মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় – কেও হ্যাক করতে পারবেনা
মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় -বর্তমান সময়ের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে কিন্তু সবাই কি জানে কাঙ্ক্ষিত মোবাইল ফোনটি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় ও কিভাবে নিজেকে বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা করতে হয়? বিশেষ করে হ্যাকিং থেকে নিজেকে রক্ষা করার বিষয়টি হয়ত তেমন কেও জানেইনা।
তাই আজকের যে সমস্ত কিছু জানা দরকার সমস্ত কিছুই জানিয়ে দেয়া হবে। আমাদের মধ্যে কম বেশী সবাই জানে যে, হ্যাক বলতে কিছু রয়েছে এবং হ্যাকিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই একটি মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অতি সহজেই তথ্য চুরি করে নেয়া যায় সেই সাথে সেই ডিভাসকে একেবারে নষ্ট করে দেয়া যায়।
দেখুন মোবাইল হোক বা কম্পিউটার হোক সেটি যদি ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করা থাকে হ্যাকার অতি সহজেই সেই ডিভাইসকে হ্যাক করে ফেলতে পারে। তাই হতে পারে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি হ্যাকিং এর ঝুকিতে রয়েছে! কিন্তু আপনি চাইলেই আপনার ডিভাইসটিকে অতি সহজেই হ্যাকারদের কাছে থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।
তাই আজ এই আর্টিকেলে হ্যাকিং নিয়ে যা কিছু জানার আছে সমস্ত কিছু তুলে ধরার চেস্টা করবো সেই সাথে কিভবে হ্যাক থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায় সব কিছুই ধাপে ধাপে বলে দেয়ার চেস্টা করবো।
শুধু তাই নয় স্বয়ং হ্যাকাদের দেয়া কিছু তথ্য আপনাকে বলে দেয়া হবে কারণ তারা নিজেই বলে দিয়েছে কিভাবে একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হ্যাকারদের কাছে থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
হ্যাকিং কি বা কাকে বলে?
মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় গুলো জানার পূর্বে একটি হ্যাকিং সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। হ্যাকিং হচ্ছে এমন এক মাধ্যমে যেখানে একটি কম্পিউটার বা মোবাইলের দুর্বলতা খুজে বের কর সেই ডিভাইস থেকে তথ্য চুরি করে নেয়ার একটি মাধ্যম।
বিশেষ করে আমাদের ব্যবহার করা ডিভাইস গুলোর অ্যাপ এবং সফটওয়্যার এক ধরণের কম্পিউটার প্রগ্রাম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়ে থাকে। আর হ্যাকিং করার জন্য সেই কম্পিউটার প্রগ্রাম ব্যবহার করে এক ধরণের অ্যাপ অথবা সফটওয়্যার তৈরি করা হয়ে থাকে।
সেই তৈরি করা অ্যাপ গুলোকে ইন্টারনেট মাধ্যম ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর ফোনে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়ে থাকে। যখন সেই অ্যাপ একটি মোবাইলে প্রবেশ করে তখনই সেই হ্যাকার চাইলেই অতি সহজেই সেই ডিভাইস থেকে যেকোনো তথ্য চুরি করে নিতে পারে।
এক কথায় যদি বলা হয় তাহলে, কোন একটি ডিভাইসের দুর্বলতা খুজে বের করে সেই কম্পিটারে ক্ষতিকর প্রগ্রাম প্রবেশ করিয়ে গুরুত্বপূর্ন তথ্য চুরি করার মাধ্যমকে বোঝানো হয়ে থাকে।
অনেকের ধারণা যে, হ্যাকিং শুধু মানুষের ক্ষতি করার জন্য করা হয়ে থাকে কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ন ভুল কারণ অনেক কোম্পানি বা এজেন্সি রয়েছে যারা তাদের নিজেদের সাইবার নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য এথিক্যাল হ্যাকারদের হায়ার করে থাকে।
কত ধরণের হ্যাকিং রয়েছে?
