৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম ও তার ব্যবহার
প্রযুক্তির বিকাশ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে যার ফলে মানুষের জীবন যাত্রা অনেক বেশী সহজ থেকে সহজতোর হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাই আজকের এই আর্টিকেলে ৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম ও তার ব্যবহার ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হবে।
মানুষের জীবন যাত্রা অনেক বেশী সহজ করে তোলার জন্য প্রতিনিয়ত চলছে গবেষণা এবং সেই গবেষণা থেকে নতুন নতুন বিষয়বস্তুর আবির্ভাব ঘটছে এবং এর প্রতিফলনে নতুন নতুন সুবিধার তৈরি হচ্ছে।
প্রযুক্তির উদ্ভাবনের পূর্বে শিক্ষার মান এবং বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির উদ্ভাবনের পর শিক্ষার মান একদম আলাদা। এর পূর্বে শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ১০টি ব্যবহার নিয়ে আর্টিকেল লেখা হয়েছে চাইলে সেটি দেখতে পারেন এবং আশা করছি আর্টিকেলটি থেকে অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহন করা যাবে।
যেহেতু এটি একটি শিক্ষামূল্যক ব্লগ এবং জেএসসি থেকে শুরু করে এসএসসি শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বেশী উপকার করবে। তাহলে মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ে বেশ কিছু তথ্য জেনে নিয়ে পরিক্ষায় ভালো রিজাল্ট অর্জন করে নাও।
৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম
উন্নত বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে খেয়াল করলে দেখা যায় জে, প্রতিটি দেশেই ইন্টানেট, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস ব্যবহার হচ্ছে। ঠিক সেই সমস্ত দেশের মত বর্তমান সময়ে বাংলাদেশেও ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল প্রযুক্তির।
এক সময় পরিক্ষার ফলাফল জানার জন্য সরাসরি স্কুলে যেতে হত কিন্তু বর্তমান সময়ে ঘরে বসে মোবাইল ফোন থেকেই অতি সহজেই পরিক্ষার ফলাফল দেখা যায় মূহুর্তের মধ্যেই।
এছাড়াও মেডিকেল শিক্ষায় এসেছে আমূল পরিবর্তন কেননা শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ডিভাইস ব্যবহার করে অতি সহজেই শিক্ষা গ্রহন করতে পারছে। এমন অনেক ব্যবহার শিক্ষাখাতকে অনেক বেশী অগ্রসর করতে তুলেছে।
আরও দেখুনঃ মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার উপায়
তাই আজ এই আর্টিকেলে এমন ৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম ও তার ব্যবহার উল্লেখ করা হবে যেগুলো অনেক বেশী জনপ্রিয়তা পেয়ছে এবং অধিক ব্যবহার হচ্ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার অধিক থেকে অধিকতর।
যেহেতু শুধুমাত্র ৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম তাই আর্টিকেলটিতে শুধুমাত্র ৫টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে তাই শিক্ষার্থী ভালোভাবে পড়ার মাধ্যমে বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে।
- ভার্চুয়াল ক্লাসরুম
- বায়োমেডিকাল প্রযুক্তি
- বায়োইনফরমেটিক্স
- অনলাইন শিক্ষা মাধ্যম
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
আরও দেখুনঃ কম্পিউটারের আবিস্কারক কে এবং কত সালে আবিস্কার হয়
ভার্চুয়াল ক্লাসরুম
ভার্চুয়াল শব্দের অর্থ হচ্ছে অস্তিত্বহীন। ভার্চুয়াল হচ্ছে এমন এক মাধ্যমে যেখানে কোন কিছু বাস্তবিক রূপ নেই শুধুমতার তার অস্তিত্বকে কল্পনা করা সম্ভব। এই বর্তমান সময়ে ভার্চুয়াল মাধ্যম শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক বেশী অবদান রাখছে।
ভার্চুয়াল ক্লাসরুম বলতে অস্তিত্বহীন শ্রেনীকক্ষকে বোঝানো হয়ে থাকে। যে শ্রেনীকক্ষে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উভয় উপস্থিত থাকবে কিন্তু সরাসরি ক্লাস রুম থাকবেনা বরং মোবাইল অথবা কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে একটি অ্যাপ বা সফটওয়্যার ব্যবহার করে ক্লাস নেয়া হয়।
এটি এমন এক মাধ্যম যেখানে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক একে অপরের সাথে কথা বলতে পারে এবং একে অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করতে পারে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুম গুলো মূলত ক্লাউড ভিত্তিক শিক্ষা গ্রহন করার মাধ্যম যেখানে বিহত্তর একটি ক্লাসরুম তৈরি হয়ে থাকে এবং এই ক্লাসরুমে উপস্থিত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীগন নির্ধারিত কিছু ডিভাইস যেমন, মোবাইল, কম্পিউটার, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, ম্যাকবুকের মত ডিভাইস গুলো ব্যবহার করতে পারে।
