রার মানকে ধীর করে দেয়
- মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার রাতের বেলার ঘুম নষ্ট করে যার ফলে শারিরিক দিক দিয়ে অনেক অসুস্থ হয়ে যেতে হয়
- অনেক সময় দামি মোবাইল ফোন হারানোর ভয় থেকে যায়
- স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়
- অনেক সময় অরিতিক্ত ফোন ব্যবহার সময় নষ্ট করে
- অনেক ক্ষেত্রে নিজের প্রাইভেসি নষ্ট হয়
- সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য মাধ্যম থেকে ভূয়া তথ্য জানতে পারে মানুষ
- অনেকেই আছে যারা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে যার ফলে লেখা পড়ায় বিঘ্ন ঘটে
আরও দেখুনঃ যেভাবে মোবাইল ফোনকে ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখা যায়
সব মিলিয়ে বললে আধুনিক এই প্রযুক্তিটিতে অনেক গুলো ক্ষতির দিক রয়েছে কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্ত এবং মোবাইলের সঠিক ব্যবহার করলে এই সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
যেহেতু মোবাইল ফোন আবিস্কার হয়েছে মানুষের উপকার করার জন্য কিন্তু মানুষ যদি সেটি বাজে কাজে ব্যবহার করে তাহলে সে দায়ভার তাকেই নিয়ে হতে। তাই মোবাইল ফোনের ভালো দিক গুলো ফলো করার মাধ্যমে খারাপ দিক গুলো বর্জন করার সবার জন্য অতি জরুরী।
আরও দেখুনঃ মোবাইল থেকে ডিলিট হয়ে যাওয়া ছবি ফিরে পাওয়ার সফটওয়্যার
মোবাইল ফোনের ভালো দিক ও খারাপ দিক নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর
মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিয়ে অনেকের অনেক কিছু জানার থাকে এবং সেগুলো গুগ্লে সার্চ করে তাই এমন কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি যেগুলো সবারই জানা উচিৎ। তাহলে আপনার জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর জেনেনিন।
মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার সময়ের অনেক বড় ক্ষতি করে থাকে যার ফলে মানুষ তার সময়ের কাজ সময় অনুযায়ী করতে পারছে না এবং এর ফলে তার কাজ গুলো সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারছেনা। এছাড়াও মোবাইল ফোন পরিষ্কার করা হয়না যার কারণে প্রচুর পরিমাণে জীবানু জমে থাকে যার সাস্থের পক্ষে ক্ষতিকর।
মোবাইলের ডিসপ্লের দিকে অতিরিক্ত সময় তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখের জ্যোতি কমে যায়। পর্ণ ভিডিওর মত ভিডিও দেখার ফলে যুবক এবং যুবতিদের যৌন স্বাস্থ্য নষ্ট হচ্ছে। বিভিন্ন ধরণের সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক, টিকটকের অতিরিক্ত ব্যবহার রতের ঘুমকে ব্যাঘাত করছে যার ফলে স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে।
একজন মানুষের প্রতিদিন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা মোবাইল ব্যবহার করা উচিৎ। কেও যদি ২ থেকে ৩ ঘন্টা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তাহলে তার জন্য অধিক উপকারি হবে কম সময় মোবাইল ব্যবহার করলে তার ব্যাক্তিগত কাজ থেকে শুরু করে অন্যান্য কাজ গুলো সম্পাদন করা সহজ হবে।
কথা বলা থেকে শুরু করে দেশ বিদেশের যেকোনো তথ্য সহজেই জানা যায় এছাড়াও স্কুল কলেজের ভর্তি থেকে শুরু করে পরিক্ষার ফলাফল সমস্ত কিছু জানা যায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার মাধ্যমে। ক্যামেরা ব্যবহার করে নিজের মূহুর্ত গুলো অতি সহজেই ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে রাখা যায়। এছাড়াও ইন্টারনেট ব্যবহার করে যেকোনো তথ্য অতি সহজেই জানা যায়।
দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে মানুষের মস্তিষ্ক থেকে ডোপামিন নিঃসরণ যায় যার আমাদেরকে মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রতি অধিক আগ্রহী করে তোলে এবং এর কারণে মোবাইলের উপরে মানুষ অধিক নির্ভর হয়ে যায়।
মোবাইল ফোন অবশ্যই ভালো কারণ আমাদের অনেক উপকারে আসে। কেও যদি মোবাইল ফোন খারাপ কাজে ব্যবহার করে তাহলে সেতি খারাপ কিন্তু মোবাইল ফোন ভালোর জন্য তৈরি করা হয়েছে তাই সবার উচিৎ মোবাইল ফোনের বাজে ব্যবহার বাদ দেয়া।
মানুষ জন্মগত ভাবেই সামাজিক জীব তাই সে সমাজ নিয়েই বসবাস করে থাকে। মোবাইল ফোন বস্তুটি সবার ব্যাক্তিগত প্রয়োজনীয় বস্তু সে তার ব্যাক্তগত কাজে ব্যবহার করে থাকে মোবাইল ফোন আমাদের কম সামাজিক করে তুলতে পারেনা বরং সমাজের অনেক মানুষকে সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ ও পেজের মাধ্যমে একত্র করণ করা যায়।
এই প্রশ্নের উত্তর সবারই জানা কারণ বর্তমান সময়ে প্রত্যকের কাছে একটি করে মোবাইল ফোন রয়েছে এবং সেই ফোন দিয়ে কথা বলা থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্যবহার, বিনোদন, যোগাযোগ, ছবি ও ভিডিও ধারণ সমস্ত কাজ গুলো করে থাকে।
এক কোথায় বললে জীবনে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব অপরিসীম।
শেষ কথাঃ এই ছিল মোবাইল ফোনের ভালো দিক ও খারাপ দিক আশা করছি যথেষ্ট উত্তর পেয়েছেন। তথ্য গুলো আপনার উপকারে এসেছে কিনা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন এবং সেই সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করতে ভূলবেননা।