দেখুন হ্যাকিং এর বিভিন্ন ধরণ রয়েছে কারণ ভিন্ন ভিন্ন ডিভাইস ভিন্ন উপায়ে হ্যাক হয়ে থাকে। যদি একি উপায়ে সমস্ত ডিভাইস হ্যাক করা হত তাহলে কেও এ অব্দি হ্যাকাদের শিকার হত না।
তাই সাধারণ অর্থে বলা হয় মোবাইল হ্যাকিং হোক বা কম্পিউটার হ্যাকিং হোক সেটি ব্যাসিক ৭ উপায়ে হতে থাকে যেমন,
১। ওয়েবসাইট হ্যাকিং
এটি এমন এক হ্যাকিং মাধ্যম যেখানে শুধু ওয়েবসাইটকে টার্গেট করে হ্যাকিং করা হয়ে থাকে। আর ওয়েবসাইট বলতে এই গুগল, ইউটিব, ফেসবুক রয়েছে সেগুলোকেই বোঝানো হয়ে থাকে।
যে সমস্ত হ্যাকার ওয়েবসাইট হ্যাক করে তারা একটি ওয়েবসাইটের দূর্বলতা খুজে বের করে এবং সেই ওয়েবসাইটের লগিন ইনফরমেশন খুজে বের করে আর যখন তারা সমস্ত তথ্য নিয়ে নেয় তখন সেই ওয়েবসাইটের সমস্ত নিয়ন্ত্রন হ্যাকারদের কাছে চলে যায়।
তারা চাইলে সেই ওয়েবসাইটের বিনিময়ে মালিকের কাছে থেকে ভালো অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে পারে নতুবা সেই ওয়েবসাইট অন্য কারো কাছে বিক্রি করে টাকা কামিয়ে নিতে পারে। ওয়েবসাইট বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে হ্যাক করা হয়ে থাকে।
আর দেখুন,
- যে নিয়ম জানলে জীবনে কোনোদিন স্মার্ট ফোন হ্যাং করবেনা
- যেভাবে মোবাইল চার্জ দিলে সারাদিন কোন চিন্তা করতে হবেনা
২। ই-মেইল হ্যাকিং
আমাদের মধ্যে এমন কেও নেই যে ই-মেইল ব্যবহার করেনা। আর ই-মেইল আনাকে ব্যবহার করতেই হবে কারণ ফোনে ই-মেইল লগিন করা না থাকলে সেই ফোন দিয়ে কোন প্রকার অ্যাপ ডাউলোড করা যায়না। আর এরই সুযোগ নিয়ে কিছু হ্যাকার রয়েছে ই-মেইল হ্যাক করে থাকে।
বিশেষ করে তথ্য আদান-প্রদান, ইউটিউব চ্যানেল তৈরি, গুগল থেকে মনেটাইজেশন সমস্ত কিছুই ইমেইল ব্যবহার করে করা হয়ে থাকে। আর এই ইমেইল যদি হ্যাক হয়ে যায় তাহলে সেই ই-মেইলে থাকা সমস্ত কিছুই হ্যাকারদের কাছে চলে যায়। যদি একবার আপনার ই-মেইল হ্যাক হয়ে যায় আপনি শতবার চাইলেও সেই ই-মেইল এক্সেস করতে পারবেননা।
৩। মোবাইল হ্যাকিং
বর্তমান সময়ের একটি আলোচিত বিষয় হচ্ছে মোবাইল হ্যাকিং কারণ বর্তমান সময়ের কম বেশী সবাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে। আর তার সুযোগ নিয়ে হ্যাকার মোবাইল গুলোকে হ্যাক করে সেই মোবাইলে থাকা সমস্ত তথ্য চুরি করে নেয় ও মোবাইল ব্যবহারকারীর সাথে প্রতারণা শুরু করে।
কেন এবং কিভাবে হয় ও মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় সেই পরবর্তিতে জানিয়ে দেয়া হবে।
৪। কম্পিটার হ্যাকিং
কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমকে হ্যাক করে সেই কম্পিউটারে থাকা সমস্ত ডেটা চুরি এবং কম্পিউটারের সমস্ত নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়াই হচ্ছে কম্পিউটার হ্যাকিং। এটি করার জন্য হ্যাকার যে কম্পিউটারকে হ্যাক করবে সেটির দুর্বলতা খুজে বের করে তারপর সেই কম্পিউটারে কোন এক মাধ্যমে হ্যাকিং প্রগ্রাম প্রবেশ করিয়ে দেয়।
আর যখন হ্যাকিং প্রগ্রাম কম্পিউটারে প্রবেশ করে তখন সেই কম্পিউটারে থাকা সমস্ত ডেটা হ্যাকার ব্যবহার করতে পারে।
৫। পাসওয়ার্ড হ্যাকিং
বিশেষ কিছু টুলস বা ফিশিং লিঙ্ক ব্যবহার করার মাধ্যমে কোন একটি সিস্টেম বা মাধ্যমের পাসওয়ার্ড হ্যাক করে নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেয়াই হচ্ছে পাসওয়ার্ড হ্যাকিং। এই মাধ্যমে হ্যাকার কোন একজনের ইমেইল, ফেসবুক, মোবাইল, ওয়াইফাই বা কোন এক মাধ্যমের পাসওয়ার্ড হ্যাক করে পুরটাই নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয়।
এমন যদি বলা হয় তাহলে হ্যাকিং এর এত পরিমাণ মাধ্যম রয়েছে যে বলে শেষ করা যাবেনা। শুধু মাত্র এই কয়েকটি বিষয় অবলম্বন করে বেশী হ্যাক হয়ে তাহকে তাই জানিয়ে রাখলাম।
দেখুন পৃথিবীতে তিন ধরণের হ্যাকার রয়েছে আর তাদের মধ্যে সবাই মানুষের ক্ষতি করে থাকেনা। এই তিন ধরণের হ্যাকার হচ্ছে,
- এথিক্যাল হ্যাকার
- হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার
- ব্লাক হ্যাট হ্যাকার
এই তিন ধরণের হ্যাকারের মধ্যে যারা এথিক্যাল হ্যাকার রয়েছেন তারা কোনভাবেই মানুষের ক্ষতি করেনা। তারা শুধু মানুষের উপকার করে থাকে। বিভিন্ন কিছুই সিকিউরিটি দিয়ে থাকে।
হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার হচ্ছে মাঝা মাঝি অবস্থানের হ্যাকার কারণ তারা চাইলে মানুষের ক্ষতি করতে পারে আবার উপকার করতে পারে। প্রয়োজন অনুযায়ী তারা হ্যাকিং করে থাকে।
আর যারা ব্লাক হ্যাট হ্যাকার রয়েছেন তারা শুধু মানুষের ক্ষতি করা ছাড়া কিছুই করেনা। তারা সব সময় চিন্তা করে থাকে কিভাবে মানুষের ক্ষতি করা যেতে পারে।
আর আমরা আমাদের মোবাইল ফোনকে এই ব্লাক হ্যাট হ্যাকার থেকেই রক্ষা করা শিখবো।
হ্যাকাররা মোবাইল ফোন হ্যাক করে কি করে?