বায়োমেডিকাল প্রযুক্তি
বায়োমেডিকাল প্রযুক্তি বা জৈবচিকিৎসা প্রযুক্তি হচ্ছে এমন এক মাধ্যম যেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তি নীতির প্রয়োগ করা হয় এবং প্রয়োগের মাধ্যমে জীবন্ত বা জৈবিক মাধ্যমকে উন্নতি করন করা হয়ে থাকে। এই মাধ্যমে মানুষের রোগ নিরাময় এবং স্বাস্থ্যকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে।
এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে মেডিকেল শিক্ষার্থীগন তার শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য বিষয় গুলো অনেক সহজেই বুঝতে পারে এবং বাস্তবিক ধারণা পেয়া থাকে যার ফলে রোগ নিরাময় এবং গবেষণা অতি সহজেই রপ্ত করে নিতে পারে।
বর্তমান সময়ে বায়োমেডিকাল প্রযুক্তি মেডিকেল চিকিৎসা এবং শিক্ষায় নিয়ে এসেছে অধিক পরিবর্তন।
বায়োমেডিকেল প্রযুক্তির সাথে বেশ কিছু প্রযুক্তি অতপ্রতভাবে জড়িত রয়েছে যেমন, :জৈবচিকিৎসা বিজ্ঞান, বায়োমেডিকাল ইনফরমেটিক্স, বায়োমেডিকাল গবেষণা, জৈবচিকিৎসা প্রকৌশল, জৈব প্রকৌশল ,বায়োটেকনোলজি প্রভৃতি।
বায়োইনফরমেটিক্স
বায়োইনফরমেটিক্স বা জৈব তথ্য বিজ্ঞান হচ্ছে এমন এক কৌশল জীব বিজ্ঞানের সব ধরণের সমস্যার সমাধান করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে জীব বিজ্ঞানের সমস্যা গুলো সমাধান করার জন্য ফলিত গণিত, তথ্যবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, কম্পিউটার বিজ্ঞান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রসায়ন এবং জৈব রসায়ন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি এমন এক মাধ্যম যেখানে জীব বিজ্ঞানের বিষয় বস্তু গুলোকে আনবিক পর্যায়ে গবেষণা করা হয়ে থাকে।
অনলাইন শিক্ষা মাধ্যম
বিশেষ করে করোনা মহামারির সময় অনালাইন শিক্ষা মাধ্যম অনেক বেশী জনপ্রিয়তা পেছিল কারণ তখন কোন শিক্ষার্থী ঘর থেকে বের হতে পারতো না তাই শিক্ষাক্রম গুলো অনলাইনে সম্পাদন করা হয়ে থাকে।
সেই মাধ্যম এখনো অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে আসছে যেমন এখন ঘরে বসেই টিউশন নেয়া যায় যার ফলে আলাদাভাবে টিউশনে যেতে হয়না। বাংলাদেশে অনেক গুলো প্রতিষ্ঠান গরে উঠেছে যারা অনলাইনে পাঠদানের জন্য বিভিন্ন ধরণের কোর্স বিক্রি করে থাকে।
এছাড়াও স্কুল কলেজের টিউশন ফি থেকে শুরু করে রেজাল্ট দেখা, ভর্তির জন্য আবেদন সমস্ত কিছুই করা যাচ্ছে মোবাইল এবং কম্পিউটার ব্যবহার করার মাধ্যমে। কোন একটি বিষয় না বুঝলে ইউটিউব থেকে অতি সহজেই সেই বিষয়ের লেসন বের করে নিজে নিজে সমস্যার সমাধান করা যায়।
সব মিলিয়ে বললে আধুনিন প্রযুক্তি শিক্ষাকে করেছে অনেক বেশী সহজ থেকে সহজতর। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলাদা আর্টিকেল লেখা রয়েছে আপনি চাইলে সেটি দেখে নিতে পারেন এবং অনেক ধরণের তথ্য জেনে নিতে পারেন।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ভার্চুয়াল শব্দের অর্থ কাল্পনিক এবং রিয়েলিটি শব্দের অর্থ হচ্ছে বাস্তবিক। কম্পিউটারকে ব্যবহার করে কাল্পনিক বিষয় গুলোকে বাস্তবে রূপ দেয়ার নাম হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। বর্তমান সময়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক বেশী অবদান রাখছে কেননা ভার্চুয়াল মেশিনকে ব্যবহার করার মাধ্যমে যে বিষয় গুলো কল্পনা করা হয় সেগুলো দেখা যায়।
বিশেষ করে সেনা সদস্যদের অস্ত্র চালানোর ট্রেনিং এর ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অনেক বেশী কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশী উপকারে আসে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে শিখার্থীরা এমন এক জায়গায় চলে যেতে পারে যেখানে বাস্তবে যাওয়া সম্ভব নয় যেমন চাঁদ, মঙ্গল গ্রহের মত জায়গায় গিয়ে ঘুরে আসতে পারে।
শেষ কথাঃ এটি ছিল ৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম এবং ব্যবহার। আশা করছি শিক্ষার্থী অনেক কিছু শিখে গিয়েছে। এর পরেও যদি আরও কিছু জানার থাকে অবশ্যই কমেন্ট করতে হবে এবং সেই সাথে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন যেন তারাও বিষয় গুলো জানতে পারে।