- হ্যাকার মোবাইল ফোন হ্যকার করে ফোনে থাকা ছবি, ফাইল, ভিডিও, অডিও সমস্ত কিছু চুরি করে নেয় আর এই বিনিময়ে ব্লাকমেইল করে থাকে বা তথ্য বিক্রি করে দেয়।
- ফোনে থাকা সমস্ত ই-মেইল ও এসএমএস পড়তে পারে তাই সহজেই ফেসবুক বা অন্য যেকোনো একাউন্ট সহজেই হ্যাক করে ফেলতে পারে।
- ফোন থেকে সহজেই কন্টাক্টে থাকা নাম্বারে মেসেজ পাঠাতে পারে ও কাছের মানুষের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে পারে।
- ফোনের লাইভ লোকেশন ট্রাকিং করতে পারে ফলে আপনি কোথায় আছেন সেটি সহজেই জানতে পারে।
- ফোনে থাকা ক্যামেরা ব্যবহার করে অতি সহজেই সমস্ত কিছু রেকর্ডিং করে নিতে পারে।
- কন্টাক্টে থাকা সমস্ত নাম্বার কপি করে নিতে পারে এবং পরবর্তীতে আপনার নাম দিয়ে জালিয়াতি করতে পারে।
আর যখন হ্যাকারের কাজ শেষ হয়ে যায় তখন ফোনে থাকা ম্যালওয়ার ডিলিট করে দেয় এবং ফোনের মালিক কিছুই বুঝতে পারেনা।
তাই মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় গুলো আপনাকে স্টেপ বাই স্টেপ ফলো করতে হবে।
আর দেখুন,
মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়
হ্যাকিং এবং হ্যাকার সম্পর্কে আপনাকে বিস্তারিতভাবে কিছু জানিয়ে দেয়ার চেস্টা করেছি তাই এখন মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে আমাদের কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে বিস্তারিত জেনেনেই,
১। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার
আমরা ফেসবুক বলি অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়া বলি সেটি ব্যবহার করার সময় প্রতিটি আক্যাউন্টে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়। তাছাড়াও ফোন লক, কম্পিউটার লক সমস্ত কিছুতে ব্যবহার করি পাসওয়ার্ড।
আর এই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার ক্ষেত্রেই সব চেয়ে বেশী সমস্যার তৈরি হয় কারণ নিজেদের সুবিধার জন্য এমন কিছু নাম্বার বা নাম ব্যবহার করি। যেটি চাইলেই হ্যাকার খুব সহজেই ট্রাকিং করতে পারে এবং সেই লক বদলে নিজের মত করে ব্যবহার করতে পারে।
তাই আপনার সব সময় উচিৎ হবে কমন কোন পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করা। যেমন নিজের মোবাইল নাম্বার, নিজের নাম, জম্ন তারিখ বা প্রিয় কোন মানুষের নাম বা অক্ষর।
তাছাড়াও এমনও হতে পারে, 112233, 123456, AABBCCDD আর এমন হলে কিন্তু হ্যাক করতে হ্যাকার লাগবেনা আপনার কাছেই কেও আপনার ক্ষতি করে ফেলতে পারবে।
তাহলে আপনি কি করতে পারেন? আপনাকে এমন একটি পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হবে যে সেই পাসওয়ার্ড যেন হ্যাকার কোন ভাবেই ডিকোড করতে না পারে। দেখুন আমরা যে সমস্ত ভাষায় পাসওয়ার্ড দিয়ে থাকি সেই সমস্ত ভাষা কম্পিউটার বুঝতে পারেনা।
কম্পিউটার শুধু ০ এবং ১ এই দুটি নাম্বারকে চিনে থাকে। তাই কঠিন পাস কোড ব্যবহার করলে সেট ডিকোড করা অনেক কঠিন ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। যেমন হতে পারেঃ qW@5&6?%! এমন কিছু। আপনি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করতে ডেলিনা ডট কম ব্যবহার করতে পারেন।
আর হ্যা অবশ্যই এই পাসওয়ার্ড অবশ্যই কোথাও নোট করে রাখতে হবে কারণ এগুলো মখস্থ করাটা অনেক কঠিন ব্যাপার।
২। ফিশিং লিনংক থেকে দূরে থাকুন
আমাদের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে বা ব্যাক্তিগত ইনবক্সে মাঝে মধ্যেই কোন এক শুভাকাঙ্ক্ষী আপনাকে একটি অনেক ধরণের লিঙ্ক পাঠিয়ে থাকে যেমন হতে পারে দারাজে অফারের লিঙ্ক অথবা যেকোনো লোভনীয় লিঙ্ক।
তাছাড়াও অনেক সময় দেখা যায় ই-মেইলের ইনবক্সে কিছু মেইল আসে সাধারণভাবে বিভিন্ন ধনের অফার, লটারি উইন, টাকা গিফট এর টিকেট, জব অফারের নামে। ঐ সমস্ত মেইলের মধ্যে একটি ওয়েবপেজ লিঙ্ক দেয়া থাকে আর না বুঝেই আমাদের মধ্যে অনেকেই ক্লিক করে দেয়। আর এই সমস্ত লিঙ্ক গুলোই হচ্ছে ফিশিং লিঙ্ক।
কেও দেখে বুঝতে পারবেনা যে এগুলো এক দধনের হ্যাকিং লিঙ্ক কারণ এই সমস্ত লিঙ্ক অন্য সব লিংকের মতই দেখতে। তাই প্রথমেই যে কথা বলতে চাই আপনি কোনভাবেই অপরিচিত কোন প্রকার লোভনীয় লিংকে ক্লিক করবেননা।
আর যদি ক্লিক করে বসেন এবং আপনার সামনে ফেসবুক লগিন পেজ বা কোন সফটওয়্যার ডাউনলোড লিঙ্ক চলে আসে তখনই বুঝে নিতে হবে এটি ফিশিং লিঙ্ক তথ্য দিলেই বিপদ। তাই সাথে সাথে ঐ সমস্ত ওয়েবসাইট থেকে বেড় হয়ে আসতে হবে এবং কোনোভাবেই কোন প্রকার তথ্য দেয়া যাবেনা।
৩। অপরিচিত অ্যাপ ডেলিট
প্রতিটি ফোনের অপারেটিং সিস্টেমের সাথে কিছু ডিফল্ট অ্যাপ ইন্সটল করা থাকে কিন্তু তারপরেও আমাদের প্রয়োজনের জন্য অনেক ধরণের অ্যাপ ডাউনলোড করতে হয় যেমন ফেসবুক, লিঙ্কডইন, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াট অ্যাপ ইত্যাদি।
এগুলো হচ্ছে ট্রাস্টেড সব অ্যাপ কিন্তু অনেকেই রয়েছেন নিজের প্রয়োজনের বিভিন্ন ধরণের ক্যামেরা, ভিডিও এডিটিং অ্যাপ, ছবি এডিটিং অ্যাপ, বিভিন্ন ধরণের গেমস ইত্যাদি ইন্সটল করে থাকে।
এই সমস্ত অ্যাপ গুলোর মধ্যে কোনটি আপনার তথ্য চুরি করে নিচ্ছে বুঝতে পারবেননা। তাই আপনার ফোনে যদি এমন কোন অ্যাপ থেকে থাকে যেটি আপনার কাছে অপরিচিত সাথে সাথে সেটি আন ইন্সটল করেদিন।
যে সমস্ত অ্যাপ আপনার কোন প্রকার প্রয়োজনে আসেনা সে সমস্ত অ্যাপ গুলোকে ডিলিট করেদিন। শুধুমাত্র সেই সমস্ত অ্যাপ গুলো ব্যবহার করবেন যেগুলো আপনার পরিচিত এবং সাধারণভাবে প্রায় সকলেই ব্যবহার করে থাকে।
৪। অনলাইন কেনা কাটায়
আধুনিক বিশ্বের তথ্য প্রযুক্তির এত বেশী উন্নতি হয়েছে যে এখন চাইলেই ঘরে বসেই যেকোনো পন্য কেনা যায়। কিন্তু এই সুবিধাকে পুজি অনেক হ্যাকার মানুষের ফোন গুলোকে হ্যাক করে নিজেদের নিয়ন্ত্রে নিয়ে নিচ্ছে।
এমন আপনার সাথেও ঘটে যেতে পারে যদি আগে থেকেই নিজেকে সাবধান করে না করেন। অনলাইন কেনা কাটা করার সময় কোনভাবেই তরিঘরি করা যাবেনা। ভেবে চিন্তে পরিচিত ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে পন্য অর্ডার করতে হবে। কোনভাবেই অপরিচিত কোন ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকে পন্য অর্ডার করাযাবেনা।
এই জায়গাতে হ্যাকার যে কাজটি করে, যেহেতু অনালিনে পন্য অর্ডার করতে প্রথমেই আমাদের একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হয় তাপর নিজের সমস্ত তথ্য দিয়ে সাবমিট করলেই অর্ডার কনফ্রাম হয় নতুবা অর্ডার করা সম্ভব নয়।
আর এই সমস্ত তথ্য গুলোকে কাজে লাগিয়ে অতি সহজেই একটি ফোন হ্যাক করে নেয়া অনেক সহজ। তাই কোন সময় অপরিচিত ওয়েবসাইট থেকে পন্য কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেমন হতে পারে আপনার ইনবক্সে এমন একটি লিংক আসলো মাত্র ২০ হাজার টাকায় আইফন ১৩ তখন আপনি কি করবেন?
হয়ত লোভে পরে পণ্যটি অর্ডার করে দিবেন। মনে রাখবেন ইনবক্স হোক বা ইমেইল অথবা কোন ওয়েবসাইটের অ্যাড কোনভাবেই ঐ সমস্ত লিংক বা ওয়েবসাইট থেকে পন্য অর্ডার করা যাবেনা।
৫। পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার
দোকান হোক বা রেস্টরন অথবা কোন বন্ধুর বা আত্মীয় বাড়িতে গেলে যদি সেখানে ওয়াইফাই থাকে আমাদের মধ্যে প্রায় সকলেই সেই ওয়াইফাই কানেক্ট করে থাকি। কিন্তু এমন হতে পারে সেই ওয়াইফাই ব্যবহার করার কারনেই আপনার ফোন হ্যাক হয়ে যাবে।
পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারের ফলে হ্যাক হওয়ার অনেক গুলো কারণ কারণ রয়েছে যেমন,
- একটি আইপি সবাই ব্যবহার করে তাই সেই আইপি হ্যাক করে যত গুলো ফোন রয়েছে সব গুলোই হ্যাক করা যায়।
- ব্যবহারকারীদের মধ্যে কেও যদি হ্যাকার হয় তাহলে অতি সহজেই আপনার পাশে বসেই আপনার সবকিছু হ্যাক করে ফেলতে পারবে।
- কোন ফোন যদি হ্যাকের শিকার হয়ে থাকে এবং সেই ফোন যদি কোন পাবলিক ইন্টারনেটে কানেক্ট করে তাহলে সেই হ্যাক হওয়া ফোনের সাহায্যে অন্য ফোন গুলো হ্যাক করা যায়।
তাই পাবলিক ওয়াইফাই ফাই থেকে বিরত থাকুন।
৬। ফোনের অ্যাপ লক
আপনার ফোনে থাকা প্রয়োজনীয় অ্যাপ গুলোকে লক করে রাখুন। কারণ অ্যাপ লক করে রাখলে হ্যাক করার পরেও সেই সমস্ত অ্যাপ গুলো আনলক করা যায়না যদি করে তাহলে সেটি হবে অনেক কষ্টকর ব্যাপার।
বর্তমানে অনেক ফোন রয়েছে জেগ্লতে অ্যাপ লক করার জন্য ফোনেই ফিচার দেয়া থাকে তাছাড়াও গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করেও আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনি খুব সহজেই এটি করে নিতে পারবেন যদি না পারেন তাহলে ইউটিউব থেকে সার্চ করে ভিডিও দেখে নিতে পারেন।
৭। বিশ্বাসযোগ্য সোর্স থেকে অ্যাপ ডাউনলোড
অ্যাপ ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে আপনাকে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কোন প্রকার অপরিচিত ওয়েবসাইট বা সোর্স থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ অনেকেই অ্যাপ গুলোকে মডিফাই করে হ্যাকিং কোড ইন্সার্ট করে রাখে।
আপনি সব সময় চেষ্টা করবেন গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করার। যদি এমন প্লে স্টোর থেকে এমন অ্যাপ ডাউনলোড করছেন যেটি আপনার কাছে একদম নতুন তাহলে সেই অ্যাপটির রেটিংস এবং রিভিউ দেখে তারপর ইন্সটল করুন।
যারা আইফন ব্যবহার করেন তারা অ্যাপল-স্টোর ব্যবহার করুন। তাছাড়া যদি এমন হয় যে, অ্যাপ আপনাকে ডাউনলোড করতেই হবে তাহলে আপাদত ফোনের প্রাইভেসি পলিসি দেখে তারপর ইন্সটল করুন।
৮। অ্যাপ পারমিশন সম্পর্কে জানুন
আমাদের মধ্যে প্রায় সকলেই ফোনের অ্যাপ গুলোর পারমিশন এক্সেস দেয়ার জন্য কোন প্রকার খেয়াল না করেই এলো দিয়ে দেই। এই বিষয়টি অনেক মারাত্মন একটি বিষয় কারণ অ্যাপ গুলোকে পারমিশন দিয়ে দিলে কিছু গুরুত্বপূর্ন সেটিংস ও অ্যাপ এক্সেস করতে পারে সহজেই।
আর যদি কোন প্রকার ক্ষতিকর অ্যাপ হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি অন্য রকম হয়ে যাবে কারণ নিজেরাই না বুঝে হ্যাকারকে সমস্ত পারমিশন দিয়ে দিবো নিজেরাই। তাই অ্যাপ ইন্সটল করার আগে সেই অ্যাপ কি কি পারমিশন নিবে সেটি জেনে নিতে হবে।
বিশেষ করে প্লে স্টোরে অ্যাপ সম্পর্কে সমস্ত কিছুই দেয়া থাকে আপনি চাইলে দেখে নিতে পারেন। তাছাড়াও আপনি গুগলে অ্যাপ সম্পর্কে সার্চ করে জেনে নিতে পারবেন।
প্রশন আস্তে পারে এক্সেক্স অ্যাপ নিতেই পারে এতে দোষের কি আছে? অবশ্যই আছে কারন অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলো অকারনে কিছু মাধ্যমের এক্সেক্স নিয়ে নেয়।
যেমন হতে পারে আপনি একটি ওয়ার্ডশিট ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন এবং সেই অ্যাপ ওপেন করার সময় কন্টাক্ট, মেসেজ, ক্যামেরার পারমিশন চাচ্ছে।
এখন আপনি একটু ভেবে দেখুন লেখা লেখি করার অ্যাপ কন্টাক্ট বা ক্যামেরার এক্সেক্স দিয়ে কি কাজ করবে? এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে বিনা কারণে আমাদের সব কিছুই এক্সেক্স নিয়ে নেয়।
তাই এমন অকারনে এক্সেক্স নেয়া অ্যাপ গুলো ফোনে রাখা যাবেনা।
৯। অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুণ
হ্যাকারদের কাছে থেকে নিজে বাঁচিয়ে রাখার বড় মাধ্যম হচ্ছে অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা। কারণ যে সমস্ত মাধ্যম হোক সেটি কোন ফিশিং লিংক অথবা মোবাইল অ্যাপ সব গুলোতে এক ধরণের কোড ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আর সেই সমস্ত অ্যাপ গুলোর মধ্যে হ্যাকার যে কোড ব্যবহার সেগুলোকে এন্ট্রিভাইরাস খুব সহজেই শনাক্ত করে নেয় এবং ডিলিট করে দেয় অথবা নোটিফিকেশন দিয়ে দেয়।
হ্যাকাররা এক ধরণের ম্যালওয়ার অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটের মধ্যে লুকিয়ে রেখে দেয় আর যদি এগুলো প্রবেশ করার চেষ্টা করা অ্যান্টিভাইরাস প্রবেশ করতে দেয়না। বিশেষ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট সিকিউরিটি ফিশিং লিংক বা ক্ষতিকর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে দেয়না।
তাই আপনি অ্যাভাস্ট, ক্যাস্পার স্কাই যেকোনো একটি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়াও আপনি জেনেনিতে পারেন কিভাবে মোবাইলকে ভাইরাস থেকে দূরে রাখা যায়।
১০। ব্লুটুথ বন্ধ রাখুন
ফোনের চালু থাকা ব্লুটুথ হ্যাকারদের জন্য একটি জায়গা তৈরি করে দেয় এবং অতি সহজেই ফোনের সিস্টেমে মালওয়্যার প্রবেশ করাতে পারে তাই বিনা প্রয়োজনে কোনভাবেই ব্লুটুথ অন করে রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বিশেষ করে ফাইল ট্র্যান্সফার অ্যাপ শেয়ারইট প্রথমে ফাইল এক ফোন থেকে অন্য ফোনে ট্র্যান্সফার করার জন্য কোন প্রকার পারমিশন চাইতোনা। কিন্তু এখন ওয়াইফাই থেকে শুরু করে ব্লুটুথ সব কিছুই চালু করে রাখতে হয় নতুবা ফাইল ট্রান্সফার হয়না।
এই অ্যাপ অতি সহজেই ব্লুটুথ অন করতে পারে তাই এই ধরণের অ্যাপ গুলো থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুণ। তারা আমাদের এত তথ্য দিয়ে কি করে এটি নিয়ে আমাদের কোন প্রকার মাথা ব্যথা নেই তাই আমাদের কাছে অবাঞ্চিত সব অ্যাড দেখায়।
১১। ফোন রুট করা থেকে বিরত থাকুন
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন এন্ড্রয়েড ফোনটিকে নিজের ইচ্ছে মত ব্যবহার করার জন্য রুট করে থাকে। দেখুন একটি ফোন যখন রুট করা হয় তখন সেই ফোনের অপারেটিং সিস্টেম এবং সিকিউরিটি সিস্টেম ভেঙ্গে যায়।
আর যখন একটি ফোন আনলক হয়ে যায় তখন যে সমস্ত অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য ফোন পারমিশন দিতনা সেই সমস্ত অ্যাপ গুলো ব্যবহার করা যায়। আর এই সুযোগ নিয়ে হ্যাকার অতি সহজেই ফোনের অপারেটিং সিস্টেমকে হ্যাক করে ফেলতে পারে।
তাই আপনার উচিৎ হবে ফোনটিকে রুট না করা। যদি করে থাকেন তাহলে ফোন রিসেট করেনিন এবং নিজের তথ্য গুলোকে সুরক্ষিত করে রাখুন। আপনার ছোট একটি ভুল যেন বড় কোন কিছুর কারণ না হয়ে যায় বিষয়টি খেয়েল রাখবেন।
তাছাড়াও ফোন রুট করে যে সমস্ত অ্যাপ গুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলোতে মালওয়্যার থাকে এমনকি যে অ্যাপ ব্যবহার করে রুট করা হয়ে থাকে সেগুলোতে গোপনে ভাইরাসের উপস্থিতি থাকে।
আর নিজেই সেটি ফোনের সিস্টেমে প্রবেশ যদি করার তার জন্য নিজেকেই পস্তাতে হবে। তাই ফোন রুটিং করা থেকে বিরত থাকুন।
১২। ট্রোজান হর্স
বর্তমান সময়ে হ্যাকারদের কাছে হ্যাকিং করার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে র্যাট ( RAT ) যেটি কোন ইদুর নয় এর ফুল মিনিং হচ্ছে Remote Administration Tool ।
আর এই যদি হ্যাকার কোনোভাবে আপনার ফোনে প্রবেশ করিয়ে দিতে পারে বা আপনাকে দিয়ে ইন্সটল করিয়ে নিতে পারে তাহলে নিজেই বুঝতে পারবেননা কোন সময় আপনার ফোন অন্য কারো নিয়ন্ত্রে চলে গিয়েছে।
এখন প্রশ্ন আসতেই পারে আমি নিজে যদি ইন্সটল না করি তাহলে এটি কিভাবে ইন্সটল হবে? দেখুন আমরা যখন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করি এবং প্রয়োজনীয় কিছু অথ্য খুতে থাকি তখন নিজে নিজে নতুন পেজ ওপেন হয় এবং নানা প্রকার অ্যাপ ডাউনলোড হওয়া শুরু হয়।
হতে পারে সেটি আপনার পরিচিত ইউসি ব্রাউজার বা অন্য কোন অ্যাপ। মূলত এই সমস্ত অটো ডাউনলোড অ্যাপ গুলোর মধ্যেই মূলত র্যাট ম্যালওয়ার সেটাপ করা থাকে আর যখনই অ্যাপ ইন্সটল করা হয় তখন সমস্ত তথ্য চলে যায় হ্যাকারের কাছে।
আরি এই র্যাট ( RAT ) কে মূলত ট্রোজান হর্স বলা হয়ে থাকে। তাই নিজে নিজে ডাউনলোড হয় এমন অ্যাপ ইন্সটল না করে ডিলিট করে দিতে হবে।
মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে হ্যাকারের পরামর্শ
নিজেকে হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষা করে রাখতে হলে কি কি করতে হবে সেটি হয়ত হ্যাকারদের চেয়ে অন্য কেও বেশী জানেনা।
হ্যাকিং থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ৭ টি পদক্ষেপের বিষয় বলে দিয়েছে এক নাম না জানা হ্যকার সংগঠন আর প্রকাশ করেছে সিএনএন নিজেই। তাহলে চলুন কি এমন পরামর্শ রয়েছে যে নিজেকে হ্যাকিং থেকে রক্ষা করা যাবে?
ওয়াইফাই বন্ধ রাখতে হবে
প্রয়োজন ব্যাতিত ফোনের ব্লুটুথ বা ওয়াইফাই চালু করে রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর হ্যাকাররা সব সময় ছোট বড় কারণ খুজেতে থাকে ফোন হ্যাক কয়ার জন্য।
সব সময় নিজের ফোনের ভ্লুটুথ এবং ওয়াইফাই চালু করে রাখলে অপরিচিতরা সব সময় সুযোগ নেয় ফোন হ্যাক করার জন্য। এখন একটি প্রশ্ন থাকে সব সময় ওয়াইফাই চালু রাখলে কি সমস্যা কানেক্টতো আর নেই?
বন্ধ এই কারণে রাখতে হবে, ফোনের ওয়াইফাই কানেক্ট থাকার পর যদি চালু করে রাখা হয় তাহলে সেই নেটওয়ার্ক সিস্টেম সক্রিয় থাকে। তাই আপনি যদি ডাটা কানেকশন দিয়েও ফোন ব্যবহার করেই তাতেও চলু থাকা ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ফোন হ্যাক করা সম্ভব।
হ্যাকাররা মূলত ফোনে কানেক্ট থাকা ওয়াইফাই এর ছদ্মবেশে নতুন নেটওয়ার্ক তৈরি করে এবং কানেক্ট করার জন্য প্রলোভন দেখায়। আর যদি কেও কানেক্ট করে তাহলে গোপনে হ্যাকার প্রচুর পরিমাণে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে দেয়।
আর আপনি বঝার আগেই সমস্ত তথ্য চুরি করে নেয়। তাই আপনার উচিৎ হবে বিনা কারণে ওয়াইফাই ও ব্লুটুথ চালু করে না রাখা।
দুই স্তরের ভেরিফিকেশন মুড
এখন একটি বিষয় সব সময় খেয়াল করা যায় পাসওয়ার্ড হ্যাকিং বা পাসওয়ার্ড পরিবর্তন। আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছেন ফেসবুক হোক গুগল আক্যাউন্ট তৈরি করার সময় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই ভেবে থাকি এখন নিজে অনেক নিরাপদ।
বিষয়টি কিন্তু মোটেও তেমন নয় কারণ হ্যাকার চাইলে ঐ পাসওয়ার্ড হ্যাক করে নতুন পাসওয়ার্ড বসিয়ে দিতে পারে। তাই আপনার উচিৎ হবে প্রতিটি অ্যাকাউন্টনের জন্য দুই স্তরের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা যাকে ইংরেজিতে Two Step Authentication বলা হয়ে থাকে।
যদি এটি চালু করা থাকে হ্যাক করে নিলেও মোবাইল ফোন ছাড়া কোনোভাবেই অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেনা। বিশেষ করে ফেসবুক, গুগল, অ্যাপল, লিঙ্কডিন, টুইটার ও ড্রপবক্সের মতো সার্ভিস গুলোতে দুই স্তরের ভেরিফিকেশন ব্যবহার করা যায়।
এটি যদি অন করা হয় তাহলে আপনি যখন নতুন কোন ফোনে নিজের অ্যাকাউন্ট লগিন করতে যাবেন তখন আপনার ফোনে ৪ হোক বা ৬ ডিজিটের কোড আসবে। আপনি যদি সেই কোড ব্যবহার করেন তখন লগিন করতে পারবেন আর যদি সেই কোড না ব্যবহার করেন কোনভাবেই নতুন ফোনে আপনার অ্যাকাউন্ট লগিন হবেনা।
তাই হ্যাকার যদি আপনার কোন একটি অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনে যায় তাতেও কোন সমস্যা হবেনা কারণ আপনার ফোনে আসা কোড ব্যাতিত লগিন করা অসম্ভব।
স্মার্ট পাসওয়ার্ড ব্যবহার
এটি সম্পর্কে পূর্বেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে তারপরেও একটু ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছি। স্মার্ট পাসওয়ার্ড বলতে সাধারণ পাসওয়ার্ডকে বোঝায়না। বিশেষ করে আমরা কিছু নাম্বার, জন্ম তারিখ বা নিজের নাম দিয়ে পাসওয়ার্ড দিয়ে থাকি।
এতে হ্যাকার অতি সহজেই হ্যাক করে ফেলতে পারে। তাই পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় নাম্বার, অক্ষর ও কিছু চিনহু ব্যবহার করতে হবে। যেমন a45$>L@&5~>U^ এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে।
আর এটিকেই বলা হয় স্মার্ট পাসওয়ার্ড। এমন পাসওয়ার্ড ডিকোড করা অনেক কথিন ব্যাপার। আর প্রতি বছরে একবার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার চেষ্টা করুণ।
এইচটিটিপিএস ব্যবহার
আমরা কমবেশি সবাই ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে থাকি কিন্তু কোনটি নিরাপদ ও কোনটি অনিরাপদ সেটি অনেকেরই জানা নেয়। খেয়াল করুণ, যখন আপনি ওয়েবসাইট ব্রাউজ করেন তখন এড্রেসবারে www এর পূর্বে https:// এর লেখা থাকে।
যদি এমন দেখতে পান তাহলে বুঝে নিবেন সাইট একদম নিরাপদ আর যদি https:// না থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে সাইটটি অনিরাপদ। তাই সব সময় এইচটিটিপিএস যে সমস্ত ওয়েবসাইটে রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করুণ নতুবা দূরে থাকুন।
আর যদি আপনার কোন ওয়েবসাইট থাকে তাহলে অবশ্যই এইচটিটিপিএস ব্যবহার করতে হবে নতুবা হ্যাকার অতি সহজেই আপনার ওয়েবসাইট হ্যাক করে নিতে পারবে।
ওয়াই-ফাই রাউটার সেটআপ
যখন আপনি আপনার রাউটার সেটাপ করবেন তখন অবশ্যই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন ডিফল্ট থাকতে দেয়া যাবেনা। আর যখন সিকিউরিটি এনক্রিপশন করবেন তখন WPA2 নির্বাচন করুণ তাহলে আপনার সিকিউরিটির দিকে অনেক শক্তিশালী হবে।
কোনভাবেই সিকিউরিটি সিস্টেম ডিফল্ট রাখা যাবেনা। কম বেশী সব রাউটারে সেটিং ডিফল্ট থাকে কিন্তু সেটি আপনাকে কনফিগার করে নিতে হবে।
ওয়াইফাই লুকিয়ে রাখা
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছন নিজের রাউটারের নেটওয়ার্ক লুকিয়ে রাখতে অনেক বেশী পছন্দ করে থাকেন। এতে কি হয় যদিও ফোন কম্পিউটারে ম্যানুয়ালভাবে এটি সেটাপ করা যায় কিন্তু বাই ডিফল্ট ফোনের তার নিজস্ব সিস্টেমের মধ্যে সব সময় স্ক্যান করতে থাকে।
যদিয় নেটওয়ার্ক কানেক্ট রয়েছে। এক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক দুর্বলতার তৈরি হয় এবং হ্যাকার খুব সহজেই হ্যাক করে ফেলতে পারে। ওয়াই-ফাই হ্যাকার বেন স্মিথ বলেন এমনআবে ওয়াইফাই ব্যবহার কর হচ্ছে নিজের অজান্তেই ৫ বছর আগের প্রযুক্তির কাছে নিজেকে সপে দেয়া।
তাই এটি করা থেকে বিরত তাকুন। ম্যাক এড্রেস ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক লুকিয়ে রাখার কোন দরকার নেই।
মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় অনলাইনে পন্য কিনতে তাড়াহুড়া
যেহেতু প্রযুক্তির উন্নতি হয়েছে সাথে মানুষের আচরণ ও রুচি বোধেরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তাইতো মানুষ এখন ঘরে বসেই নিজের পছন্দের বস্তু কিনতে পারছে।
তাই যখন নতুন কোন পণ্য বাজারে আসে তখন মানুষ হুমড়ি খেয়ে পরে। আর এই সুযোগ নিয়ে কিছু অসৎ মানুষ ফিশিং লিংক তৈরি করে মানুষের তথ্য গুলো হাতিয়ে নেয়।
তাই আপনি পন্য কিনতে তরিঘরি না করে নিজের পরিচিত অ্যাপ বা ওয়েবসাইট থেকেই পন্য কিনুন।
শেষ কথা
মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি এখানেই শেষ। আশা করছি আপনি মোবাইল হ্যাকিং সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জেনে গিয়েছেন এবং সেই সাথে কিভাবে নিজেকে হ্যাকিং থেকে রক্ষা করবেন শিখে নিয়েছেন।
আর্টিকেলটি কেমন লাগলো সেটি অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আপনার একটি কমেন্ট আমাকে আর কিছু লেখার জন্য উৎসাহ দিয়ে থাকে। মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়